দেশের সবচেয়ে দামি CEO-র বয়স ৯৪, পালিয়েছিলেন স্কুল!

দেশের সর্বোচ্চ আয়কারী সিইও-কে চেনেন প্রায় প্রত্যেক গৃহস্থ পরিবার। উচ্চ, মধ্য ও নিম্নবিত্ত পরিবারের হেঁশেলে গত কয়েক দশক ধরে শোভা পেয়েছে তাঁর ছবি। এখনও না চিনলে দেখে নিন মশলার প্যাকেট।

বয়স ৯৪। তবু প্রাণপ্রাচুর্যের অভাব নেই। বার্ধক্য থাবা বসাতে পারেনি ব্যস্ত জীবনে। দেশের অন্যতম অগ্রণী খাদ্যপণ্য প্রস্তুতকারী সংস্থার সিইও ধরমপাল গুলাটিকে চেনেন না, এমন গৃহস্থ খুঁজে পাওয়া কঠিন। বাজারচলতি জনপ্রিয় মশলার ব্র্যান্ড এমডিএইচ-এর যে কোনও প্যাকেটের উপর তাঁর ছবিই যে শোভা পায়। তাঁকে দেখা যায় সংস্থার টিভি বিজ্ঞাপনেও।

পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করার পরে লেখাপড়ার পাট চুকিয়ে দিয়েছিলেন ধরমপাল। গত অর্থনৈতিক বছরের হিসেব অনুযায়ী, তাঁর বেতন বছরে ২১ কোটি টাকারও বেশি। অর্থাত্‍ গোদরেজ গ্রুপের আদি গোদরেজ, গোদরেজ কনজিউমার সংস্থার বিবেক গম্ভীর, হিন্দুস্তান ইউনিলিভারের সঞ্জীব মেহতা বা আইটিসির ওয়াই সি দেবেশ্বরের চেয়েও তাঁর মাইনে বেশি। গত বছরের হিসাবে ধরমপাল গুলাটির সংস্থা মহাশিয়াঁ দি হাট্টি, সংক্ষেপে এমডিএইচের মোট আয় বেড়ে ৯২৪ কোটি টাকা হয়েছে, যা আগের চেয়ে ২৪% বেশি। সংস্থার মোট মুনাফা হয়েছে ২১৩ কোটি টাকা।

শতবর্ষ ছুঁতে চলা ধরমপালকে সকলে দাদাজি অথবা মহাশয়জি নামে সম্বোধন করে। এই বয়সেও নিয়মিত কারখানা, বাজার ও ডিলারদের ঘাঁটিতে তিনি নিয়মিত টহল মারেন। যতক্ষণ না পণ্যের মনোমত মান ধার্য হচ্ছে, যা তাঁকে সন্তুষ্ট করবে, ততক্ষণ বাড়ির পথে ফেরার কথা চিন্তা করেন না দাদাজি। সংস্থায় তাঁর মালিকানা বর্তমানে ৮০%।

ষাট বছর আগে ধরমপালের বাবা চুনিলাল গুলাটির হাতে মশলার ব্যবসার সূচনা হয়। ১৯১৯ সালে শিয়ালকোটের এক ছোট্ট দোকান থেকে সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে বর্তমানে এমডিএইচ এক ১৫০০ কোটি টাকার সাম্রাজ্যের নাম। দেশ ভাগ হওয়ার পরে পাকিস্তান ছেড়ে দিল্লির কারোলবাগে দোকান খোলেন ধরমপাল। ক্রমে দেশজুড়ে গড়ে উঠেছে তাঁর ১৫টি কারখানা এবং ১০০০ ডিলার। শুধু তাই নয়, দুবাই ও লন্ডনেও অফিস খুলেছে এমডিএইচ। বর্তমানে প্রায় ১০০টি দেশে পণ্য রপ্তানি করা হয়। সংস্থার হাল আপাতত ধরেছেন ধরমপালের ছেলে। তাঁর ৬ মেয়ে রয়েছেন এলাকা ভিত্তিক পণ্য সরবরাহের দায়িত্বে।

ব্যবসা ছাড়া বেশ কিছু জনকল্যাণমূলক প্রকল্পেও অর্থ বিনিয়োগ করে এই সংস্থা। এমডিএইচের অনুদানে এ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ২০টি বিদ্যালয় ও একটি হাসপাতাল। ধরমপাল নিজে জানিয়েছেন, ‘আমার বেতনের ৯০% জনহিতকর কাজে ব্যয় করা হয়।’-এই সময়



মন্তব্য চালু নেই