নোয়াখালীর কিছু খবর :

নোয়াখালীতে ৩ শিক্ষকের উপর ছাত্রলীগ ক্যাডারদের হামলার ঘটনায় মানববন্ধন-সমাবেশ

মাইজদী শহরে ৩ শিক্ষকের উপর ছাত্রলীগ ক্যাডারদের হামলার ঘটনায় শিক্ষক সমিতি ও শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন-সমাবেশ ও বিক্ষোভ হয়েছে। নোয়াখালীর মাইজদীতে অরুণচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষককে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও আইনের আওতায় আনার দাবীতে মানববন্ধন-সমাবেশ হয়েছে।

বুধবার বেলা ১১ থেকে ঘন্টাব্যপী জেলা শহর মাইজদী টাউন হল মোড়ের প্রধান সড়কে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি নোয়াখালী জেলা শাখা এ কর্মসূচির আয়োজন করে। এসময় অরুণ স্কুলসহ বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী, অভিভাবক, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার কয়েকশ লোক অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধন শেষে জেলা পুলিশ সুপার বরাবর একটি স্মারকলিপিও প্রদান করা হয়।

জেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে ও আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেন’র সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আলমগীর, হরিনারায়ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল আলিম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের ডেপুটি কমান্ডার মমতাজুল করিম বাচ্চু, নলপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক হারুনুর রশিদ, জমিদারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সফি আহম্মদ প্রমুখ। বক্তারা বলেন- দেশের প্রায় স্থানে ইতোমধ্যে বখাটেদের হাতে শিক্ষকরা লাঞ্চিত হচ্ছে।

যার দৃষ্টান্ত গত মঙ্গলবার জেলা শহর মাইজদীর অরুণ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের ঘটনা। বখাটেরা বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিলনায়তনে ঢুকে গণিততের সহকারী শিক্ষক পিন্টু আচার্য্য, ক্রীড়া শিক্ষক আবুল কাশেম ও সহকারী শিক্ষক গিয়াস উদ্দিনকে মারধর করে গুরুতর আহত করে।

বক্তারা এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার পূর্বক আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেন। তাঁরা বলেন শিক্ষকরা সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকতে চায়, কোন কারণে রাস্তায় নেমে আন্দোলনে যাতে শিক্ষকদের না নামতে হয়। জানতে চাইলে সুধারাম থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, মঙ্গলবার ঘটনার পর পরই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং ওই রাত সাড়ে ১২টার দিকে যৌথবাহীনি মাইজদী বাজারস্থ বাজিগর বাড়িতে অভিযান চালায়। ঘটনার সাথে জড়িতদের মধ্যে পুষ্প নামের এক নারীসহ সাইদুল হক, রবিন, নিশাত ও জাকের হোসেন হেঞ্জুকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের বুধবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। অপর আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

নোয়াখালীতে সম্মান প্রথম বর্ষের ফলাফল পুনঃমূল্যায়নসহ তিন দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের মাননবন্ধন, স্মারকলিপি পেশ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিন ২০১২-১৩ সেশনের অনার্স (সম্মান) প্রথম বর্ষে একটি কোর্সে পাসকৃত শিক্ষার্থীদের ২য় বর্ষে উন্নিত, এফ গ্রেড প্রাপ্ত কোর্সের ফলাফল পুন:মূল্যায়ন ও গ্রেডিং পদ্ধতি বাস্তবায়নের জন্য পরিপূরক আয়োজন করতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দিয়েছে নোয়াখালী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার বেলা ১১টায় কলেজ ক্যাম্পাসে মানববন্ধন শেষে কলেজের অধ্যক্ষের মাধ্যমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়- ২০১৩ সালের অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় ভালভাবে অংশগ্রহণ করা সত্ত্বেও গত ৪ মার্চ প্রকাশিত ফলাফল অপ্রতাশিতভাবে খারাপ হয়। অনেকেই প্রথম বর্ষ থেকে দ্বিতীয় বর্ষে উন্নিত হতে পারে নাই। এ কারণে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় থেকে এক বছর হারিয়ে যেতে পারে। আবার দেখা যায় সেশানজটের জন্য শিক্ষা জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী ২১০ দিন ক্লাস হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে ৮০/৯০ দিনের বেশি ক্লাস হয় না।

অনার্স চালু বিষয়ে ৭জন এবং মাস্টার্স চালু বিষয়ে ১২জন করে শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও অধিকাংশ বিভাগে ২-৩জনের বেশি শিক্ষক নেই। অন্যদিকে শিক্ষক ও ক্লাস রুম সংকটসহ বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে কলেজ খোলার দিনগুলোতেও মান সম্মত শিক্ষা নিশ্চিত হয় না। এমন অসংখ্য প্রতিকূল অবস্থা মোকাবেলা করেই শিক্ষা জীবন অতিবাহিত করছে শিক্ষার্থীরা।

এমন অবস্থায় এসব সীমাবদ্ধতা বিবেচনা করে উল্লেখিত তিনদফা দাবীনামা পূরণের অনুরোধে শিক্ষার্থী এ স্মারকলিপি প্রদান করেন। মানববন্ধনে নোয়াখালী সরকারি কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থীর সাথে সংগতি প্রকাশ করেন বিভিন্ন প্রগতীশিল রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এ সময় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা সংক্ষিপ্ত বক্তব্যও প্রদান করেন। দৃষ্টি আকর্ষণ করলে নোয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আল হেলাল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন স্মারকলিপি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবী সম্বলিত স্মারকলিপিটি দ্রুত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হবে।

নোয়াখালীতে অপহৃত কিশোরীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ

নোয়াখালী সদর উপজেলার অশ্বদিয়া থেকে অপহৃত কিশোরীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টায় নোয়াখালী পৌরসভা ও কাদিরহানিফ ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী রাজারামপুর এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধারকৃত কিশোরী নুসরাত জাহান প্রমি (১৫) অশ্বদিয়া ইউনিয়নের বাইল্লার কোটা নামক এলাকার জহির উদ্দিন চান মিয়ার মেয়ে। তবে এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ জানায়, কিছুদিন আগে অপহৃত কিশোরীকে বিয়ে করার জন্য তার পরিবারের কাছে প্রস্তাব করে একই এলাকার কবির নামের একটি ছেলে।

কিশোরীর বাবা-মা বিয়েতে সম্মতি না দেয়ায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ২টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা যোগে কবির, সাইফুল ও সজিবসহ ৫-৬জন যুবক কিশোরীদের বাড়িতে গিয়ে তাকে অপহরণ করে। পরবর্তীতে অপহৃত কিশোরীর পরিবারের লোকজন থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিলে তাৎক্ষণিক পুলিশ অভিযান চালায়। পুলিশী অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে অপহরনকারীরা মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে ওই কিশোরীকে নোয়াখালী পৌরসভা ও কাদিরহানিফ ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী রাজারামপুর এলাকায় সড়কের উপর নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে।

সুধারাম মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নিজাম উদ্দিন অপহৃত কিশোরীকে উদ্ধারের কথা জানান। তিনি বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কিশোরীকে অপহরণ করার পর খবর পেয়ে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে অপহরণকারীরা রাতে অপহৃতকে ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ অপহৃতকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে রেখেছে। আইনী প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হবে। এছাড়া অপহরণকারীদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলেও জানান তিনি।



মন্তব্য চালু নেই