নিজামীর শুনানিতে প্রধান বিচারপতি-খন্দকার মাহবুব ‘যুক্তিতর্ক’

জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর আপিল শুনানিতে মুখোমুখি যুক্তিতর্ক করলেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (এসকে সিনহা) এবং আসামিপক্ষের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন।

বুধবার যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নিজামীর আপিল শুনানি চলাকালে খন্দকার মাহবুবের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘রাজাকাররা সমর্থন না করলে সিন্ধু, পাঞ্জাব, বেলুচিস্তান থেকে এসে পাকিস্তানি সেনারা এ দেশে নয় মাস থাকতে পারতো না। তারা থাকতে পারতো তিনমাস।’

প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চে নিজামীর আপিল শুনানির সময় এ যুক্তি-তর্ক চলে।

এসময় খন্দকার মাহবুব বলার চেষ্টা করেন, নিজামীকে যে অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়েছে সে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে ইসলামী ছাত্রসংঘ নিখিল পাকিস্তানের সভাপতি হিসেবে তার দায়িত্ব গ্রহণের আগে, বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনার পর। অর্থাৎ বুদ্ধিজীবী হত্যার সময় নিজামী দায়িত্বে ছিলেন না।

তখন প্রধান বিচারপতি নিজামীর দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘একাত্তর সালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছিল না। এরাই (নিজামীরা) তাদেরকে সহযোগিতা করেছেন, মিলিটারিদের।’

পাল্টা যুক্তি দিয়ে খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘এখানে উল্লেখিত ঘটনার দিন, ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি (নিজামী) বদর বাহিনীতে ছিলেন না।’

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘যুদ্ধের শেষে যদি এ কথা বলেন, তাহলে কি প্রমাণ হচ্ছে না যে, নিজামী লিডার ছিলেন? আপনি টোকিও ট্রায়াল দেখেন।’

তখন খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘টোকিও ট্রায়াল দেখাবেন না। তাহলে পাক সেনাদের তো বিচাররের আওতায় আনছেন না।’

প্রধান বিচারপতি ফের বলেন, ‘আজকে তো পাকিস্তান এটা অস্বীকার করে। মাহবুব, কোনো আর্মি মুভ করতো না যদি পুলিশ লিড না দিতো।’

মাহবুব বলেন, ‘নিজামীর মতো ইয়াংরা পথ দেখালো আর আর্মিরা সেখানে গেলো এটা ইমপসিবল।’

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘নিজামী একটা বাহিনীর প্রধান ছিলেন। ছাত্রসংঘের লিডার ছিলেন।’

এসময় প্রধান বিচারপতি সে সময়ের একটা পত্রিকার প্রতিবেদনের শিরোনাম পড়ে শুনিয়ে বলেন, ‘জেহাদে ঝাঁপিয়ে পড়ো রক্ত দাও- এখানো আর বাকি থাকলো কী?’

মাহবুব আর যুক্তির দিকে না গিয়ে বলেন, ‘এটা এখন একটা ফাঁসির দেশ হয়ে গেছে।’

প্রধান বিচারপতি আবারো পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলেন, ‘এটা বলবেন না। সৌদি আরব, চীনে কী হচ্ছে? আমরা একটি দিলেই হৈচৈ পড়ে যায়। মাহবুব, ওদের টাকা আছে স্ট্যান্ড আছে। সৌদিতে যা হচ্ছে আমাদের দেশে তার এক পার্সেন্টও হচ্ছে না।’



মন্তব্য চালু নেই