নাম পেল চুরি যাওয়া শিশুটি

রাজশাহীতে জন্মগ্রহণের পর চুরি হয়ে যাওয়া সেই নবজাতক শিশুটির নাম রাখা হয়েছে ফাহিম আজমল। শুক্রবার নগরীর উপকণ্ঠ চরশ্যামপুরে এ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন আয়োজন করা হয়। এতে পুলিশ-সাংবাদিক ছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন অন্তত ২০০ জন।

শিশুটির মা মুক্তি খাতুন বলেন, পুলিশ ও সাংবাদিকদের সহায়তায় আমি আমার বুকের মানিককে ফিরে পেয়েছি। আমাদের কাছে এই অনুষ্ঠানটাই অনেক ধুমধামের। আপনারা এসেছেন, খুব খুশি হয়েছি। আমার ছেলেকে দোয়া করবেন। ছেলেকে আমার কোরআনের হাফেজ বানাবো।

মুক্তির মামা শহিদুল ইসলাম জানান, বাচ্চাটির আকিকা দিতে কয়েকদিন আগে সাড়ে সাত হাজার টাকায় হাট থেকে একটি ছাগল কিনে আনা হয়। শুক্রবার সকালে সেটি আকিকা দেয়া হয়। তখন বাচ্চাটির নাম রাখা হয় ফাহিম আজমল। এর অর্থ অতিসুন্দর ও বুদ্ধিমান। আকিকা দেয়ার আগ মুহূর্তে তিনি নামটি প্রকাশ করেন। জন্মের ২১ দিন পর শিশুটির নাম রাখা হলো।

এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি নগরীর নওদাপাড়া নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে জন্মের মাত্র ৬ ঘণ্টা পর বাচ্চাটি চুরি হয়ে যায়। এর ৮ দিনের মাথায় নগরীর বাসার রোড এলাকার শাহিন আকতার শুভ্রা নামে এক নারীর ভাড়া বাসা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ। শুভ্রা নগরীর একটি বেরসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ছিলেন। বাচ্চা চুরির অভিযোগে গ্রেফতার হওয়ার পর কর্তৃপক্ষ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। শুভ্রার স্বামী আক্তারুজ্জামান রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক।

ফাহিম আজমলকে চুরি করে নিয়ে যাওয়ার দিনই নানি রোজিনা থানায় মামলা করেছিলেন। ওই মামলায় শুভ্রা এখন কারাগারে। রিমান্ডে শুভ্রা পুলিশকে জানিয়েছেন, তার পাঁচ বছরের একটি মেয়ে আছে। কিন্তু ছেলে সন্তানের জন্য স্বামীর পক্ষ থেকে প্রচণ্ড চাপ ছিল। তাই তিনি বাচ্চাটি চুরি করেছিলেন। বাচ্চা চুরির সঙ্গে এ মামলায় গ্রেফতার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাঠকর্মী তহুরা খাতুনের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলেও তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগরীর শাহমখদুম থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মতিয়ার রহমান জানান, বাচ্চাটি নিয়ে যেন কোনো বিতর্ক না থাকে এবং আদালতে বিচারকাজ যেন স্বচ্ছভাবে শেষ হয়- সে জন্য বাচ্চাটির ডিএনএ পরীক্ষা করা হচ্ছে। গত ১ ফেব্রুয়ারী বাচ্চাটিসহ তার মা ও বাবার রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তবে সেখান থেকে প্রতিবেদন এখনও আসেনি। যত দ্রুত সম্ভব মামলাটির অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হবে বলেও জানান তিনি।



মন্তব্য চালু নেই