নারায়ণগঞ্জে একটি অবৈধ গরুর হাটের গল্প এবং মেয়র আইভী

নারায়ণগঞ্জ: তিন দফায় দরপত্র আহবান করেও নারায়ণগঞ্জ শহরের বরফকল হাটের কাঙ্খিত মূল্য না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে হাটের ইজারা বাতিল করেছিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক)।
নগর কর্তৃপক্ষ হাটটি বাতিল করলেও বরফকল মাঠে বসেছে বিশাল গরুর হাট। চলছে পশু বেচাকেনা।

নারায়ণগঞ্জের একজন প্রভাশালী সংসদ সদস্যের ভাতিজার ছত্রছায়ায় স্থানীয় যুবলীগ নেতা চঞ্চল মাহমুদের নেতৃত্বে একদল ক্যাডার এ হাট বসিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে হাটে প্রকাশ্যে হাসিল আদায় না হলেও পশু বিক্রি হলে ভ্রাম্যমাণ হাসিল আদায়কারীরা ক্রেতা ও বিক্রেতার সামনে উপস্থিত হয়ে হাসিল আদায় করছে। এমনই চিত্র দেখা গেছে শহরের বরফকল পশুর হাটে।

এ অবৈধ হাটের কারণে ৩২ লাখ টাকার সরকারি রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হয়েছে নাসিক। তবে যথাযথ মূল্য না পেয়ে হাটটি বাতিল করার পর এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ প্রশাসন এবং স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সিটি মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভী।

প্রথম দফায় গত ১০ সেপ্টম্বর প্রথম দফা টেন্ডারে এই হাটের সর্বোচ্চ দর উঠে ১০ লাখ টাকা। দ্বিতীয় দফায় গত ১৭ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় দফায় টেন্ডারে দর উঠে ১০ লাখ ১০ হাজার টাকা। ২১ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার তৃতীয় দফার টেন্ডারে দর পতন ঘটে। অপ্রত্যাশীতভাবে হাটের জন্য দরপত্র জমা দেওয়া হয় মাত্র ২ লাখ টাকা!

প্রতিটি টেন্ডারই জমা দেন স্থানীয় যুবলীগ নেতা চঞ্চল মাহমুদ। তবে তার পেছনে আরও অনেকেই রয়েছেন বলে শোনা যায়। তবে তারা প্রকাশ্যে আসেন না। সবাই মিলে সিন্ডিকেট করেই লাভজনক এই হাটটির এই অবস্থা করেছেন বলে সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য হাটে গিয়েও যুবলীগ নেতা চঞ্চল মাহমুদকে পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশ সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করতে দেখা গেছে ।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, গত বছর (২০১৪ সালে) হাটটির ইজারা ছিল ৩২ লাখ ২১ হাজার ৫শ’ টাকা। ২০১৩ সালে ছিল ৩২ লাখ ১২ হাজার ৩শ’ টাকা এবং ২০১২ সালে ছিল ৩১ লাখ ৩৫ হাজার ৭৫০ টাকা। তবে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই বরফকল হাটে বসে যায় পশুর হাট।

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, তৃতীয় দফায়ও হাটের দর গত বছরের সমান না পাওয়ায় বাধ্য হয়েই হাটটি বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। তবে খাস কালেকশন করা যেত। কিন্তু তাতে সংঘর্ষ বা হামলার ঘটনা ঘটতে পারে ভেবে নাসিক কর্তৃপক্ষ ওই পথে এগোয়নি। বাতিল ঘোষিত হাটের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেন, এ ধরণের কোন চিঠি তার কার্যালয়ে এসেছে কিনা তা তিনি জানেন না। চিঠির বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখছেন।



মন্তব্য চালু নেই