ধর্মহীন শিক্ষার বিপক্ষে যুক্তরাজ্যের শিক্ষামন্ত্রণালয়

যুক্তরাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী নিকি মরগ্যান বলেছেন, দেশটির স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই শেখাতে হবে, যুক্তরাজ্য একটি খ্রিস্টান দেশ এবং সেই সাথে তাদের নাস্তিক্যবাদের ওপর ধর্মকে প্রাধান্য দেয়াও শেখাতে হবে।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, রোববার নাস্তিক্যবাদী স্কুলগুলোর প্রতি তার এক বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি স্পষ্ট করেন যে ধর্মহীনতাকে ধর্মের সমান মর্যাদা দেয়ার দরকার নেই।

এর আগে, স্কুলগুলোর শিক্ষাক্রম থেকে নাস্তিক্যবাদ তুলে দেয়ার বিষয়ে এক দেশটির শিক্ষামন্ত্রণালয়ের এক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রায় দেয় দেশটির হাইকোর্ট। এর পরেইে এমন মন্তব্য করলেন নিকি মরগ্যান।

তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, মানবতাবাদীরা মানুষের বিকাশ বাধাগ্রস্থ করতে তাদের কাজের অংশ হিসেবে আদালতকে ব্যবহার করছে। এর মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নাস্তিক্যবাদ শিখতে বাধ্য করা হচ্ছে।

স্কুলগুলোর প্রতি দেশটির শিক্ষামন্ত্রীর দেয়া নতুন নির্দেশনা অনুসারে, কোনো স্কুলে ধর্মের সাথে ধর্মহীনতা শিক্ষা দেয়া বা নাস্তিক্যবাদ শিক্ষা দেয়ার জন্য সমান সময় দেয়া বাধ্যতামূলক নয়।

এর আগে, শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে করা মামলায় যুক্তরাজ্যের আধুনিক সমাজে ধর্মের অবস্থান বিষয়ে এক দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে বলা হয় দেশটি এখন আর খ্রিস্টান দেশ নেই। তাই দেশটিকে খিস্টানসূলভ সব কাজ বন্ধ করা উচিৎ।

তবে মরগ্যান বলেন, ‘সরকার শিক্ষার্থীদের অভিভাবক এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের মতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে প্রত্যেকের নিজ নিজ ধর্ম শিক্ষার স্বাধীনতা সুরক্ষিত রাখতে চায়।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, ধর্মীয় এবং ধর্মহীন উভয় স্কুলগুলোতেই ধর্মশিক্ষাকে প্রাধান্য দেয়া উচিৎ এবং ধর্মহীনতার ওপর ধর্মকে প্রাধান্য দেয়া উচিৎ।’

মরগ্যানের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, মরগ্যান দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, শিক্ষার্থীদের মাতা-পিতাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে বিভিন্ন গোষ্ঠি আদালতকে ব্যবহার করে তাদের নাস্তিক্যবাদ শিক্ষা দেয়ার জন্য বাধ্য করছে। এর কারণেই তিনি স্কুলে খ্রিস্টান ধর্মসহ অন্য প্রধান ধর্মগুলো শিক্ষা দেয়ার অধিকারের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ধর্ম শিক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে একটি নতুন শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করে যুক্তরাজ্যের সরকার। এতে খ্রিস্টান ধর্ম, ক্যাথলিক ধর্ম, ইহুদি ধর্ম, ইসলাম, বৌদ্ধ ধর্ম এবং শিখ ধর্ম শিক্ষার ব্যাপারে প্রাধান্য দেয়া হয়।

এর বিরুদ্ধে একটি ব্রিটিশ মানবতাবাদী সংগঠনের সহায়তায় দেশটির আদালতে মামলা করে তিন অভিভাবক। আদালত তাদের পক্ষে রায় দেয়। তবে দেশটির শিক্ষামন্ত্রণালয় মনে করছে, স্কুলে ধর্ম শিক্ষা প্রাধান্য দেয়া উচিৎ।



মন্তব্য চালু নেই