নিরাপত্তা পরিষদে অস্থায়ী সদস্য পদে প্রার্থিতা প্রত্যাহার

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে অস্থায়ী সদস্য পদে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছে বাংলাদেশ। এ নির্বাচনে জাপানকেই সমর্থন দেয়ার কথা জানানো হয়েছে।

শনিবার বিকেলে ঢাকা সফররত জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে বৈঠকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ সিদ্ধান্তের জন্য বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন জাপান প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে।

বিকেল ৪টায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ঢাকা সফররত জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের পুর্বনির্ধারিত বৈঠকটি শুরু হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এই সফরে মোট ৪টি মেগা চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে তৈরি পোশাক খাতের উন্নয়নের জন্য আলাদা জাপানি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) প্রতিষ্ঠা করা, রেল খাতের উন্নয়নে জাপানি সহায়তা বৃদ্ধি, তথ্য-প্রযুক্তি খাতে জাপান সরকারের ঋণ এবং সেতু ও সড়ক যোগাযোগ খাতে অবকাঠামোগত উন্নয়নে জাপান সরকারের অনুদানের বিষয়গুলো রয়েছে। তাছাড়া এ বৈঠকের মাধ্যমে বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগের নতুন মাত্রা উন্মোচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এছাড়াও বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। বৈঠক শেষে একটি যৌথ ইশতেহারে স্বাক্ষর করারও কথা রয়েছে তাদের।

এর আগে দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে জাপান এয়ারওয়েজের একটি বিশেষ বিমানে করে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমানবন্দরে উপস্থিত হয়ে তাকে স্বাগত জানান। এরপর সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষ থেকে তাকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। এসময় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা গওহর রিজভী ও তিন বাহিনীর প্রধানসহ জাপান দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০১৬-১৭ সালের জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে অস্থায়ী সদস্য পদে লড়াই করার কথা ছিল বাংলাদেশের। একই পদে প্রার্থিতা ঘোষণা করে জাপানও। তারপর থেকেই দুই দেশের মধ্যে এ বিষয়ে সমঝোতার চেষ্টা করা হয়। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরেও এ বিষয়ে বিশদ আলোচনা হয়। তখন সরাসরি জাপানকে সমর্থন না দিলেও শনিবার প্রধানমন্ত্রী প্রার্থিতা প্রত্যাহারের মাধ্যমে জাপানকেই সমর্থন দিলেন।

এদিকে, এশিয়া প্যাসিফিক থেকে একটি দেশ জাতিসংঘের এই পদ পাবে। এই পদের জন্য বাংলাদেশ ২০০১ সালে প্রথম ফ্লোর তৈরি করে। বাংলাদেশ ২০১৬-২০১৭ সালের জন্য এই পদ চাইছে। দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে এই পদের জন্য বাংলাদেশ লবিং করেছিল।অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ জাপানকে সমর্থন দিয়ে সেই অবস্থা থেকে সরে এসেছে।

২০১১ সালে জাপানও একই পদে নির্বাচন করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে। সেটা প্রকাশ করার পর তারা চেষ্টা করে যাচ্ছে। তবে এই ক্ষেত্রে জাপানকে ওই পদ পেতে হলে বাংলাদেশের ভোট অবশ্যই লাগবে।

জাতিসংঘের ভেটো ক্ষমতাপ্রাপ্ত নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী ৫ সদস্যের পাশাপাশি প্রতি ২ বছরের জন্য আরো ১০টি দেশ অস্থায়ী সদস্য হিসেবে ভোটাভুটির মাধ্যমে নির্বাচিত হয়।



মন্তব্য চালু নেই