ধূমপান না করলেও যেভাবে আপনার হতে পারে লাং ক্যান্সার

আমাদের একটা বদ্ধমূল ধারণা হলো, কারো ফুসফুসে ক্যান্সার হয়েছে মানেই সেই মানুষটি ধূমপায়ী। কিন্তু ধূমপান না করলেও যে এই ক্যান্সার হবার ঝুঁকি থাকে, তার সম্পর্কে জানি না অনেকেই। দেখে নিন ফুসফুসে ক্যান্সারের ব্যাপারে এমনই কিছু গুরুত্বপুর্ন তথ্য।

ফুসফুসের ক্যান্সারের ব্যাপারে জানার জন্য যোগাযোগ করা হয় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তার সানজিদা আজাদের সাথে। তিনি জানান, শুধুমাত্র ধূমপানের কারণে ফুসফুসের ক্যান্সার হয়ে থাকে এ ধারণাটি ভুল। ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ানোর পেছনে তিন রকমের কারণ আছে। এগুলো হলো-

১) ধূমপান

যারা ধূমপান করেন তারা তো ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকিতে থাকেনই। এর পাশাপাশি তামাক বা হুক্কা সেবনেও একই ঘটনা ঘটে। কিন্তু যারা ধূমপানের সময়ে এদের আশেপাশে থাকেন তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হন। একে বলা হয় সেকেন্ড হ্যান্ড স্মোকিং। ধূমপানের দলে যে ধোঁয়া নির্গত হয় তা একটি ইরিট্যান্ট। এটি ফুসফুসে গেলে ফুসফুসের কলামনার সেলগুলো ক্ষয়ে যায়। ক্ষয় মেরামত করতে গিয়ে এই কোষগুলো একসময়ে অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে ফলে ক্যান্সার দেখা দেয়। ঠিক এমনিভাবে ধূমপানের মতোই অন্য কোনো ধোঁয়ার প্রভাবে যদি কেউ থাকে যা ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর, তাহলেও তার ফুসফুসে ক্যান্সার দেখা দিতে পারে।

২) অকুপেশনাল হ্যাজার্ড

যারা পেশাগত কারণে ক্ষতিকর ধোঁয়ার আশেপাশে দিনের অনেকটা সময় কাটান তাদেরও ফুসফুসে ক্যান্সার হবার ঝুঁকি থাকে। যারা ডাইং ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন এবং রাসায়নিকের ধোঁয়ার আওতায় আসেন, ট্যানারিতে কাজ করেন, গার্মেন্টসে এমন ধোঁয়ার মাঝে কাজ করেন বা রাস্তায় পিচ ঢালাই করেন তাদেরও ফুসফুসের ক্যান্সার হবার বড় একটি ঝুঁকি থাকে। এর পাশাপাশি লাকড়ির চুলায় নিয়মিত রান্না করে থাকেন যেসব নারীরা তাদের ক্ষেত্রেও একই ঝুঁকি থাকে।

৩) পরিবেশ

বর্তমানে পরিবেশ দূষণ অনেক বেড়ে গেছে এবং এই দূষণ ফুসফুসের ক্যান্সারের একটি কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যারা দৈনিক রাস্তাঘাটে গাড়ির ধোঁয়ার মাঝে চলাচল করেন, তাদের ক্ষেত্রেই এই ঝুঁকি অনেক বেশি।

এসব ছাড়াও আরও একটি কারণে ফুসফুসের ক্যান্সার এমনকি যে কোনো ক্যান্সার হতে পারে, তা হলো জেনেটিক মিউটেশন। মিউটেশনের ফলে সেই মানুষটিরও ফুসফুসে ক্যান্সার হতে পারে যে জীবনে কোনোদিনই একটা সিগারেট ছুঁয়ে দেখেননি।

আরও তথ্যসূত্র: What Non-Smokers Need To Know About Lung Cancer, Aimee Swartz, Huffington Post

ফটো ক্রেডিট: medscape.com



মন্তব্য চালু নেই