নিজের অজান্তেই যে ৫ টি বিষাক্ত জিনিস শিশুকে দিচ্ছেন

স্বাভাবিকভাবেই সকল পিতামাতাই চান তার সন্তানকে সবচেয়ে ভালো জিনিসটা দিতে। কিন্তু এমন কিছু খাবারে এমন কিছু ক্ষতিকর জিনিস আছে যা আপনার অজান্তেই আপনি আপনার শিশুকে দিচ্ছেন। তাই আপনার সেই ক্ষতিকর উপাদানগুলোর বিষয়ে জানা প্রয়োজন। চলুন তাহলে এমন কিছু বিষাক্ত উপাদানের কথাই জেনে নিই যা শিশুর খাদ্যে থাকতে পারে।

। ব্রোমিনেটেড ভেজিটেবল অয়েল

আমেরিকার ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর সায়েন্স ইন পাবলিক ইন্টারেস্ট এর জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী, MSPH লিসা লেফারটস বলেন, যারা প্রচুর মাত্রায় ব্রোমিনেটেড ভেজিটেবল অয়েল (BVO) সমৃদ্ধ সোডা পান করেন তাদের ব্রোমিনের বিষাক্ততা হতে পারে। এই উপাদানটির কারণে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ত্বক, স্নায়ু এবং স্মৃতিশক্তির সমস্যাও হতে পারে। লেফারটস বলেন, ‘এর অল্প পরিমাণের প্রভাব এখনো অপরিষ্কার, কিন্তু মূল বিষয় হচ্ছে BVO শরীরের ফ্যাটের মধ্যে এবং মস্তিষ্ক, যকৃৎ এবং অন্যান্য অঙ্গেও তার অবশিষ্টাংশ রেখে যায়’। যদিও জাপান এবং ইউরোপে এটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ভোক্তাদের চাপের কারণে পেপসিকো এবং কোকাকোলা তাদের সকল ধরনের পানীয় থেকে এটি বাদ দেয়ার জন্য রাজি হয়েছেন, কিন্তু মাউন্টেন ডিউ এবং ডায়েট মাউন্টেন ডিউতে এটি এখনো পাওয়া যায়’। তাই আপনার সন্তানকে সোডা, স্পোর্টস ড্রিংক এবং ফলের পানীয় পান করতে দেয়ার আগে লেবেলটি ভালো করে পরে নিন।

২। কীটনাশক

শিশুরা খেতে পছন্দ করে এমন অনেক খাবারেই পোকা দমনের জন্য কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। ন্যাশনাল রিসোর্সেস ডিফেন্স কাউন্সিল (NRDC) এর জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী, MSPH মিরিয়াম রটকিন এলমান বলেন, ‘খুব বিষাক্ত কীটনাশক ক্লোরোপাইরিফস নিয়ে আমি কাজ করেছি’। এই পরীক্ষায় আপেল, বেরি, তরমুজ (এমনকি এর ভেতরেও), কমলা, কলা এবং শিশুদের খাবার টেবিলে যে ফলগুলো থাকে সেগুলো নিয়ে করা হয়। বিজ্ঞান দেখিয়েছে যে, এই কীটনাশক শিশুর উন্নয়নশীল মস্তিষ্কের জন্য বিষাক্ত। তিনি বলেন, বিভিন্ন গবেষণায় কীটনাশক এর সাথে শিশুর শিক্ষার অসামর্থ্যতা এবং আচরণগত সমস্যার সাথে সম্পর্কের বিষয়টি প্রকাশ করা হয়, কারণ উন্নয়নশীল মস্তিষ্ক খুবই স্পর্শকাতর হয়। ফল ধোয়ার পরেও থেকে যেতে পারে কীটনাশকের অবশিষ্টাংশ। তাই আপনার সন্তানকে অরগানিক ফল খাওয়ানোর চেষ্টা করুন।

৩। আর্সেনিক

আর্সেনিক বিষের কথা হয়তো আপনি শুনেছেন কিন্তু এটি আপনার শিশুর খাদ্যে (ভাত) প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। লেফারটস বলেন, আর্সেনিকের অজৈব গঠনটি যা হিউম্যান কার্সিনোজেন নামে পরিচিত এবং এটি খুবই শক্তিশালী। এটি শিশুর শেখার ক্ষমতার উপর প্রভাব ফেলে। অন্যান্য শস্যের তুলনায় চাল খুব সহজেই মাটি এবং পানি থেকে আর্সেনিক শোষণ করে নিতে পারে। লেফারটস পরামর্শ দেন, আপনার শিশুকে বিভিন্ন ধরনের শস্য এবং অন্যান্য খাবার দিন যাতে তার বেশি বিষাক্ত খাবার খাওয়ার পরিমাণ কমে।

৪। থ্যালেট

প্লাস্টিকের পাত্রে থাকে এই বিষাক্ত উপাদানটি। রটকিন এলমান বলেন, এন্ডোক্রাইন গ্রন্থির কাজে বাঁধার সৃষ্টি করে এই রাসায়নিকটি। তাই ভ্রূণ এবং নবজাতকের উন্নয়ন ও বৃদ্ধিতে সাহায্য করে যে হরমোন তার কাজে এবং প্রজনন ও মস্তিষ্কের উন্নয়নে বাঁধার সৃষ্টি করে থ্যালেট। প্লাস্টিকের পাত্রে খাদ্য সংরক্ষণ করা এড়িয়ে যাওয়া উচিৎ বলে পরামর্শ দেন তিনি।

৫। BPA

Bisphenol – A (BPA) এর কথা নিশ্চয়ই শুনেছেন আপনি। এটি বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিকে পাওয়া যায়। প্লাস্টিক ছাড়াও টিনজাত খাবারেও এটি পাওয়া যায়। ফেনল ক্যান্সার, আচরণগত সমস্যা, পুং ও স্ত্রী প্রজজনতন্ত্রের ক্ষতি করে এবং মস্তিষ্কের উন্নয়নেও প্রভাব ফেলে।

এছাড়াও খাবারে দেয়া কৃত্রিম রঙ, প্যাকেটজাত খাবার ও মাইক্রোওয়েভ পপকর্ণ ব্যাগ, কৃত্রিম মিষ্টিকারক অ্যাস্পারটেম, মাংস ও দুধের অ্যান্টিবায়োটিক, প্রক্রিয়াজাত মাংস এগুলোও শিশুর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

সূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট



মন্তব্য চালু নেই