খালেদার এলাকায় ফখরুলের গোস্যা

দুর্বার আন্দোলনে এ সরকারকে বিদায় করা হবে

সরকারকে বিদায় করতে দুর্বার আন্দোলনের ডাক দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘গত তিন মাসে বিরোধীদলের ৩১০ জন নেতাকর্মীকে খুন ও গুম করা হয়েছে। খালেদা জিযার কারণে দেশে গণতন্ত্র ফিরে এসেছে। তাই জনগণকে সম্পৃক্ত করে দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারকে বিদায় করে বেগম জিয়ার নেতৃত্বে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।’
বুধবার দুপুরে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার পুরাতন মুন্সিরহাট বাজারে রেলস্টেশন চত্বরে মিনার চৌধুরী মুক্তি পরিষদ আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বর্তমান জাতীয় সংসদকে উদ্ভট হিসেবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন সংসদে মমতাজের গান গাওয়া হয়। যেখানে বিরোধী দলও সরকারের গুণ গান গায়। এটি একটি উদ্ভট সংসদ। সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে সারাদেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।’
সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বিএনপির শীর্ষ এ নেতা আরো বলেন, ‘সরকারের সাড়ে পাঁচ বছরে কয়েক হাজার বিরোধী দলের নেতাকর্মীকে খুন-গুম করা হয়েছে। তারা মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে নেতাকর্মীদের আন্দোলন থেকে দূরে রাখতে চায়। এ সরকার জনগণকে ভয় পায়। তারা ফাঁকা মাঠে গোল দিতে পছন্দ করে।’
রাজনীতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে সরকারি দল হত্যা, গুমের রাজনীতি করছে এমন দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সারাদেশের লোক মিডিয়ার মাধ্যমে দেখেছে ফেনীতে প্রকাশ্য দিবালোকে সরকারি দলের লোকেরা ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি একরামুল হক একরামকে গুলি ও আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। অথচ সত্যকে আড়াল করার জন্য বিএনপি নেতা মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী মিনারকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে।’ এসময় অবিলম্বে মিনারের মুক্তি দাবি করেন তিনি।
মিনার চৌধুরী মুক্তি পরিষদের আহ্বায়ক গোলাম রসুল গোলাপের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরো বক্তব্য দেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্যাহ বুলু, মো. শাহজাহান, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন ভিপি, রেহানা আক্তার রানু, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সফিউল বারী বাবু, শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদ মোস্তাফিজুল করিম ভূঞা, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন খান, ফুলগাজী সদর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন মজুমদার প্রমুখ।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু তাহের, সাধারণ সম্পাদক জিয়া উদ্দিন মিস্টার, সহ-সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রহমান, মনোয়ার হোসেন দুলাল, জুলেখা আক্তার ডেইজি, সেলিনা আক্তার, আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারি, নাসির উদ্দিন খোন্দকার, হাফিজুর রহমান, এসএম সালাহ উদ্দিন, চেয়ারম্যান জাকির হোসেন জসিম।
প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে মির্জা ফখরুল বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে তার নির্বাচনী এলাকা ফেনী-১ (ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়া) আসনে তিন হাজার দরিদ্র ও অসহায়দের মাঝে আসন্ন রমজান উপলক্ষে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করেন।
এাছাড়াও বিকেলে তিনি ছাগলনাইয়ার জমদ্দার বাজারে সংক্ষিপ্ত পথ সভায় প্রধান অতিথিরি বক্তব্য দেন।

## খালেদার এলাকায় ফখরুলের গোস্যা :
ফেনীর ফুলগাজীতে মিনার চৌধুরী মুক্তি পরিষদ আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে দলীয় নেতাদের নামে স্লোগান দেয়াকে কেন্দ্র করে ব্যাপক হট্টগোল সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের এলাকায় গিয়ে এমন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চরম বিরক্ত হন।
বুধবার দুপুরে উপজেলার পুরাতন মুন্সিরহাটে অনুষ্ঠিত ওই প্রতিবাদ সমাবেশে মির্জা ফখরুল মঞ্চে উঠার সময় স্থানীয় নেতারা মঞ্চে উঠার প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এসময় একে অপরকে উদ্দেশ্য করে নেতাকর্মীরা গালিগালাজ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়।
এসময় ছবি তুলতে গেলে উপজেলা বিএনপি সাবেক প্রচার সম্পাদক শহীদুল্লাহ ও অপর নেতা হারুন সাংবাদিকদের গালমন্দ করেন।
মির্জা ফখরুল বক্তব্য দিতে মঞ্চে উঠলে দিতীয় দফায়ও হট্টগোল শুরু হয়। তিনি বার বার বক্তব্য বন্ধ রেখে বলেন, ‘শুধু দলীয় জনসমর্থন থাকলেই হবে না, দলের মাঝে কোনো শৃংখলা না থাকলে সে দল আন্দোলনে বিজয়ী হতে পারে না।’
দলীয় চেয়ারপারসনের প্রসঙ্গ তুলে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, ‘বেগম জিয়ার নির্দেশে আমরা তার এলাকায় এসেছি।’ এসময় তার চেহারায় বিরক্তিভাব লক্ষ্য করা গেছে। হট্টগোলের সময় স্থানীয় বিএনপি নেতাদের এক পক্ষ অন্য পক্ষকে আওয়ামী লীগের দালাল বলে স্লোগান দেয়।
মির্জা ফখরুল বক্তব্য শেষে মঞ্চ থেকে নামার পর নেতাকর্মীরা ইফতার প্যাকেট নিয়ে টানা হেঁচড়া শুরু করেন। ইতোপূর্বে ফেনীর মিজান ময়দানে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ভাই সাঈদ ইস্কানদেরর শোক সভায় অতিরিক্ত নেতাকর্মী উঠায় মঞ্চ ভেঙে কেন্দ্রীয় নেতা নজরুল ইসলামসহ অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়।



মন্তব্য চালু নেই