প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প ভূক্ত

নোয়াখালী আশ্রয়ণ প্রকল্পগুলোতে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ

এম.এ. আয়াত উল্যা, স্টাফ রিপোর্টার নোয়াখালী : প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পভূক্ত ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করার জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের এই প্রকল্পকে দুঃস্বপ্নে পরিণত করেছেন নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কিছু অসাধু কর্মকর্তা।

আশ্রয়ণ প্রকল্পে বিদ্যুতায়নের ওয়্যারিং কাজে ব্যাপক দুর্নীতি অভিযোগ ও নিমানের মালামাল দিয়ে ঘর ওয়্যারিং এর কারণে বৈদ্যুতিক শর্টে আগুন ধরে প্রাণনাশের আশংকা করছে আশ্রয়ণবাসি। ২০১৬ সালে ১২ মার্চ তারিখে ওয়্যারিং এর মালামাল আশ্রয়ণ প্রকল্পে পৌঁছালে আশ্রয়ণবাসি ও স্থানীয়দের নজরে পড়ে।

তখন থেকে পল্লী বিদ্যুতের ঐ সকল কর্মকর্তা বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য আশ্রয়ণের জনগনের সাথে দফা দফায় আলোচনা করে। কিন্তু মালামাল পরিবর্তন না করেই পল্লী বিদ্যুতের মনোনীত ইলেক্ট্রিশিয়ানের মাধ্যমে নি¤œমানের মালামাল দিয়ে ঘর ওয়্যারিং করছে।

এ ব্যাপারে কিছু কিছু আশ্রয়ণের নেতারা আপত্তি করলে নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম এমএস ও সোনাপুর জোনাল অফিসের ডিজিএম, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্প থেকে মালামাল গুলো দেওয়া হয়েছে বিধায় পরিবর্তনের সুযোগ নেই বলে এড়িয়ে যান।

ওয়্যারিংকৃত ঘরে ডিজাইন এবং বরাদ্দ অনুযায়ী মালামাল স্থাপন না করে তড়িঘড়ি করে তাদের মনোনীত অদক্ষ শ্রমিক দিয়ে ওয়্যারিংএর কাজ শেষ করার চেষ্টা করছে বলে স্থানীয়রা জানান। নোয়াখালী জেলার সুধারাম থানার পূর্ব মাইজচরা আশ্রয়ণ প্রকল্পে ওয়্যারিং উপযোগী ১৫০ টি ঘর ও ২টি কমিউনিটি সেন্টার, সূবর্ণচর উপজেলাধীন দঃ চর মজিদ আশ্রয়ণ প্রকল্পে ওয়্যারিং উপযোগী ১৪১৭ টি ঘর ও ১৮ টি কমিউনিটি সেন্টার এবং উঃ চর ব্যাঘা আশ্রয়ণ প্রকল্পে ওয়্যারিং উপযোগী ৩২০ টি ঘর ও ৪ টি কমিউনিটি সেন্টার, কবিরহাট উপজেলাধীন নলুয়া-১ আশ্রয়ণ প্রকল্পে ওয়্যারিং উপযোগী ১১০ টি ঘর ও নলুয়া-২ আশ্রয়ণ প্রকল্পে ওয়্যারিং উপযোগী ৪৪০ টি ঘর ও ৫ টি কমিউনিটি সেন্টার, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলাধীন চর মন্ডলিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে ওয়্যারিং উপযোগী ৪০ টি ঘর ও ১ টি কমিউনিটি সেন্টারে বিদ্যুতায়নের কাজ নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তত্ত্বাবধানে চলছে।

কিন্তু ওয়্যারিং কাজে নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কিছু অসাধু কর্মকর্তা কর্তৃক বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অনুমোদিত মালামাল সর্বরাহ না করে নিমানের মালামাল সর্বরাহ করে স্থাপন করছে। এতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয় জনগন।

বিভিন্ন আশ্রয়ণে সরেজমিনে গিয়ে ঠিকাদার পক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি, সুধারাম থানার পূর্ব মাইজচরা আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এ কাজের তদারকিতে থাকা গোলাম আযম নামের এক লোক নিজেকে ইলেক্ট্রিক ইন্সপেক্টর পরিচয় দিলেও তিনি ঠিকাদারের নাম বলতে পারেনি।

এবং অনুমোদিত মালামালের তালিকার সাথে ওয়্যারিংকৃত মালামাল মিলিয়ে দেখাতে পারেননি। দেখা যায় ওয়্যারিং কাজে ব্যবহৃত তার এর গায়ে ইস্টার্ণ কেবল লিখা থাকলেও ভিতরের তিনটি তারের মধ্যে ২টি তার তামার ১টি তার অন্য ধাতুর। এছাড়াও মেইন সুইচ, সুইচ, সকেট, ফোল্ডার ও পিটিংস মালামালসহ প্রত্যেকটা মালামাল নিমানের ।

এবিষয়ে নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) শংকর লাল দত্ত কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “মালামালের গুনগতমান পরীক্ষা করার জন্য কমিটি আছে, তারাই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, কি ধরনের মালামাল ওয়্যারিং কাজে ব্যবহার হবে”।

উক্ত প্রকল্পে বরাদ্দ/ধার্যকৃত মোট অর্থের পরিমাণ জানতে চাইলে তিনি সুস্পষ্ট করে বলতে পারেননি। এজিএম আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, প্রতিঘরের মুজুরি, ওয়্যারিং, মালামালসহ যাবতীয় খরচের জন্য মোট ৩৮৩১.৯০ টাকা (আটত্রিশশত একত্রিশ টাকা নব্বই পয়সা) ধার্য করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই