পবিত্র হজ পালিত

যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাব-গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হলো হজের মূল কার্যক্রম আরাফার ময়দানে খুতবা ও দোয়া। এবারে ঐতিহাসিক আরাফার ময়দানে খুতবা প্রদান করছেন নবনির্বাচিত খতিব আবদুর রহমান আস-সুদাইসি। খুতবার শুরুতেই তিনি আল্লাহর প্রশংসা, বিশ্বনবির প্রতি দরূদ পাঠের মধ্য দিয়ে লিখিত ভাষণ শুরু করেন।

নব নিযুক্ত খতিব লিখিত খুতবা প্রদান কালে সদ্য অবসরে যাওয়া দৃষ্টিহীন শায়খ আবদুল আজিজকে মসজিদে নামিরার প্রথম কাতারে চেয়ারে বসা অবস্থায় খুতবা শুনতে দেখা যায়। খতিব তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই মহান আল্লাহ তাআলা শুকরিয়া আদায় করেন এই জন্য যে, সমগ্র বিশ্ব থেকে আগত আল্লাহ তাআলার মেহমানগণের সঙ্গে পবিত্র স্থান জাবালে রহমতে এসে একত্রিত হতে পেরেছেন এবং তাঁর দরবারে ফরিয়াদ জানানো সুযোগ পেয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর তাআলা হুকুম পালনে এখানে পবিত্র হজ পালন করতে এসেছি। হজ সম্পর্কে কিছু কথা তুলে ধরতে চাই-

আমরা সবাই জানি, হজরত আদম এবং হজরত হাওয়া আলাইহিস সালাম দুনিয়ায় এসে এ ঐতিহাসিক আরাফার ময়দানে একত্রিত হয়েছিলেন। জাবালে রহমতে দাঁড়িয়েই বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিদায় হজের মহামূল্যবান ভাষণ প্রদান করেছেন।

তিনি বলেন, ‘সুদকে হারাম করা হয়েছে, সকল সুদ আমার পায়ের নিচে। অজ্ঞতা-মুর্খতা কোনোটারই স্থান ইসলামে নেই। ভুলেও কাউকে মন্দ কথা বলা যাবে না। যারা মন্দ কথা বলে, ভৎসনা করে, তারা আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়।

অতঃপর নব নির্বাচিত খতিব বলেন, ‘আমরা সবাই মুসলমান। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, মুসলমানের পরিচয় কি? মুসলমানতো সেই ব্যক্তি যে তাঁর নির্দেশ মোতাবেক জীবন পরিচালন করে।

খতিব আরো বলেন, আমাদের ইমাম ও আলেমদের দায়িত্ব অনেক বেশি, আমাদেরকে ইসলামের সুমহান আদর্শের কথা ভুলে গেলে চলবে না। সুন্দর ও উত্তম কথা দ্বারা মানুষকে ইসলামের দাওয়াত দিতে হবে। উগ্রতা ও বল প্রয়োগ পরিহার করতে হবে।

তিনি তাঁর বয়ানে ইরাক, ফিলিস্তিন, ইয়ামেনের মুসলমানদের জন্য দোয়া করেন। তাঁদের মুক্তি কামনা করেন।

সর্বোপরি তিনি বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর এ মহাসম্মিলনে, ‘আল্লাহ তাআলার বিধান বাস্তবায়ন যত কষ্টই হোক না কেন তা মেনে চলার উদাত্ত আহ্বান জানান। বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অন্যায় ও অনাচার, মন্দ কথা, গালি-গালাজ থেকে বিরত থাকার তাগিদ দেন। মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার তাগিদ দেন। বিশ্বনবির পথে ও মতে চলার আহ্বান জানান।

অবশেষে…
মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় দীর্ঘ মুনাজাত করেন। যেখানে সমগ্র বিশ্বে শান্তি ভ্রাতৃত্ববোধ, সাম্য-সম্প্রীতির জন্য দোয়া করেন। হজে আগমনকারী সকল মুসলমানের হজকে কবুল করার দোয়া করেন। সবাইকে নিষ্পাপ হিসেবে কবুল করার দোয়া করেন। অতঃপর আল্লাহ তাআলার প্রশংসায় তাঁর মুনাজাত শেষ করেন।

মুনাজাত শেষের সঙ্গে সঙ্গেই তিনি জোহর ও আসর নামাজ আলাদা আলাদা ইকামাতে আদায় করেন। নামাজ আদায়ের মাধ্যমেই ঐতিহাসিক আরাফা ময়দানের খুতবার সমাপ্তি ঘটে।

এখানেই হাজিগণ সূর্যাস্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করে তালবিয়া ও দোয়া-ইস্তিগফার করবেন। সুর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গেই তারা মুযদালিফার দিকে রওয়ানা হবে।

আল্লাহ তাআলা সকল হাজিগণকে নিরাপদে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ১০ জিলহজ মিনায় কংকর নিক্ষেপ, কুরবানি ও তাওয়াফে জিয়ারাত যথাযথ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।



মন্তব্য চালু নেই