নিজের অজান্তেই আপনি কথপোকথনে যে ভুলটি করছেন

আপাত দেখতে ছোট কথপোকথনের এই ভুলটি যখন অন্যরা করে তখন আপনার মাথা খারাপ হয়ে যায়। কিন্তু আপনি নিজেও একই ভুল করার অপরাধে অপরাধী।

কেউ আপনাকে সর্বশেষ কবে কোনো প্রশ্ন করেছেন সে সময়ের কথাটি স্মরণ করুন। আপনি হয়তো সরল একটি উত্তরই দেবেন, “আমি জানি না”।
অবশ্যই একটি আদর্শ পরিস্থিতিতে আপনি হয়তো ওই তিনটি শব্দ ছাড়াও আরেকটু বেশি চিন্তিত উত্তর দেবেন। কিন্তু ওই ‍মুহূর্তে ওটাই ছিল সেরা উত্তর। আপনার কাছে নায্যভাবেই এর চেয়ে ভালো উত্তর দেওয়ার মতো কিছু ছিল না।
এখন, আপনার কথপোকথনের অংশীদার কি সরলভাবেই আপনার উত্তর গ্রহণ করেছে এবং সামনে এগিয়ে গেছে? নাকি তিনি এর পরেও আরো কিছু প্রশ্ন করেছেন যাতে আপনার কাছ থেকে একটি “সত্যিকার” উত্তর খুঁজে বের করা যায়। যদিও আপনি ইতিমধ্যেই পরিষ্কার করেছেন, আপনার কাছে আর বাড়তি কোনো তথ্য নেই?
যদি এমনটা ঘটে থাকে তাহলে জানবেন এ ধরনের যোগাযোগের সদাচার লঙ্ঘনের অভিজ্ঞতা আপনি একাই লাভ করেননি। আমাদের প্রায় সকলেই নিজের অজান্তেই এবং না বুঝেই এই ধরনের সদাচার লঙ্ঘন করি।
প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে এরপর উত্তরটি পুরোপুরি অগ্রাহ্য করা একটি কথপোকথন ফাঁদ। আমাদের সকলেই মাঝেমধ্যে এই ফাঁদে পড়ি। এটা একটু অদ্ভুতও বটে, তাই না? মোটের ওপর সকলেই প্রশ্ন করেন একটি উত্তর পাওয়ার জন্য। সুতরাং কেন কেউ কোনো প্রশ্ন জিজ্ঞেস করার পরপরই ফের কিছু জিজ্ঞেস করেন এবং উত্তরটি শুনতে ব্যর্থ হন? এমন আচরণ খুবই অনুৎপাদনশীল।
কিন্তু আপনি প্রায়ই এটা ঘটতে দেখবেন। এমনকি একটি পেশাদার পরিবেশেও আপনি এমনটা ঘটতে দেখবেন।
কেউ হয়তো জিজ্ঞেস করল, কেমন আছেন? এরপর শুধু নিজের কথাই বলে চললেন এমনকি আপনার প্রকৃত উত্তর শোনার জন্যও অপেক্ষা করলেন না।
এমনটা কেন ঘটে

এটা ঘটে সাধারণত আমরা প্রতিদিনই যে চিত্তবিক্ষেপের অভিজ্ঞতা লাভ করি সে কারণে।
আজকাল এই বিষয়টি অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে, আমাদের সকলেই একটু বেশিই উদ্দীপিত। আমাদের মস্তিষ্ক প্রায়ই ইন্টারনেট ব্রাউজার উইন্ডোগুলোর সদৃশ হয়। একই সময়ে অসংখ্য ট্যাব খোলা থাকে আমাদের মস্তিষ্কে।
নিজেদের ফোন নোটিফিকেশনগুলো স্ক্রল করার সময় আমরা শুনি। যখন আমরা ইমেইল পড়ি এবং আমাদের ইনবক্স পরিষ্কার করি তখনও আমরা শুনি। যখন আমরা মনে মনে মুদিতালিকা করি তখনও আমরা শুনি।
এমনকি একইভাবে কথপোকথনের সময় যখন আমরা প্রশ্ন করি তখনও আমরা আসলে সক্রিয়ভাবে এর উত্তরটা শুনি না। ফলে এতে বিস্ময়ের কিছুই নেই যে, লোকে যা শুনেন তার মাত্র ১৭-৩৫ শতাংশই তারা মনে রাখতে পারেন।

এর সমাধান কী?
চিত্তের বিক্ষিপ্ততার কারণগুলো সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং সেগুলো দূর করে যার সঙ্গে কথপোকথনে লিপ্ত হচ্ছেন তার প্রতি পূর্ণ মনোযোগ দেওয়া।
কথা বলার সময় আপনার ফোনটি বন্ধ রাখুন। কেউ কথা বলার সময় আপনার কম্পিউটার বা নোটগুলো থেকে চোখ তুলে তাকান। পরের দিন কী করবেন তা নিয়ে চিন্তিত না হয়ে বরং আলোচনায় পূর্ণ মনোযোগ দিন। এর ফলাফল দেখে আপনি বিস্মিত হবেন।
আর আপনি যদি আপনার জিজ্ঞেস করা কোনো প্রশ্নের উত্তর শুনতে ব্যর্থ হন তাহলে তাৎক্ষণিকভাবেই ক্ষমা চেয়ে পুনরায় প্রশ্নটি করুন।
সূত্র: আইএনসি



মন্তব্য চালু নেই