নির্বাচনী রূপরেখায় এগোচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ

আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন সরগরম বেশ কিছুদিন ধরে। নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা নিয়ে বড় দুটি জোটের নেতারা সরব রয়েছেন। তবে রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যেই ২০১৯ সালের নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আর এ জন্য একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছে দলটি, তেমনি দলীয় নেতাদের কর্মকাণ্ডও নজরদারিতে রাখা হয়েছে।খবর পরিবর্তনের।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, ২০১৯ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে বিবেচনা করেই প্রস্তুতি শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। সেক্ষেত্রে জনগণকে টানতে যেমন ইতিবাচক উদ্যোগ প্রয়োজন, তেমনি সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির চেষ্টাও রয়েছে দলটির।

আওয়ামী লীগের সর্বশেষ ২০তম জাতীয় সম্মেলনের পর থেকেই দলটির নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান।

সাবেক এ বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। ফলে সবসময়ই আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। আমাদের সব কর্মকাণ্ডই নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতিস্বরূপ।’

তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রে নির্বাচন আসবে, এটি একটি কন্টিনিউয়াস প্রসেস। স্থানীয় সরকার হোক আর জাতীয় নির্বাচন হোক- প্রতিটি নির্বাচনই জাতীয় নির্বাচনের মতোই। কেননা, তাতে জনগণের মতামতরে প্রতিফলন ঘটে। জাতীয় মতামতের প্রতিফলন ঘটে, সেটি আংশিক হোক কিংবা বড় হোক। আর এর জন্য আমরা সবসময়ই প্রস্তুত। কারণ আমরা জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতায় বিশ্বাসী।’

আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে ফারুক খান বলেন, ‘আমরা আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছি। সবসময়ই তো নির্বাচনের প্রস্তুতিতে থাকি, কিন্তু এবার বিশেষ করে গত সম্মেলনের পর থেকে আমরা তা শুরু করেছি। আমাদের দলের সভাপতি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে তখন নির্দেশনা দিয়েছেন।’

নির্বাচনের বিষয়ে দলীয় নির্দেশনা কি ধরনের রয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের সভাপতি তিনটি স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন নির্বাচন প্রস্তুতির জন্য। প্রথমটি হল, তৃণমূলের জনগণের কাছে যেতে। তাদের উন্নয়নে কী কী দরকার তা জেনে বাস্তবায়ন করতে বলেছেন। দ্বিতীয়ত, সংগঠনকে আরো জোরদার করতে বলেছেন। এ ছাড়া গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াতে বলেছেন তিনি, যাতে তাদের সামাজিক নিরাপত্তা অবস্থার উন্নয়ন সম্ভব হয়। তেমনি মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন করার কথা বলেছেন তিনি।’

ফারুক খান বলেন, ‘এসব কাজ আমরা আগেও করেছি। তবে এখন স্পেসিফিকভাবে করছি।’

এর বাইরেও নির্বাচনকে সামনে রেখে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিদ্ধান্ত রয়েছে দলের হাইকমান্ডের। দলটির সম্পাদকমণ্ডলীর একজন সদস্য বলেন, ‘প্রতি আসনে ৫ জন করে নেতার খোঁজ করা হচ্ছে। এ জন্য দুটি গোয়েন্দা সংস্থাও খোঁজ নিচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রতি আসনেই নেতাদের পজিটিভ-নেগিটিভ দিক দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি বর্তমান এমপির অবস্থানও দেখা হচ্ছে। সব মিলিয়েই প্রার্থী বাছাইয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

নেতাদের খোঁজ নেওয়ার ক্ষেত্রে কোন বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে এই নেতা বলেন, ‘নেতাদের সাংগঠনিক অবস্থান, তৃণমূলে জনপ্রিয়তা, গণসম্পৃক্ততা, দলে অবদান, ভাল ইমেজ- এ বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যারা ভাল থাকবেন তারা এগিয়ে থাকবেন, যাদের সমস্যা রয়েছে তারা বাদও পড়তে পারেন। কারণ আগামী নির্বাচনে সৎ, যোগ্য ও জনপ্রিয় নেতাদেরই বেছে নেওয়া হবে।’

এ লক্ষ্যে দলটি কাজ শুরু করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জেলায় জেলায় ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় নেতারা সফর শুরু করেছেন। তারা তৃণমূলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছেন। যেসব জায়গায় বিভেদ রয়েছে তা দূর করার তাগিদ দিচ্ছেন।’



মন্তব্য চালু নেই