নিরাপত্তাহীনতায় পাকিস্তান হাইকমিশন

দূতাবাস, নিজেদের স্থাপনা এবং নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছে ঢাকাস্থ পাকিস্তান হাইকমিশন।

গত সপ্তাহে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়- হাইকমিশন ভবন, হাইকমিশনারের বাসভবন, দূতাবাসে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবার, এদেশে বসবাসকারী পাকিস্তানি নাগরিক এবং পাকিস্তানি স্থাপনার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হাইকমিশন।

গত বুধবার সাঈদীর রায়ের পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পাকিস্তান হাইকমিশন থেকে নিরাপত্তা চেয়ে পত্র দেয়া হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ সেপ্টেম্বর কূটনৈতিক পত্র নং- ইএসটিটি-১/৫০/২০১২-ভিওএল ২-এর মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রাচার প্রধানের কাছে একটি চিঠি পাঠায় পাকিস্তান দূতাবাস। ওই চিঠিতে পাকিস্তান এয়ারওয়েজের অফিস (পিআইএ), হাবিব ব্যাংক, সিটি স্কুল এবং বিকন হাউস স্কুলের নিরাপত্তা দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। এর ভিত্তিতে একই দিনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রাচার উপ-প্রধান (মিশন সার্ভিস) এসএম নাজমুল হাসানের স্বাক্ষরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপ-কমিশনার (চ্যান্সারি প্রটেকশন), উপ-কমিশনার (প্রটেকশন অ্যান্ড প্রটোকল), উপ-কমিশনার, গুলশান এবং উপ-কমিশনার, দক্ষিণ-এর কাছে ফ্যাক্স বার্তা পাঠানো হয়।

এছাড়া, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও পুলিশের আইজিসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানের কাছে ফ্যাক্স বার্তা পাঠানো হয়। বার্তায় পাকিস্তান দূতাবাসের চিঠির বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য অনুরোধ করা হয়।

কূটনৈতিক পত্রে গত ডিসেম্বর মাসে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার রায়ের সময় গণজাগরণ মঞ্চের পাকিস্তান হাইকমিশন ঘেরাও কর্মসূচির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে পাকিস্তান হাইকমিশনে যোগাযোগ করা হলে কোনো কর্মকর্তা এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি।

পুলিশের চ্যান্সারি প্রটেকশন বিভাগের উপ কমিশনার আতাউল কিবরিয়া এ বিষয়ে বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের চিঠি দেয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী পাকিস্তান হাইকমিশন এবং হাইকমিশনারসহ কর্মকর্তাদের বাসার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া পাকিস্তানি স্থাপনার যে নিরাপত্তা চাওয়া হয়েছে, তা পুলিশের গুলশান ক্রাইম বিভাগ থেকে দেয়া হচ্ছে।’

এর আগে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর করার প্রতিবাদে পাকিস্তানের পার্লামেন্টের জাতীয় পরিষদে ১৬ ডিসেম্বর একটি নিন্দা প্রস্তাব পাস হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে ক্ষমা চাওয়া এবং দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি ওঠে। গণজাগরণ মঞ্চসহ কয়েকটি সংগঠন ১৮ ডিসেম্বর ঢাকাস্থ পাকিস্তান হাইকমিশন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করতে গেলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এ দেশের জামায়াতের শীর্ষ নেতারা হত্যা, ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ করে। দীর্ঘদিন তারা দেশে বহাল তবিয়তে থাকলেও ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার শুরু হয়। ইতোমধ্যে একজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই