নানা কর্মসূচিতে পালিত হচ্ছে বেদনাবিধূর ‘পিলখানা হত্যা দিবস’

বেদনাবিধূর ‘পিলখানা হত্যা দিবস’ বুধবার। নানা কর্মসূচির মাধ্যমে পালিত হচ্ছে এ দিবস। সরকার বিডিআর বিদ্রোহের দিনকে ‘পিলখানা হত্যা দিবস’ হিসেবে প্রতি বছর পালন করছে। দিবসটি পালন উপলক্ষে পক্ষ এ বছরও বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকার।

বিডিআর বিদ্রোহের কর্মসূচি অনুযায়ী শহীদ ব্যক্তিবর্গের রুহের মাগফিরাতের উদ্দেশ্যে পিলখানাসহ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর সকল রিজিয়ন, সেক্টর ও ইউনিটের ব্যবস্থাপনায় বুধবার বাদ ফজর খতমে কোরআন, বিজিবির সকল মসজিদ এবং বিওপি পর্যায়ে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় সকাল ৯টায় বনানী সামরিক কবরস্থানে রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর প্রতিনিধি, তিন বাহিনীর প্রধান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবং বিজিবি মহাপরিচালক শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

দিবসটি উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিও শহীদ সেনাকর্মকতাদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে। সকাল ১১টার দিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক সেনাবাহিনী প্রধান লে.জে.(অব.) মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বনানীর সামরিক কবরস্থানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক সেনাকর্মকর্তা মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, চেয়ারপারসনের প্রধান নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর, মেজর (অব.) মিজানসহ সাবেক উচ্চ পদস্থ সেনা কর্মকর্তা ও দলীয় নেতাকর্মী।

এদিকে, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় পিলখানায় বীরউত্তম ফজলুর রহমান খন্দকার মিলনায়তনে শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, বিজিবি মহাপরিচালক, শহীদ ব্যক্তিবর্গের নিকটাত্মীয়, পিলখানায় কর্মরত অফিসার, জেসিও, অন্যান্য পদবির সৈনিক এবং বেসামরিক কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করবেন।

প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দফতরে ঘটে মর্মান্তিক নৃশংস হত্যাকাণ্ড। ওই দিন দরবার হলে চলমান বার্ষিক দরবারে একদল বিদ্রোহী বিডিআর সৈনিক ঢুকে পড়ে। এদের মধ্যে একজন বিডিআর মহাপরিচালকের বুকে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে। এরপরই ঘটে যায় ইতিহাসের সেই জঘন্যতম নৃশংস ঘটনা। বিডিআরের বিদ্রোহী সৈনিকরা সেনা কর্মকর্তাদের ওপর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারা নির্বিচারে সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করে। তাদের পরিবারকে জিম্মি করে। পুরো পিলখানায় তখন এক ভীতিকর বীভৎস ঘটনার সৃষ্টি হয়।

এ সময় বিদ্রোহীরা পিলখানার চারটি প্রবেশ গেট নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আশে-পাশের এলাকায় এলাপাথারি গুলি ছুঁড়তে থাকে। গুলিতে একে একে লুটিয়ে পড়ে মেধাবী সেনা কর্মকর্তারা। ঘটনার ৩৬ ঘণ্টা পর এ বিদ্রোহের অবসান হয়। পিলখানা পরিণত হয় এক রক্তাক্ত প্রান্তরে।

এরপর ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় আবিষ্কৃত হয় গণকবর। গণকবর থেকে উদ্ধার হয় সেনা কর্মকর্তাদের লাশ। লাশ আর পিলখানার ধ্বংসযজ্ঞ দেখে সারাদেশের মানুষ হতবাক হয়ে যায়।

৩৬ ঘণ্টার এ হত্যাযজ্ঞে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা, একজন সৈনিক, দু’জন সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী, ৯ জন বিডিআর সদস্য ও পাঁচজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হন।

https://www.youtube.com/watch?v=MkPwhMIV0Wk



মন্তব্য চালু নেই