‘নিরাপত্তাকর্মীরা পান খায় আর গল্প করে, মনিটর দেখে না’

বাংলাদেশে বিমানবন্দরগুলোতে আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই – এই যুক্তিতে ব্রিটিশ সরকার বাংলাদেশ এবং ব্রিটেনের মধ্যে কার্গোবাহী সরাসরি বিমান চলাচল এখন সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে।কিন্তু নিরাপত্তার এ সমস্যাটা ঠিক কোথায় এবং তা কি কিছুদিনের প্রশিক্ষণ দিয়ে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব?

গত মাস দুয়েকের মধ্যে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর ব্যবহার করেছেন এমন যাত্রীদের কেউ কেউ বলেন, নানা যন্ত্রপাতি বসানো হলেও বিমানবন্দরের কর্মীরা নিরাপত্তার বিষয়টি বোঝেন না, বা এ নিয়ে তাদের মনোযোগ কম।

ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশী পলাশ রহমান এমনই একজন। তিনি বলছেন, ইউরোপে কোন বিমানবন্দরে প্রতিটি যাত্রীকে সর্বক্ষণ নজরে রাখা হয় বলে বলা হয়। কিন্তু এটা করা হয় প্রযুক্তির মাধ্যমে। পোশাকধারী নিরাপত্তাকর্মী অত দেখা যায় না। “কিন্তু বাংলাদেশের বিমানবন্দরে পোশাকি নিরাপত্তা কর্মী যাদের দেখা যায় – তারা খুব দায়সারাভাবে কাজ করে।”

“অনেক টাকাপয়সা খরচ করে যে যন্ত্র বসানো হয়েছে – তাতে আমার লাগেজ যখন স্ক্যান হচ্ছে, তখন এই নিরাপত্তা কর্মীরা হয়তো কলিগের সাথে গল্প করছেন, পান খাচ্ছেন, আমি দেখতে পাচ্ছি যে তিনি মনিটরের দিকে তাকাচ্ছেন না। জানতেও পারছেন না যে ব্যাগে কি যাচ্ছে। ”

উন্নয়নের কাজ এমাসের ৩১ তারিখের মধ্যেই ব্রিটিশ সরকারের দেয়া শর্ত অনুযায়ী পুরোটা শেষ করা সম্ভব হবে – একথা বলছেন বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। আজ ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশনার ও সেদেশের নিরাপত্তা বিষয়ক কর্মকর্তাদের সাথে এক বৈঠকের পর তিনি একথা জানান। ৩১শে মার্চের মধ্যে ব্রিটেনের দেওয়া শর্ত বাস্তবায়ন না হলে ঢাকা-লন্ডন সরাসরি যাত্রী বিমান বন্ধ হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।

কিন্তু এ লক্ষ্য কি অর্জন করা সম্ভব হবে? এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম বলছেন, “এ জন্য কর্মীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিতে হবে – কিন্তু প্রশিক্ষিত কর্মী তৈরি করতে সময়ের প্রয়োজন। এটা কয়েকদিনের প্রশিক্ষণে সম্ভব বলে আমার মনে হয় না।” “তা ছাড়া গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংএ যারা কাজ করে তারা স্থায়ী কর্মচারী নয়, ফলে তাদের কমিটমেন্টেরও অভাব আছে”।

বিমান বন্দরের লাগেজ পরীক্ষায় দুর্বলতা, মালপত্র বিমানে ওঠানোর প্রক্রিয়া, বিমানবন্দরের কিছু এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও নজরদারির অভাব – এই ধরণের বেশ কিছু সমস্যার কথা উল্লেখ করে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে একটি চিঠিও দিয়েছেন।

তবে বিমানচলাচল মন্ত্রী রাশেদ খান বলছেন, প্রশিক্ষণ চলছে, এবং তাতে প্রশিক্ষণার্থীরা ভালো নম্বর পাচ্ছে। “এছাড়া রেগুলেটরি ক্সেত্রে যে দুর্বলতার কথা বলা হয়েছে – সেটাও আমরা দেখছি।”
তিনি বলেন, বিমানবন্দরের কর্মীদের জন্য বিশেষ পাসের ব্যবস্থা হচ্ছে – যা থাকলে বিমানবন্দরের যেখানে যার ঢোকার প্রয়োজন নেই – সেখানে যাওয়া বন্ধ করা যাবে।

সূত্র: বিবিসি



মন্তব্য চালু নেই