পরীক্ষার হলে শিক্ষকের থাপ্পড়ে কানে রক্ত ঝরল শিক্ষার্থীর

মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে পরীক্ষার হলে এক শিক্ষকের থাপ্পড়ে এসএসসি শিক্ষার্থীর কান ফেটে গেছে।

বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে দৌলতপুর পিএস উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম আকাশকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সে বিষ্ণুপুর বিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

আকাশকে প্রথমে স্থানীয় দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের এক নম্বর ওয়ার্ডে নেওয়া হয়।

দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক মিসবাহ মুক্বাররাবিন জানান, হাসপাতালে ভর্তি শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম আকাশ আপাতত কানে কম শুনতে পা‌চ্ছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে ইএনটি (নাক-কান-গলা) বিভাগে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, শিক্ষার্থীকে থাপ্পড় দেওয়ার ঘটনায় শিক্ষক আবু হানিফকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্র সচিব ও দৌলতপুর পিএস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান।

মো. মিজানুর রহমান জানান, আজ ছিল ক্যারিয়ার বিষয়ক পরীক্ষা। দুই নম্বর কক্ষে পরীক্ষা চলার সময় হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর নেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেকায়েপের (সেকেন্ডারি এডুকেশন কোয়ালিটি অ্যান্ড অ্যাকসেস এনহান্সমেন্ট প্রজেক্ট) বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আবু হানিফ বিষ্ণুপুর বিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম আকাশকে কানে জোরে থাপ্পড় দেন। এতে শিক্ষার্থীর কানে রক্তক্ষরণ হয়। পরে তাকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তিনি জানান, পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় তাঁকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সেকায়েপ প্রকল্পের মহাপরিচালকের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে দৌলতপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাসিম আখতার জানান, শিক্ষার্থীকে থাপ্পড় মারা সমীচীন হয়নি। অভিযুক্ত শিক্ষককে ঘটনার পরপরই অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

রাকিবুল ইসলাম আকাশের বাবা আবদুর রহমান জানান, তাঁর ছেলের ওপর শিক্ষকের এ রকম ঘটনা কোনো শিক্ষকই করতে পারেন না। এ জন্য তিনি আইনের আশ্রয় নেবেন।

মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের ইএনটির বিভাগীয় প্রধান ডা. ইউসুফ হায়দার জানান, জোরে চড় দেওয়ায় রাকিবুল ইসলাম আকাশের কানের পর্দা ফেটে গেছে। এ কারণে রক্তক্ষরণ হ‌য়ে‌ছে।

মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. লুৎফর রহমান জানান, আকাশের অবস্থা এখন আশঙ্কামুক্ত।

জেলা প্রশাসক রাশিদা ফেরদৌস বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমি ঘটনাটি জানামাত্র সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।’



মন্তব্য চালু নেই