পরিপত্র বাতিল : টেস্টে ফেল করলে পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নয়

নির্বাচনী (টেস্ট) পরীক্ষায় ফেল করলে শিক্ষার্থীরা পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। ফেল করলেও ক্লাসে ৭০ শতাংশ উপস্থিত শিক্ষার্থীদের পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ সংক্রান্ত পরিপত্র বাতিল করেছে সরকার।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সোমবার পরিপত্রটি বাতিল করে একটি আদেশ জারি করা হয়েছে। গত ১ মার্চ শিক্ষা সচিব মো. নজরুল ইসলাম খানের স্বাক্ষরে পরিপত্রটি জারি করা হয়েছিল।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব অসীম কুমার কর্মকার স্বাক্ষরিত বাতিলের আদেশে বলা হয়েছে, ওই পরিপত্র জারির পর শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষার্থী, শিক্ষাবিদ এবং সুশীল সমাজের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হওয়ায় অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

এতে আরো বলা হয়, বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসায় নির্বাচনী পরীক্ষায় পাস না করলে অযোগ্য অনিয়মিত ছাত্র-ছাত্রীদের পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য পাঠানো মোটেই কাম্য নয়।

যোগ্যতাবিহীন অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পাবলিক পরীক্ষায় পাঠানো হলে নিয়মিত ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের উপর এর বিরুপ প্রভাব পড়বে জানিয়ে এতে বলা হয়, এ কারণে পাবলিক পরীক্ষার আগে নির্বাচনী পরীক্ষার আয়োজন একটি প্রচলিত ধারা। এ ধারায় শিক্ষার্থীরা চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে লেখাপড়ায় অধিক মনোযোগী হয়ে নিজেকে প্রস্তুত করে থাকে।

আদেশ আরো বলা হয়েছে, শুধুমাত্র ৭০ শতাংশ ক্লাসে হাজিরার ভিত্তিতে নির্বাচনী পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হলে লেখাপড়ায় মনোযোগ নষ্ট হবে এবং পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার গুরুত্ব হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা থেকে যাবে। এতে পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

তবে অসুস্থতা, দূর্ঘটনা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রভৃতি কারণে কোনো শিক্ষার্থী নির্বাচনী পরীক্ষায় দিতে না পারলে তার আগের একাডেমিক রেকর্ড ও ক্লাস কার্যক্রমের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষক তাকে পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারেন। এমন ক্ষেত্রে একজন মেধাবী শিক্ষার্থীর বিষয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিবেচনা করতে পারবে। কিন্তু নির্বাচনী পরীক্ষায় ফেল করলে শুধুমাত্র ৭০ ভাগ উপস্থিতির কারণে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া ঠিক হবে না বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগেও শিক্ষা সচিবের নিজ থেকে নেওয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সঙ্গে। গত ৩১ ডিসেম্বর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তির নির্দেশনা জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সিদ্ধান্তটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হলে এর পরের দিন ১ জানু নির্দেশনাটি স্থগিত করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ওই সময় জানা গেছে ওই সিদ্ধান্তটি নিয়েছিলেন শিক্ষা সচিব। পরে শিক্ষামন্ত্রী বিষয়টি জেনে স্থগিত করেন।

সর্বশেষ একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি নিয়ে চরম বিতর্কিত হন সচিব। অভিযোগ ওঠে শিক্ষামন্ত্রী ৩০০ ও এর বেশি আসন থাকা কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্নের সিদ্ধান্ত দেন। কিন্তু একদিন পরই সকল কলেজে অনলাইনে ভর্তির সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে আগেরটি বাতিল করে নতুন নীতিমালা জারি করেন সচিব। ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এতে সচিবের উপর চরম ক্ষুব্ধ হন মন্ত্রী।



মন্তব্য চালু নেই