নোয়াখালী মাইজদী অবৈধ বাণিজ্যিক পার্ক নির্মাণ বন্ধের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

এম.এ আয়াত উল্যা, স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী : নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীর প্রানকেন্দ্র ঐতিহ্যবাহী বড় দীঘির দক্ষিণপাড়ের অবৈধ বাণিজ্যিক পার্ক নির্মাণ বন্ধের প্রতিবাদে ‘নোয়াখালী নাগরিক অধিকার মোর্চা’ ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুর জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পাদদেশে নোয়াখালী নাগরিক অধিকার মোর্চা উদ্যোগে প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক্স ও অনলাইন মিডিয়ায় সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। মাইজদীর বড় দীঘির দক্ষিণপাড়ে কেীন্দ্রয় শহীদ মিনার, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলক, বিজয় মঞ্চ, কচি-কাঁচার মেলা, মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলা ও বৈশাখি উৎসব চত্বরকে সংকুচিত করে আলিফ নামের একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান অবৈধভাবে বাণিজ্যিক পার্ক নির্মাণের প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, নোয়াখালী নাগরিক অধিকার মোর্চা’ র যুগ্ম আহ্বায়ক এডভোকেট মোল্লা হাবিবুর রাসুল মামুন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, যুগ্ম আহ্বায়ক আনম জাহের উদ্দিন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট নোয়াখালী জেলা শাখার সভাপতি বিমলেন্দু মজুমদার, সহসভাপতি মহি উদ্দিন ফারুক প্রমুখ। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পঞ্চাশের দশকে মাইজদী শহর গড়ে ওঠার প্রাক্কালে মাইজদী বড় দীঘিটি খনন করা হয়। সেই থেকে এটি জেলা শহরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশ। এটি জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান। দীঘির দক্ষিণ পাড়ে ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতার স্মৃতিবিজড়িত। বিগত প্রায় পঁচিশ বছর ধরে এ পাড়ে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা, বইমেলা, বৈশাখী উৎসব হয়ে আসছে। গণপূর্ত বিভাগের এ জায়গাটি শহরের একমাত্র মুক্ত এলাকা। জাতীয় বিভিন্ন দিবস আয়োজনের পাশাপাশি অন্য সময় এ স্থানটি নাগরিকদের প্রাত ও বৈকালিক ভ্রমণের জায়গা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ আইন-কানুনকে তোয়াক্কা না করে জামায়াতে ইসলাম সংশ্লিষ্ট আলিফ ডেভেলপার প্রপ্রাটিজ কোম্পানীকে দিয়ে ১৫ ফুট উঁচু দেয়াল তুলে ড্রিম পার্ক নির্মাণের জন্য লিজ দিয়েছে। যে স্থানে পার্ক নির্মাণ হচ্ছে তার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা। এই বিশাল অংকের টাকার পরিমাণ জমি একটি জামায়াতি ইসলামী প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেয়া দেশের জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। এটি তাদের আর্থিক ভীত এবং রাজনীতিকে নোয়াখালীতে আরো শক্তিশালী করবে। পার্কটি নির্মাণের জন্য পৌরসভা কর্তৃপক্ষ প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ১৯৯৭ সালের একটি ঘোষণাকে বিকৃত করে উপস্থাপন করছে। যেখানে তিনি নোয়াখালীতে একটি পার্ক নির্মাণের জন্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেই প্রতিশ্রুতির আলোকে ২০১২ সালে পৌরসভা দীঘির উত্তর ও পূর্ব পাড়ে একটি পার্কও তৈরি করেছে। কিন্তু বর্তমানে পৌরসভা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে স্বাধীনতা ও জাতীয় জীবনের এ সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাকে সংকুচিত করে জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত একটি কোম্পানিকে দিয়ে পার্ক নির্মাণ করছে। প্রধানমন্ত্রী যখন জনগণকে প্রতিশ্রুতি দেন তখন কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বা গোষ্ঠি স্বার্থের জন্য কোনো প্রতিশ্রুতি দেন না। এটি প্রধানমন্ত্রীর সাথে প্রতারণার শামিল। সংবাদ সম্মেলনে অবৈধ এ বাণিজ্যিক পার্ক নির্মান বন্ধ করে এই স্থানে অবাণিজ্যিক মুক্ত উদ্যান, দীঘির পাড়ে কোন বাণিজ্যিক পার্ক নির্মাণ বা বাণিজ্যিক কর্মকান্ডের জন্য তৃতীয় পক্ষের কাছে ইজারা না দেওয়া এবং দক্ষিণ পাড়ের স্বাধীনতা ও জাতীয় জীবনের সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাকে অক্ষত রেখে দক্ষিণ পাড়কে ‘স্বাধীনতা উদ্যান’ নামকরণ করাসহ ৫টি দাবী উপস্থাপন করেন। সংবাদ সম্মেলন থেকে আগামী দিনে আরো কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলেও হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয় নোয়াখালী নাগরিক অধিকার মোর্চা কোনো রাজনৈতিক সংগঠন নয়, সংগঠন পৌর নাগরিকদের সকল অধিকার নিয়ে কথা বলবে।



মন্তব্য চালু নেই