পর্যটক বরণে প্রস্তুত মৌলভীবাজার

ঈদ উপলক্ষে দেশের একমাত্র পর্যটন জেলা মৌলভীবাজারের পর্যটনীয় এলাকা ও দশর্নীয় স্থানে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের বরণে চলছে নানা প্রস্তুতি। এবার ঈদ পরবর্তী মৌলভীবাজারে প্রায় লক্ষাধিক পর্যটকের আগমন আশা করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। আর এরই লক্ষে ইতোমধ্যে হোটেল-রেষ্টুরেন্ট ও গেষ্ট হাউসের ৪৫ শতাংশ রুম বুকিং হয়ে গেছে। যদি রাজনীতিক পরিস্থিতি ও আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকে তা হলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পর্যটকের আগমন ঘটবে বলেও আশা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।

আর এতে করে অতীতের সকল হতাশা আর লোকসান পুষিয়ে লাভের মুখ দেখবে ব্যবসায়ীরা। এদিকে পর্যটকদের আগমনকে কেন্দ্র করে হোটেল-রেষ্টুরেন্ট জোন থেকে শুরু করে পর্যটক নির্ভর সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে নবরূপে সাজানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পাশাপাশি রেষ্টুরেন্ট গুলোকে সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। শহরের হোটেল-মোটেল ও লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এলাকার গেষ্ট হাউস গুলোতে দেখা গেছে-ঈদকে সামনে নিয়ে নতুন সাজে সাজছে পর্যটনখ্যাত এলাকা মৌলভীবাজার। হোটেল-মোটেল গেষ্ট হাউস ও কটেজগুলোর রঙ পাল্টানোসহ নতুন রূপে সাজানো হচ্ছে। নতুন আসবাবপত্র দিয়ে হোটেল-মোটেল সাজানো ছাড়াও দেওয়ালের পুরোনো আস্তরণ তুলে লাগানো হচ্ছে প্লাস্টিক পেইন্ট কিংবা ডিসটেমপার।

রেস্তোরাঁ গুলোতেও চলছে ধোয়ামুছা ও রঙ লাগানোর কাজ। শ্রীমঙ্গল আয়েশ গেষ্ট হাউসের ম্যানেজার জাফরী ও শিহাব আহমদ জানান, গত বছর রাজনীতিক অস্থিরতার কারণে পর্যটকের সংখ্যা কম ছিল। কিন্তু এখন রাজনীতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসায় এবার ঈদের পরে পর্যটন মৌসুমে হোটেলের ভালো ব্যবসা হবে।

শুধু শ্রীমঙ্গল হোটেল-মোটেল জোন নয় জেলার আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট বড়লেখার মাধবকুন্ড, মৌলভীবাজার বর্ষিজোড়া ইকো পার্ক, কমলগঞ্জের মাধবপুর লেইক, শ্রীমঙ্গলের বাইক্কাবিল, গ্র্যান্ড সুলতান টি রির্সোট এন্ড গলফ ও একাত্তরের বধ্যভূমি, কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গলের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ও হাম হাম জলপ্রপাত, কুলাউড়ার মড়ইছড়া ইকোপার্ক, শ্রীমঙ্গল সিতেশ দেবের চিড়িয়াখানাসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলো সাজছে নতুন ভাবে। ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় দুই স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে ট্যুরিষ্ট পুলিশের পক্ষ থেকে।

জানা যায়-গত কয়েক বছর ধরে রাজনীতিক পরিস্থিতি অস্বাভাবিক থাকার কারণে আশানুরূপ পর্যটকের আগমন না ঘটার কারণে হতাশা দেখা দিয়েছিল এখানকার ব্যবসায়ীদের মাঝে। পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ অর্থের লোকসান গুনতে হয়েছিল ডিব-ডাব বিক্রেতা থেকে শুরু করে হোটেল-মোটেল-রেষ্টুরেন্ট ব্যবসায়ীদের। বর্তমান সময়ে রাজনীতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকার কারণে আশায় বুক বেঁধেছে ব্যবসায়ীরা। সবকিছু ঠিকটাক থাকলে ঈদ-উল ফিতরের কয়েকদিন আগে থেকে মৌলভীবাজার জেলায় আগমন করবে হাজার হাজার পর্যটক। যে আশার কথা এখানকার ব্যবসায়ীদের কণ্ঠেও।

এবার প্রায় লক্ষাধিক পর্যটকের আগমন আশা করছেন বলে জানিয়ে শ্রীমঙ্গল ইকো গেস্ট হাউস মালিক শহীদুল হক বলেন-ইতোমধ্যে রুম অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। যাতে প্রায় ১০হাজার পর্যটক রয়েছে।

তিনি বলেন-রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকলে কয়েক বছরের লোকসান পুষিয়ে লাভের মুখ দেখবে ব্যবসায়ীরা। এজন্য তিনি সকল রাজনীতিক দলের সহযোগিতা কামনা করেন। শ্রীমঙ্গল ট্যুরিষ্ট পুলিশ জানিয়েছেন, -ঈদ এবং পর্যটকদের আগমনকে নির্বিগ্ন করতে পোশাকধারী ট্যুরিষ্ট পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে নিরাপত্তার কাজে কাজ করবে নারী ও পুরুষ পুলিশ সদস্য।

তাছাড়া র‌্যাবের টহলও অব্যাহত থাকবে বলে জানান। অন্যদিকে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান জানান-পর্যটক হয়রানি এবং অতিরিক্ত মূল্য নেয়া বন্ধে হোটেল-মোটেল ও রেস্তোঁরায় মূল্য তালিকা টাঙ্গানোর নির্দেশনা প্রদান করা হবে।



মন্তব্য চালু নেই