পরিবেশ আন্দোলনে প্রয়োজন কালো চুলের মানুষ

পরিবেশ রক্ষায় তরুণ ও নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘বাংলাদেশের পরিবেশ আন্দোলনে যারা জাড়িত তাদের চুল সাদা হয়ে গেছে। এ আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে হলে কালো চুলের মানুষ বাড়াতে হবে।’

শুক্রবার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের উপকূল ও সামুদ্রিক পরিবেশ’ শীর্ষক দুইদিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্কের (বেন) উদ্যোগে এবং ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয় ও ৩০টি গবেষণা, পেশাজীবী, মানবাধিকার, নারী, সামাজিক, পরিবেশ ও উন্নয়ন বিষয়ক সংগঠন সহযোগে এ বিশেষ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সম্মেলনে মুহিত বলেন, ‘উপকূল ও সমুদ্রাঞ্চল সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারিত হলেও সমুদ্র সম্পদ আহরণ এবং ব্যবহার করার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অজানা থাকায় আমরা এখনো পিছিয়ে আছি। তবে মানবসম্পদের উন্নয়নের মাধ্যমে আমাদের এ যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। এজন্য পরিকল্পিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা দরকার।’

এ ব্যাপারে থাইল্যান্ড ও মালদ্বীপের শিক্ষাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।

তিনি আরো বলেন, ‘যদিও বর্তমান সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। তবে সমুদ্র সম্পদ আহরণের জনশক্তি তৈরিতে বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের সহযোগিতাও প্রয়োজন।’

এসময় বাপা ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘বাংলাদেশের এক-পঞ্চমাংশ মানুষের বাসভূমিসহ আমাদের গৌরব ও সৌন্দর্যের অন্যতম স্থান দেশের উপকূল অঞ্চল। একদিকে সুন্দরবন, অন্যপ্রান্তে বিশ্বের অন্যতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। অথচ বিভিন্নভাবে আমাদের এ গৌরবের স্থানগুলোকে ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে প্রতিনিয়ত। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্রমাগতভাবে বেড়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস প্রতিরোধে কার্যকর সুন্দরবনকে এবং জীব বৈচিত্র্যকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করে ক্ষতিগ্রস্ত করা হচ্ছে।’

তিনি অভিযোগ তুলে বলেন, ‘উপকূলের পরিবেশের জন্য হুমকি সৃষ্টিকারী দীর্ঘ বাঁধ নির্মাণ, অপরিকল্পিতভাবে পর্যটন এলাকাগুলো গড়ে তোলা, জাহাজ-নির্মাণ ও জাহাজ-ভাঙা শিল্পকে বল্গাহীন বিকাশের সুযোগ দেয়া, উপকূলের ভেতরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে, মিঠা পানির সঙ্কট ঘটিয়ে আমাদের উপকূল অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও প্রাকৃতিক সম্ভাবনাকেই নষ্ট করার আয়োজন চলছে।’

পরিবেশ সংরক্ষণে অধিক গুরুত্বারোপের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘আমরা উন্নয়ন চাই, তবে পরিবেশ-প্রকৃতিকে বিনষ্ট করে নয়।’

আরো বক্তব্য দেন, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম ফিরোজ আহমেদ, প্রথম প্লেনারিতে মূল বক্তব্য দেন বেনের বৈশ্বিক সমন্বয়কারী ড. নজরুল ইসলাম, সম্মেলন প্রস্তুতি পরিষদের সদস্য সচিব ও বাপার সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. আব্দুল মতিন।

উদ্বোধনের পর সকাল ১০টায় সম্মেলনের প্রথম প্লেনারিতে অধ্যাপক ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম বিষয়ক ইউনিটের সচিব রিয়ার এডমিরাল (অব.) মো. খোরশেদ আলম বিএন উপস্থিত ছিলেন। আর দিনের দ্বিতীয় প্লেনানিতে সভাপতিত্ব করেন এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী।



মন্তব্য চালু নেই