পপুলারের সুমনের মোবাইলে আরো দুই নারীর ছবি

পাশের টয়লেট থেকে হাত বাড়িয়ে নারীর গোপন ভিডিও ধারণ। উদ্দেশ্য সেগুলো বন্ধুদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া। এবার প্রথম নয়, এমন আগেও করেছেন সুমন। পপুলারের আইডি গলায় ঝুলিয়ে কাজের আড়ালে তুলেছেন নারীদের ছবি। ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে সেগুলো শেয়ার হতো বন্ধুদের সঙ্গে। তবে এবার আর কুকর্ম করে পার পেলেন না সুমন। অবশেষে গ্রেফতার হতেই হলো তাকে। রিমান্ডে নিয়ে ‘কুকর্মের’ আরো ইতিহাস জেনেছে পুলিশ।

এর আগে শনিবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডি পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নারীর ১০ সেকেন্ডের ভিডিও ধারণ করায় হাসিবুর রহমান সুমনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালতে সোপর্দ করে দুদিনের রিমান্ডে নেয়া হয় তাকে।

সুমন পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পিএবিএক্স অপারেটর হিসেবে কর্মরত। তার জব্দকৃত মোবাইল ফোন থেকে আরো দুই নারীর ছবি পাওয়া গেছে। তারা পপুলার ডায়াগনস্টিকে রোগী হিসেবে এসেছিলেন। তাদের অজান্তেই ছবিগুলো তোলা হয়েছিল। ক্লিনিকে আসা ওই দুই নারীর ছবি সুমন মাসেঞ্জারের মাধ্যমে বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ারও করেছেন।

আসামি সুমন মিরপুরের সরকারি বাঙলা কলেজ থেকে মাস্টার্স পাস করেছেন বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন। তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে মিরপুর বাঙলা কলেজের পাশাপাশি ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসও (ইউল্যাব) লেখা রয়েছে। সুমন গত ৪ বছর ধরে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পিএবিএক্স অপারেটর হিসেবে চাকরি করছেন। তার বাড়ি চুয়াডাঙ্গা। তার বাবা বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের আলমডাঙ্গা শাখায় কর্মরত।

পুলিশের ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল লতিফ বলেন, সুমনের মোবাইলটি জব্দ করা হয়েছে। ওই নারী যে টয়লেটে ছিলেন তার পাশের টয়লেটেই সুমন ছিলেন। মাঝে পার্টিশন ছিল। পার্টিশানের নিচের ফাঁকা জায়গা থেকেই মোবাইল দিয়ে ভিডিও করেছিলেন সুমন। তার মোবাইলটি জব্দ করা হয়েছে। ওই মোবাইলে আরো দুই নারীর ছবি পাওয়া গেছে। সেগুলোও গোপনে তোলা।

এদিকে রিমান্ডে সুমন ভিডিও করার কথা স্বীকার করলেও একে বন্ধুদের মধ্যে শেয়ার করার বিষয়টি এখনো স্বীকার করেননি। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, ‘ক্ষণিকের মোহ’ থেকেই ভিডিওটি করা।

ভুক্তভোগী নারীর দায়ের করা পর্নোগ্রাফি মামলাটি তদন্ত করছেন ধানমন্ডি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) খায়রুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সুমন পাশের টয়লেট থেকে ওই নারীর আসার শব্দ শুনেই ভিডিওর জন্য মোবাইলটি তাক করে দিয়েছিল। উদ্দেশ্য যাই হোক না কেন সে গুরুতর অপরাধ করেছে। তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হবে।’

এদিকে পর্নোগ্রাফির মতো ‘ডিজিটাল সন্ত্রাসী’দের জন্য পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১২ এ সর্বনিম্ন দুই বছর থেকে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড, এক কোটি টাকা জরিমানা অথবা উভয়দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, ওসি এবং পর্নোগ্রাফির স্বীকার হওয়া ওই নারী সুমনের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন।



মন্তব্য চালু নেই