পশুর হাটে জ্বর-সর্দির প্রকোপ

কোরবানির পশুতে ভরে গেছে রাজধানীর হাটগুলো। তবে ক্রেতার অনুপস্থিতিতে এখনো গরু বেচাকেনা নেই বললেই চলে। তার ওপর বৃষ্টির বাগড়া। আবহাওয়ার হঠাৎ পরিবর্তনের ফলে পশুগুলো জ্বর-সর্দিসহ নানা অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে। পানিতে গোবর কাদায় মাখামাখির ফলে হাটে ঢোকা দায় হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় গরু ব্যবসায়ী ও বিক্রেতারা যেমন অসুবিধায় পড়েছেন তেমনি হাটের আশপাশে বসবাসরতরাও পড়েছেন তীব্র বেকায়দায়।

রাজধানীর কমলাপুর, গাবতলী, জিগাতলা হাজারীবাগ মাঠ, লালবাগ মরহুম হাজী দেলোয়ার হোসেন খেলার মাঠ, বাবুবাজার বেড়িবাঁধ সংলগ্ন খালি জায়গা, রহমতগঞ্জ খেলার মাঠ, মেরাদিয়া বাজার, নারিন্দা সাদেক হোসেন খোকা মাঠ, গোলাপবাগ মাঠের পাশে সিটি করপোরেশনের আদর্শ স্কুল মাঠ, ধোপখোলা ইস্ট অ্যান্ড ক্লাব মাঠ, গোপীবাগে ব্রাদার্স ইউনিয়ন সংলগ্ন বালুর মাঠে স্থাপিত হাট ঘুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, ইতোমধ্যেই এসব হাট পশুতে ভরে গেছে। এসব পশুর বেশিরভাগই গরু।

হাটের ব্যবসায়ী ও বিক্রেতারা জানিয়েছেন, উত্তরবঙ্গ ও ঢাকার আশপাশের জেলা থেকে এ হাটে পশু বিক্রির জন্য আনা হয়েছে। এসব পশুর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভারতীয় গরুও রয়েছে।

তবে হাট পশুতে টইটম্বুর হলেও দেখা মেলেনি ক্রেতার। এজন্য টানা বৃষ্টিই সবচেয়ে বড় কারণ বলে জানিয়েছেন বিক্রেতা ও হাটের তদারকরা। তারা জানান, রীতি অনুযায়ী এখন টুকটাক বেচাকেনার কথা থাকলেও তা পুরোদস্তুর শুরু হবে আরও কয়েকদিন পরে।

মতিঝিলের কমলাপুর হাটে প্রতিবছর লাখখানেক পশু বিক্রির জন্য আনা হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে শনিবারের আগে কোরবানির পশু ঢুকতে না দেয়ার কথা বলা হলেও হাটের ইজারাদার সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার থেকে এই হাটে পশু আসা শুরু হয়েছে এবং এখনও আসছে।

এ হাটে চারটি গরু নিয়ে ফরিদপুর থেকে এসেছেন বিক্রেতা কবির। তিনি জানান, বৃষ্টিতে কারণে তার দুটি গরু জ্বর-সর্দি আক্রান্ত হয়েছে। বৃষ্টি বন্ধ না হওয়া ও হাটে চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় তিনি অসুস্থ পশু নিয়ে সমস্যার মধ্যে পড়েছেন।

বৃষ্টিতে গরু বিক্রেতাদের অসুবিধার কথা জানালে ইজারাদার প্রতিনিধি মেহেদী বলেন, বৃষ্টির কথা চিন্তা করে আমরা ওপরে তেরপালের ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু টানা বৃষ্টিই বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে। হাটে মেডিকেল বুথ না থাকলেও পশু চিকিৎসক রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।

গাবতলী হাটে পাবনা থেকে আসা বিক্রেতা ইমতিয়াজ জানান, বৃষ্টিতে ভিজে তিনি নিজে সর্দিতে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি গরু এনছেন ৬টি। এর মধ্যে কমপক্ষে দুটি লাখ টাকা বিক্রি হবে বলে দাবি করেন তিনি।

এসব হাট ঘুরে আরও দেখা গেছে, বৃষ্টির কারণে কাদা ও পশুর মলমূত্র মাখামাখির কারণে হাটের ভেতরের রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন হাটের আশপাশে বসবাসকারীরাও।

কমলাপুরের বাসিন্দা শওকত আলী বলেন, চারিদিকে গোবর ছিটিয়ে পড়েছে। এর ভেতর দিয়ে কি চলাচল করা যায়?

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সমুদ্রে লঘুচাপের কারণে বৃষ্টি সোমবার পর্যন্ত বৃষ্টি স্থায়ী হতে পারে। এমনটি হলে ক্রেতার অভাবে ও পশুর সর্দিকাশির কারণে অসুবিধায় পড়তে হবে বলে আশঙ্কা বিক্রেতাদের। তবে এতে যে অন্যদেরও দুর্ভোগ বাড়বে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।



মন্তব্য চালু নেই