`ধর্ষক’ বাবাকে খুন, গ্রেপ্তার তরুণীসহ ৩

বাবাকে হত্যার দায়ে পুলিশের জালে বছর ২৩-এর তরুণী। হত্যায় সাহায্যের জন্য ওই তরুণীর দুই বন্ধুকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই তরুনীর অভিযোগ গত তিন বছর ধরে বাবার লালসার শিকার হচ্ছিল সে। এমনকি প্রেমিকের সঙ্গে তাকে মেলামেশাও করতে দিত না তার বাবা। তাই অবশেষে হত্যার পরিকল্পনা করে। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম দিল্লির রাজৌর গার্ডেনে।

জানা গেছে, নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় বছর ৫৬ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে।

জেরায় আটকরা জানিয়েছে, ঘটনার সময়ে ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলেন ওই ব্যক্তি। সেই সুযোগেই উইকেট দিয়ে তাঁর মাথা এবং মুখে ২০ বার আঘাত করা হয়। এখানেই ক্ষান্ত হয়নি তারা। এর পর গলা টিপে ধরা হয় তাঁর। গলায় কেবলের তার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করা হয়। এমনকি মৃত্যু নিশ্চিত করতে বাবার বুক থেকে পেস মেকারও বার করে নেয় বছর ২৩-এর ওই তরুণী। হত্যার পর ইনোভা গাড়িতে করে রাজৌরি গার্ডেন থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে খেয়ালায় মৃতদেহ ফেলে আসে তারা।

পুলিশ জানিয়েছে, গত ৩০ এপ্রিল খেয়ালা এলাকায় নর্দমা থেকে একটি অজ্ঞাত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। হাত-পা বাধা অবস্থায় রক্তাক্ত চাদরের জড়ানো ছিল মৃতদেহটি। মৃতদেহের পাশেই ফেলা ছিল রক্তাক্ত বালিশ এবং একটি দস্তানা। হত্যা এবং প্রমাণ লোপাটের মামলা দায়ের করে তদন্তে নামে পুলিশ।

শনাক্তকরণের জন্য অনলাইন পুলিশ নেটওয়ার্কে মৃতের ছবি দেয়া হয়। ১ মে ওই তরুণী রাজৌরি গার্ডেন পুলিশ স্টেশন গিয়ে জানায় যে, মৃত ব্যক্তি তাঁর বাবা। তিনি একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরি করতেন। সে সময় পুলিশকে তরুণী জানায়, ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যা নাগাদ কোম্পানির গাড়িতে বের হন তাঁর বাবা। পরে ওই সংস্থায় খোঁজ খবর নিলে সত্য ঘটনা সামনে আসে। এমনকি কেবলের যে তার দিয়ে গলা পেঁচানো হয়েছিল, তার বাকি অংশ তরুণীর বাড়ি থেকে পাওয়া যায়। প্রিন্স এবং অশোকের জড়িত থাকার বিষয়েও নিশ্চিত হয় পুলিশ। তদন্ত এগোতে থাকলে বার বার পুলিশের জেরার মুখে পড়ে ওই তরুণী। অবশেষে দোষ স্বীকার করে সে।

এর পরই ওই তিন জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ওয়েস্ট) রণবীর সিং জানিয়েছেন, ‘আমরা প্রিন্স এবং অশোককে গ্রেপ্তার করি এবং উইকেট, কেবলের তার, ছুরি, কাচের টুকরো এবং ইনোভা গাড়ি উদ্ধার করি। তরুণী তার বাবার বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ এনেছে। বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে তাকে হুমকি দিত এবং মারধর করত বলেও জানিয়েছে সে। এমনকি তার প্রেমিকের সঙ্গে তরুণীকে দেখা করতে দিত না। এতে ক্ষুব্ধ হয়েই তাঁকে খুনের চক্রান্ত করে তরুণী। ‘

পুলিশ জানিয়েছে, প্রিন্স ট্যাটু আর্টিস্ট এবং অশোক সেলস বয়ের কাজ করে। তিন বছর আগে তরুণীর মা মারা যান। তরুণীর অভিযোগ, তাঁর মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই তাকে ধর্ষণ করত তার বাবা।



মন্তব্য চালু নেই