দুর্গাপুরে সাদামাটি কোয়ারী বন্ধ ॥ হাজারো শ্রমিকের মানবেতর জীবন যাপন

নেত্রকোনার দুর্গাপুর সাদামাটি কোয়রী গুলো হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, বেকার হয়ে পড়েছে হাজারো শ্রমিক, অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটছে তাঁদের।

গতকাল শনিবার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, অপরিকল্পিত ভাবে মাটি উত্তোলন ও নির্দেশনার অতিরিক্ত মাটি সরবরাহের ফলে গত ২ফেব্রুয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব কামাল হোসেন ঐ এলাকায় চেকপোষ্ট বসান।

স্থানীয় ভাবে প্রসংশিত হলেও খনিজ মন্ত্রনালয়, কোয়ারি মালিক ও শ্রমিকদের মাঝে দেখা দিয়েছে ব্যাপক দরমুল্য বৈষম্য। যার ফলে বন্ধ হয়ে যায় ৬টি সাদামাটি কোয়ারী। সাদামাটি কোয়ারী মালিক আব্দুল খালেক ও মঞ্জুরূল হক বলেন, কোয়ারী গুলোর মুল সমস্যা কোথায়? তা স্থানীয় প্রশাসন ও মন্ত্রনালয় ৫০ বছরেও খতিয়ে দেখেনি।

তাঁরা বলেন, বর্তমান রয়েলটি অনুযায়ী বি গ্রেট মাটি প্রতি টন খনি মুখে বিক্রি হয় ২৫০/৩০০ টাকা অথচ সরকার টন প্রতি রয়েলটি নিচ্ছে ৫০০ টাকা, এ গ্রেট মাটি বিক্রি হচ্ছে ৮০০/৯০০ টাকা, রয়েলটি নিচ্ছে ১৫০০ টাকা এর পরে বর্তমান গেজেট অনুযায়ী বি গেট এর রয়েলটি ২৫০০ টাকা, আর এ গ্রেট এর রয়েলটি ৩৫০০ টাকা ধার্য করায় মালিক শ্রমিকদের মাঝে ব্যাপক দর বৈষম্য দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি সরকারী নির্দেশনায় ১৫দিন বা ৩০দিন মেয়াদে ১৫অথবা ২০ হাজার বস্তার ডি.ও দিলেও মালিক পক্ষের খরচ পোষানোর জন্য মাল নামাতে হয় দ্বিগুন অথবা তিন গুন। আর তখনই প্রশাসন ও মন্ত্রনালয়ের চক্ষুশুল হয় সাদামাটি কোয়ারী গুলো।

আগে যে পরিমান মাল নামাতে পারতো এখন সে পরিমান মাল নামাতে না পাড়ায় শ্রমিক ও মালিক পক্ষের মাঝে অন্তোষ দেখা দিয়েছে। মাটি ব্যাবসায়ি আব্দুল হেকিম ও শহিদুল মিয়া বলেন, আমরা এর চেয়ে বেশি মুল্যে মাটি ক্রয় করতে পারবো না, কারন আমরা যে কোম্পানী গুলোতে মাটি সরবরাহ করে থাকি, তাহারাও এর চেয়ে বেশী দামে আমাদের কাছ থেকে মাটি ক্রয় করবে না।

এদিকে মাটি কোয়ারী, কয়লা পোর্ট বন্ধ ও ক্ষেত খামারে কাজ কম থাকায় স্থানীয় শ্রমিকরা মানবেতর জীবন যাপন করছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব কামাল হোসেন বলেন, সাদামাটি কোয়ারী সরকারী নির্দেশনা মোতাবেকই পরিচালিত হবে কেউ অসন্তোষ হলে আমার তো কিছু করার নাই।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান পাঠান সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চেক পোষ্ট বসালে স্থানীয় লোকজন এই উদ্দ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তবে প্রায় ৫০বছর ধরে মাটি উত্তোলন এর অনিয়ম নিয়মে পরিনত হওয়ায় হঠাৎ করে এই উদ্দ্যোগটি কোয়ারী মালিক, শ্রমিক ও ব্যাবসায়িদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

চেকপোষ্ট এর দায়িত্বে থাকা ইউনিয়ন ভুমি কর্মকর্তা জনাব মাসুদ বলেন, কোয়ারী গুলো বন্ধ থাকায় চেক পোষ্টে কোন মাল আসছে না। ঘটনাটি সরেজমিনে খতিয়ে দেখার জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন এলাকার সুধীমহল।



মন্তব্য চালু নেই