নতুন সংসার সাজাতে জেনে রাখুন কিছু টিপস

জীবনের প্রয়োজনে শহুরে অল্প জায়গার ফ্ল্যাটবাড়িতে নিজেদের জায়গা করে নিতে হয়। ঘরগুলো খুব ছোট হওয়ার কারণে নিত্য প্রয়োজনীয় সব আসবাব রাখার জায়গা ঠিকমতো হয় না। আবার যারা নতুন সংসার শুরু করেন, তাদের পক্ষেও বাজেট স্বল্পতার কারণে একসঙ্গে প্রয়োজনীয় সব আসবাব কেনা সম্ভব হয় না। কিন্তু বসার জন্য সোফা বা চেয়ার, শোয়ার জন্য খাট, খাওয়া বা পড়ার জন্য টেবিলের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু আসবাবের তো দরকার হয়-ই। সে ক্ষেত্রে কী করা যাবে? কোনো চিন্তা নেই, ঘর বুঝে আসবাব ছাড়াও খুব কম খরচেই করা যেতে পারে শোয়া, খাওয়া ও বসার আয়োজন। শুধু প্রয়োজন একটু সঠিক চিন্তা ও সৃজনশীল একটি মন।

বসার ঘর

ঘর সাজানোর বিষয়টি চিন্তা করলে প্রথমেই যে ঘরটার কথা মাথায় আসে সেটা হলো বসার ঘর। বাড়িতে অতিথি এলে প্রথমে এ ঘরেই তাকে বসানো হয়। বসার ঘর মানেই সোফা, ডিভান, চেয়ার, টেবিলসহ ছোটখাটো সব আসবাব। কিন্তু এসব চিরচেনা আসবাবের বদলেও শুধু মেঝেতেই করা যেতে পারে বসার সুন্দর পরিপাটি ব্যবস্থা। সে ক্ষেত্রে সোফার বদলে মেঝেতে ফোম বসিয়ে বা মাদুর, শতরঞ্জি পেতে তার ওপর বড় কুশন সাজিয়ে দেয়া যেতে পারে। তার সামনেই পেতে দিতে হবে একটা রঙিন শতরঞ্জি। এ শতরঞ্জির ওপর একটা খুব ফ্ল্যাট আকৃতির কাঠের টেবিল বা পিঁড়ি পেতে বানানো যেতে পারে সেন্টার টেবিল।

এছাড়াও একটু বড় স্কয়ার বা রাউন্ড শেপের ফ্ল্যাট আকৃতির সেন্টার টেবিল বসিয়ে তার চারদিকে বড় বড় কুশন বিছিয়ে দিতে হবে। কুশন কভারগুলো খুব রঙিন ও নকশাদার হতে হবে। সে ক্ষেত্রে ব্লক-বাটিক, নকশিকাঁথা কাজের কভার হতে পারে। মোটা পাহাড়ি তাঁতের কাপড় কভার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে যে ধরনের বসার আয়োজনই করা হোক না কেন, সেন্টার টেবিলের ওপর একগুচ্ছ তাজা ফুল বা বড় ফ্ল্যাট আকৃতির একটা ক্রিস্টাল বোলে পানি দিয়ে ফুলের পাপড়ি বা ক্যান্ডেল ভাসিয়ে দিলে পুরো ঘরের আবহটাই বদলে যাবে। আর চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখতে হবে কিছু মাটির শোপিস, টেবিল ল্যাম্প ও ছোট ছোট সজীব গাছ। তখন এ ঘরটিই তখন হয়ে উঠবে নান্দনিক।

খাবার ঘর

একইভাবে খাবার ঘরের মাঝখানেও একটা ফ্ল্যাট আকৃতির নিচু টেবিল বা উচু টেবিল বসিয়ে দিতে পারেন। তার চারপাশে ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে বড় বড় পিঁড়ি, কুশন। বড় টেবিলের জন্য চেয়ার। পিঁড়ির ওপর পাতলা ফোমের রঙিন কাপড়ে মোড়া গদি অথবা কুশনের কভারও রঙিন নকশাদার হলে ভালো লাগবে। আর টেবিলের ওপর অবশ্যই একগুচ্ছ তাজা ফুল রাখতে হবে।

শোয়ার ঘর

খাট ছাড়া শোয়ার ঘর যেন ভাবাই যায় না। শোয়ার ঘর মানেই নানা ম্যাটেরিয়ালের তৈরি খাট থাকতে হবে এমনটাই ধারণা সবার। কিন্তু খাটের বদলে শুধু মেঝেতেই শোয়ার আয়োজন অনেকেই হয়তো ভাবতে পারবেন না। কিন্তু শোয়ার ঘরেও খাটের বদলে ম্যাট্রেস বসিয়ে তার ওপরে শোয়ার আয়োজন করা যেতে পারে খুব সহজেই। তবে ম্যাট্রেসটি সুন্দর চাদর দিয়ে মুড়িয়ে এর ওপর অনেকগুলো ছোট রঙিন কুশন ছড়িয়ে দিতে হবে। ঘুমের সময় অনেকেরই পড়ার অভ্যাস আছে। তাই জায়গা বুঝে ম্যাট্রেসের দুই পাশে বা একপাশে সমান উচ্চতার পিঁড়ি পেতে তার ওপর টেবিল ল্যাম্প রাখতে হবে। একপাশে দেয়ালের ধারঘেঁষে ছোট একটা শেলফে কিছু বই রাখা যেতে পারে। জায়গা বুঝে ম্যাট্রেসের পাশে বা পায়ের কাছে একটা শতরঞ্জি বিছিয়ে দিলে ঘরটি শোয়ার জন্য পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে।

মেঝেতে আয়োজনের ক্ষেত্রে দেশীয় পণ্যের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ দেশীয় পণ্য যেমন নান্দনিক, তেমনি সহজলভ্য। বিভিন্ন ঘরে মেঝের আয়োজন নিয়ে এখানে যে পরামর্শগুলো দেওয়া হলো সে জন্য কিন্তু খুব বেশি টাকা-পয়সা খরচ করার দরকার নেই। কম দামের মধ্যে হাতের নাগালেই পাওয়া যাবে সব জিনিসপত্র।



মন্তব্য চালু নেই