পদ্মার ভাঙনে হুমকিতে রাজবাড়ী শহর রক্ষা বাঁধ

তিন দশক আগে পদ্মার ভাঙন থেকে রাজবাড়ী শহর রক্ষায় নির্মিত বাঁধটি নানা কারণে হুমকিতে পড়েছে। একদিকে নদীর তীব্র স্রোত, অন্যদিকে নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা বন্ধ হয়নি-দুইয়ে মিলে ঝুঁকি তৈরি করছে এই বাঁধের জন্য।

ভারতের বিহারে বন্যা মোকাবেলায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার গঙ্গা নদীর ওপর নির্মিত ফারাক্কা বাঁধের প্রায় সব কটি গেট খুলে দেয়ার পর থেকে বাংলাদেশে পদ্মায় পানি বেড়েছে। গত ২৩ আগস্ট থেকে চারদিন পানি প্রবাহ ক্রমাগত বাড়লেও এরপর থেকে পানি কমছে। তবে এখনও নদী টুইটুম্বুর আর নদীর বুকে ঘূর্ণি স্রোতর তৈরি হচ্ছে। এই স্রোত আবার গিয়ে আঘাত হানছে বেড়িবাঁধে। এ কারণেও বাঁধটি দুর্বল হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

বাঁধের এই অবস্থায় রাজবাড়ী শহরে এক ধরনের উদ্বেগ আছে। আর নদী তীরের জনপদে আতঙ্ক কারও বেশি। এরই মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় তীর ভাঙছে পদ্মায়।

ভাঙনের ফলে ইতমেধ্যে সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর, মহাদেবপুর ও চর জৌকুরা ও বরাট ইউনিয়নে শুরু হয়েছে নদী ভাঙন। বরাট, মহাদেবপুর ও চর জৌকুরার শত শত একর আবাদী জমি, নদীতে বিলীন হয়েছে। গৃহহীন হয়েছে তিন হাজারেও বেশি মানুষ। মঙ্গলবার ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আশরাফুল ইসলাম। তিনি দুর্গতদেরকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।

রাজবাড়ীকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করতে ১৯৮৮ সালে নির্মিত হয় শহররক্ষা বাঁধ। তবে এই বাঁধ রক্ষায় সমন্বিত কোনো উদ্যোগ নেই। আবার ফাটল ধরা বাঁধও সময় মত মেরামত হয়নি। এ কারণে দিনে দিনে দুর্বল হয়েছে বাঁধ।

স্থানীয়রা বলছেন, শহর রক্ষা বাঁধ সংস্কারের নামে নানা সময় কার্যক্রম চললেও দুর্নীতির কারণে তেমন সুফল পাওয়া যায়নি। দুর্নীতির প্রতিকার চেয়ে নানা সময় মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছে এলাকাবাসী।

নদী ভাঙন শুরুর পর স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙনকবলিত এলাকায় বালুর বস্তা ফেলে মোকাবেলার চেষ্টা করছে। বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী গৌরপদ সূত্রধর জানান বরাট ইউনিয়নের উড়াকান্দা নামক স্থানে তিনটি প্যাকেজে তিনশ মিটার দৈঘ্যে প্রতি প্যাকেজে ছয় হাজার বালুর বস্তা ফেলার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। বর্ষা শেষে নদীতে পানি কমার আগে বাঁধ মেরামত বা সংস্কার কাজ শুরু সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি।



মন্তব্য চালু নেই