নিজেই ড্রেন পরিষ্কার করলেন এডিসি

মানুষের সেবায় সব সময় এগিয়ে থাকা নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) গাউছুল আজম এবার মানুষের সেবায় নিজেই নেমে পড়লেন ড্রেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার কাজে যিনি এর আগে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পালনের সময় থেকেই নারায়ণগঞ্জে বেশ আলোচিত। সুবিধা বঞ্চিত ও অবহেলিত মানুষের সুখে, দুঃখে, সামাজিক কর্মকাণ্ডে, মানুষের সেবায়, মাদক-সন্ত্রাস নির্মূল কাজসহ বিভিন্ন কাজে করে বেশ সুনাম অর্জন করেছেন তিনি।

গত ১৬ ডিসেম্বর রাতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড পাশে চাঁদমারী বস্তি এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৫৮টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এর পর থেকে দিনের দু’বেলা দু’মুঠো ডাল ভাত খেয়ে দিনযাপন করছেন ওইসব ভুক্তভোগী পরিবারগুলো শতাধিক সুবিধা বঞ্চিত মানুষ। তবে স্থানীদের অভিযোগ হাতের কাছে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা বা জলাশয় না থাকায় আগুন দ্রুত নেভানো সম্ভব হয়নি। এছাড়াও একটি ঘর অন্যটির সঙ্গে লেগে থাকায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়েছে।

এলাকাবাসী জানান, সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে যাতে আর কখন এমন ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা না ঘটে এমন কিছু বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন এডিসি গাউছুল আজম। তার মধ্যে তিনি প্রথমে উদ্যোগ নেন যাতে কখনও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে দ্রুত পানির ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয় তারা। যাতে করে অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে সঙ্গে কাছ থেকে পানি এনে দ্রুত নিভিয়ে ফেলতে পারে।

তারই ধারাবাহিকতায় রোববার (২০ ডিসেম্বর) বিকেল থেকে চাঁদমারী বস্তির এলাকার সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের নিয়ে ড্রেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা শুরু করেন এডিসি গাউছুল আজম। যেখানে তিনি নিজেও ড্রেন পরিষ্কার কাজে অংশগ্রহণ করেন। নিজ হাতে ড্রেনের ময়লা পরিষ্কার করেন তিনি।

এ বিষয়ে এডিসি গাউছুল আজম জানান, ‘অগ্নিকাণ্ডের সময় হাতের কাছে পানি পাওয়া গেলে ফায়ার ব্রিগেড বা নিজেরা আগুন নিভাতে পারবেন। এ উপলব্দি থেকেই চাঁদমারী বস্তির অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি পরিবার এবং বস্তিবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বস্তি ও এর আশেপাশের ডোবা নালা নর্দমা ড্রেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার উদ্যোগ নিয়েছেন। এ কাজে তাদের উৎসাহ দিলেন।

এর আগেও তিনি বিভিন্ন সময় নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পবিত্রতা রক্ষার্থে তরুণ যুবকদের নিয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কমিটি ঘটন করেন। তখনও তিনি তাদের সঙ্গে নিজে ঝাড়ু নিয়ে শহীদ মিনারের অঙ্গিনা পরিষ্কার করেন।

প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জের আলোচিত প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে বার বার গাউছুল আজমের নাম উঠে আসে। এখন তিনি নারায়ণগঞ্জের অনেক অপরাধীদের কাছে আতংকের নাম। যদিও এডিসি হওয়ার কারণে এখন তিনি আগের মতো অভিযান করছেন না। তিনি শুধু অপরাধ দমনই নয়, সমাজসেবামূলক কাজে দেখা গেছে তার উদ্যোগে নানা আয়োজন। শিশু ও পঙ্গুদের হুইল চেয়ার বিতরণ, প্রতিবন্ধীদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, উপজেলায় কারুকুঞ্জ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে সেখানে বেকার নারীদের কারুকাজ শেখানো। ছিন্নমূল ৫২ শিশুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি। অভাবে হকার বনে যাওয়া বস্তির ৫ বছরের শিশু ছেলে সাইফুলকে স্কুলে ভর্তি করে দেয়াসহ অসংখ্য সমাজসেবামূলক কাজ করেছেন।



মন্তব্য চালু নেই