দুই বাসের পাল্লায় চিড়ে চ্যাপ্টা প্রাইভেটকার

আজমপুর ফুটওভার ব্রিজের নিচ দিয়ে ধীর গতিতেই যাচ্ছিল একটি প্রাইভেটকার। পেছন থেকে যেন ধাওয়া করে আসছিল দুটি বাস। দেখেই যে কারো মনে হবে দুই বাসের ড্রাইভার যেন তুমুল প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। ১০ সেকেন্ড না পেরুতেই চলন্ত প্রাইভেটকারটিকে (ঢাকা মেট্রো গ ৩১-৪৯৬৯) চেপে বসে বাস দুটি। দুই বাসের পাল্লায় পড়ে চিড়ে চ্যাপ্টা প্রাইভেটকারটি।

হলিউডের কোনো সিনেমার দৃশ্য নয় এটি। রোববার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে রাজধানীর উত্তরার আজমপুরের ফুটওভার ব্রিজের নিচে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ সদস্য ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় পরে প্রাইভেটকারের যাত্রী ও চালককে বের করে আনা হয়। যদিও তারা বিশেষ আঘাতপ্রাপ্ত হননি বলে জানিয়েছে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।

ঘাতক দুই বাসের নাম তুরাগ পরিবহন ও গাজীপুর পরিবহন। বাস দুটিকেই রেকার লাগিয়ে থানা হেফাজতে নেয়া সম্ভব হলেও ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই দুই বাসের চালক পালিয়ে যায় বলে জানায় পুলিশ।

উত্তরা ট্রাফিক পুলিশের টিআই আসাদ দায়িত্ব পালন করেন উত্তরা আজমপুর এলাকায়। তিনি জানান, রোববার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে তুরাগ পরিবহন ও গাজীপুর পরিবহন পাশাপাশি যাচ্ছিল। স্থানীয়রা বলছেন পাল্লা দিয়ে যাচ্ছিল। যাওয়ার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তুরাগ পরিবহন ওই প্রাইভেটকারটিকে চাপা দেয়।

টিআই আসাদ আরও জানান, ঘটনা ঘটার পর ওই দু’টি বাস রেকার লাগিয়ে থানায় পাঠানো হয়। তবে পালিয়ে যান দুই বাসের চালক ও ড্রাইভার। প্রাইভেটকারের মালিকের নাম পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তিনি উত্তরা ৩ নং সেক্টর এলাকার বাসিন্দা। পরে থানায় এসে তিনি অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন।

উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলী হোসেন খান বাস দুটি আটক করার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ড্রাইভার পালিয়েছে। বাস যেহেতু আটক করা হয়েছে সুতরাং মালিক পক্ষকে থানায় আসতেই হবে। তবে ভিকটিম এখনো থানায় আসেননি বলে জানান তিনি।

উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ জানায় দুর্ঘটনার বিষয়টি তদন্ত করছেন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহীদ মিয়া। তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখনো ভিকটিমের নাম পরিচয় জানা যায়নি। তিনি থানায় অভিযোগও করেননি। আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে তিনি হাসপাতালে গেছেন বলে জেনেছি। পলাতক চালক ও ড্রাইভারদের আটকের চেষ্টা চলছে।

উত্তরা আজমপুর এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, প্রায় দুর্ঘটনা ঘটলেও দোষীরা রয়ে যায় ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।

এ এলাকায় বিভিন্ন ঘটনা-দুর্ঘটনায় আহত হওয়া ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, রাজধানীর উত্তরা হচ্ছে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা। দিনকে দিন ওই এলাকায় দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়েই চলেছে। দুর্ঘটনা ঘটলেও ঘাতক চালক ও হেলপাররা রয়ে যান ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।

রাশেদ পলাশ নামে আজমপুর মূল সড়কের পাশের এক ব্যবসায়ী বলেন, গত ৪ মাসে তিনি আজমপুরে ছোট-বড় ১১টি সড়ক দুর্ঘটনা দেখেছেন। এর মধ্যে ২ জন মারাই গেছে বাসচাপায়। এমন ঘটনায় দোষীদের বিচারের আওতায় আনলে দুর্ঘটনা কমে আসতো বলেও জানান তিনি।



মন্তব্য চালু নেই