দুই সাংবাদিককে মারধর, নেতৃত্বে উপসচিব

সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের প্রতিবেদক জিএম মুস্তাফিজুল আলম এবং ক্যামেরাপারসন রিপু আহমেদ মারধরের শিকার হয়েছেন। বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র ও নিবন্ধন অফিসের উপ-সচিব আব্দুল বারীর কক্ষে আটকে রেখে তাদের মারধর করা হয়।

শুধু মারধরেই শেষ নয়, তাদের ক্যামেরা ও সংবাদ সংগ্রহের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও ভেঙে ফেলা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

হামলার শিকার সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, আব্দুল বারীর নির্দেশে জাতীয় পরিচয়পত্র ও নিবন্ধন অফিসের কর্মচারীরা তাদের মারধর করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ভবনে জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার তালিকা প্রকল্প কার্যালয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে যান বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের প্রতিবেদক জি এম মোস্তাফিজুল আলম ও ক্যামেরাপারসন রিপু আহমেদ।

রাজধানীর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এই ভবনেই, ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধনের কার্যালয়। কিন্তু শুরু থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র পেতে নানা ভোগান্তির অভিযোগ সাধারণ মানুষের।

মানুষের ভোগান্তির চিত্র তুলে ধরতে বেসরকারি এই টেলিভিশনের প্রতিবেদক ও ক্যামেরাপারসন সেখানে যান। কিন্তু সাধারণ মানুষ যখন তাদের ভোগান্তির কথা জানাচ্ছিলেন, তখন বাধ সাধেন জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের এক কর্মচারী। তিনি ছবি তুলতেও বাধা দেন।

পরে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ক্যামেরাপারসনকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ভবনের সপ্তম তলায় যেতে বাধ্য করেন অন্যান্য কর্মচারীরা। ওই ভবনের সপ্তম তলায় গেলে কর্মকর্তা কর্মচারীরা জড়ো হয়ে মারধর করেন রিপু আহমেদকে। সংবাদ সংগ্রহের বিষয়টি নিয়ে তাদের সাথে কথা বলতে গেলে রিপোর্টার মুস্তাফিজুল আলমকেও মারধর করা হয়।

পরে সাংবাদিকদের নিয়ে যাওয়া হয় জাতীয় পরিচয়পত্র ও নিবন্ধন অনুবিভাগের উপসচিব আব্দুল বারীর কক্ষে। সেখানে আব্দুল বারী নিজেই ভাঙচুর করেন ক্যামেরা। কেড়ে নেন সাংবাদিকদের মোবাইলফোনও।

খবর পেয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ সেখানে গিয়ে মীমাংসার চেষ্টা করেন। কিন্তু আবদুল বারী কমিশনারের অনুরোধ না রাখায় সেখান থেকে ক্ষুব্ধ হয়ে ফিরে যান শাহনেওয়াজ।

untitled-1_79539_1

এ বিষয়ে সাংবাদিক মোস্তাফিজুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে এনআইডির কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রথমে আমাদের কাজে বাধা দেয়। পরে এক কর্মকর্তার কক্ষে নিয়ে আমাদের আটকে রাখে এবং মারধর করে। এ সময় ক্যামেরাও ভাঙচুর করা হয়।

সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিষয়ে এনআইডির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দীন বলেন, “একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। তবে সেখানে কী ঘটনা ঘটেছে, তা আমি জানি না। সেখানে কী ঘটনা ঘটেছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”

“কার্যালয়ের কোনো কর্মকর্তা দোষী হলে তাঁকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না। এ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। সাংবাদিকরা আমাদের কাজে সহায়তা করে থাকেন। কাজেই তাঁদের সঙ্গে কেউ খারাপ ব্যবহার করলে তা মেনে নেওয়া হবে না” যোগ করেন এনআইডির মহাপরিচালক।



মন্তব্য চালু নেই