পরীক্ষার ফল বলছে আমদানি করা গম ‘নিম্নমানের’ : মন্ত্রণালয়ের দাবি ‘ভালো’

ব্রাজিল থেকে আনা গম নিয়ে এবার নতুন তথ্য। বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) খাদ্যবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরীক্ষার ফল থেকে জানা গেলো ওই গম নিম্নমানের। তবুও খাদ্যমন্ত্রী বলছেন, আমদানিকৃত গম পচা নয়।

এর আগে গেলো বুধবার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এর উপপরিচালক মো. কাউসার আহাম্মদ দাবি করেন, আমদানি করা গমের ‘মান ভালো’। ওই গমের ভিতরে মানুষের ‘খাবার অনুপযোগী’ কোনো উপাদান নেই; ‘গবেষণাগারে পরীক্ষা’ লদ্ধ ফলাফল থেকে এমন তথ্য উঠে এসেছে। তবে কোন গবেষণাগারে তা পরীক্ষা করা হয়েছে তা বলা হয়নি তাঁর দেয়া ব্যাখ্যায়।

বিসিএসআইআর পরীক্ষায় দেখা গেছে, আমদানি করা ওই গমে কুঁচকানো ও ভাঙা দানার পরিমাণ সরকার নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি। আর ভাঙা দানার পরিমাণ কয়েক গুণ বেশি। দেশের ১৪টি খাদ্যগুদামের গমের নমুনা পরীক্ষা করে এই ফলাফল পেয়েছে সরকারি সংস্থাটি। খাদ্য মন্ত্রণালয় গমের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর ২৫ জুন এসব নমুনা পরীক্ষা করার জন্য খাদ্যবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। রোববার খাদ্য মন্ত্রণালয়ে এ পরীক্ষার ফলাফল জমা দেয় তারা।

তবে এই গম খাওয়ার যোগ্য কি না বা এর মধ্যে কোনো বিষাক্ত পদার্থ আছে কি না, সেই পরীক্ষা এখনও করা হয়নি। যদিও বিসিএসআইআরের পরীক্ষাগারে সেই সুবিধা রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাদ্যবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরিচালক মো. জহিরুল হক বলেন, ‘বিষাক্ত রাসায়নিক বা পদার্থ আছে কি না, সেই পরীক্ষা আমাদের করতে বলা হয়নি।’

আমদানিকৃত গম পচা নয় বলে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। সংসদে এমপিদের উপর ক্ষোভ প্রকাশের পর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের কাছে তিনি দাবি করেন, যে কেউ গোডাউন থেকে গমের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করাতে পারেন। পরীক্ষার মাধ্যমে এই গমকে পচা প্রমাণ করে কথা বলুন।’ তবে তিনি স্বীকার করেন, ‘চার মাস পরে খাদ্যবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরীক্ষাটি হওয়ায় এর ফলাফলে কিছুটা পার্থক্য হতে পারে।’

গম আমদানির সময় খাদ্য বিভাগের তৎকালীন মহাপরিচালক সারওয়ার খান গণমাধ্যমকে জানিয়ছেন, ‘ তখন গমের যে নমুনা পরীক্ষা করেছি, তা নিম্নমান ছিল। তবে চুক্তি অনুযায়ী, গমের যে সর্বনিম্ন বৈশিষ্ট্য থাকার কথা, ব্রাজিলের গম তার চেয়ে খারাপ নয়। ফলে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশেই ওই গম খালাসের অনুমতি দেওয়া হয়।’

তবে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সারা দেশ থেকে সংগ্রহ করা গমের নমুনা বিসিএসআইআরের গবেষণাগারে পরীক্ষা করে কোনো বিরূপ তথ্য পাওয়া যায়নি। খাদ্য অধিদপ্তর কখনোই পচা ও খাবার অনুপযোগী গম আমদানি করেনি বা করে না।’

তথ্য সূত্র: প্রথম আলো এবং জনকণ্ঠ



মন্তব্য চালু নেই