নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ক্রেতা কমে গেছে মৌচাক মার্কেটে

ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করায় পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে বিপাকে পড়েছেন রাজধানীর মৌচাক মার্কেট ব্যবসায়ীরা। শুক্রবার এই মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে ক্রেতাদের ভিড় নেই। অনেকটাই অলস সময় কাটাচ্ছেন বিক্রেতারা।

একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে গত ৬ জুন মৌচাক মার্কেট বন্ধের নির্দেশ দেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। এরপর মৌচাক মার্কেট বণিক সমিতির এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৭ জুন হাইকোর্টের আদেশ ছয় সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন চেম্বার বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার। তবে আদালত বলেছেন, দোকান খোলা রাখার দায়দায়িত্ব ও ঝুঁকি দোকানিদের নিতে হবে।

শুক্রবার বিকেলে কথা হয় মৌচাক মার্কেটের ব্যবসায়ী ‘সাথী ক্লথ স্টোরের’ মালিক ইকবাল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বেচাকেনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা না হয় ব্যবসার খাতিরে নিজেদের ঝুঁকিতে দোকান খোলা রাখলাম। কিন্তু কাস্টমার তো ঝুঁকির কথা শুনে মার্কেটে আসবে না। এবারের ঈদে আমাদের মার্কেটে কাস্টমার খুব কম। আগে এই সময় কাস্টমারের জন্য দম ফেলা যেত না।’

মৌচাক মার্কেটের অন্য এক ব্যবসায়ী ‘রাখী সুজের’ মালিক নুর নবী বলেন, ‘হাইকোর্টের রায় নিয়ে জনমনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ফলে ক্রেতা সাধারণের উপস্থিতি খুব কমে গেছে। তা ছাড়া মার্কেটের সামনের রাস্তার যে বেহাল দশা তা বর্ণনা করা কঠিন। এ কারণেও ক্রেতারা মার্কেটে আসতে চান না। এরপর আবার মার্কেটে গাড়ি পার্কিংয়ের কোনো ব্যবস্থা নেই। এ কারণেও এক শ্রেণির ক্রেতা মার্কেটে আসছে না।’

মৌচাক মার্কেটে সন্তানদের নিয়ে কেনাকাটা করতে এসেছেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মোফাজ্জেল হোসেন। তিনি বলেন, ‘ঢাকার অন্যান্য শপিংমলে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকলেও পুরাতন এই মার্কেটের আবস্থা পুরাতন আমলের মতোই রয়ে গেছে। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নেই বললেই চলে। এসি নাই, লিফট নাই। ভেতরে প্রচণ্ড গরম। তারপরও মার্কেটের নামের কারণে একবার ঘুরে যেতে এসেছি।’

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৭ মে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) মৌচাক মার্কেটের ভবন মালিককে চিঠি দেয়। এতে বলা হয়, প্রাচীন এ ভবনটি বহুল ব্যবহৃত এবং প্রতিনিয়ত হাজারো মানুষের সমাগম ঘটে। বর্তমানে ইমারতটি জীর্ণ ও দৃশ্যত ঝুঁকিপূর্ণ প্রতীয়মান হয়েছে। তাই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগ কর্তৃক পরীক্ষা-নীরিক্ষা পূর্বক কাঠামোগত উপযুক্ততার সনদ গ্রহণ করে চাওয়া তথ্যাদি এ দফতরে (রাজউক) দাখিল করার জন্য অনুরোধ করা হলো। সেই সঙ্গে ভবনটির কাঠামোগত উপযুক্ততা নিশ্চিত হয়ে ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হলো।

বুয়েটের দেওয়া সুপারিশ পাওয়ার পর গত ২ মে ভবন মালিককে আরেকটি চিঠি দেয় রাজউক। চিঠিতে ঝুঁকির কথা জানিয়ে ভবনটি সংস্কার করতে বলা হয়। পরে রাজউকের ওই চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে জেড কে লিমিডেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ভবন মালিক আশরাফ কামাল পাশা গত ২ জুন হাইকোর্টে রিট আবেদনটি করেন।



মন্তব্য চালু নেই