দুই ক্রিকেটার ও এক মডেলের প্রেমকাহিনি

সোমবার সন্ধ্যা। স্থান এফডিসির ৮ নম্বর ফ্লোর। অতিথিরা হাজির, অপেক্ষা করতে হচ্ছে আরও কজনের জন্য। তাঁরা এলেই খোলা হবে পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনি ২ ছবির গানের অ্যালবামের মোড়ক। মিলনায়তনের উৎসুক চোখগুলো খুঁজে বেড়াচ্ছে ছবির নায়িকা জয়া আহসানকে। উপস্থিত সবার মাঝে কানাকানি, জয়া আসবেন তো? ততক্ষণে সবাই জেনে গেছেন, ছবির নায়ক শাকিব খান আসতে পারছেন না। অন্য এক ছবির শুটিংয়ে কলকাতায় আটকে গেছেন তিনি। সুত্র-প্রথম আলো

জয়া এলেন। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার ফ্ল্যাশগুলো জ্বলে উঠল। ঘুরে গেল টিভি ক্যামেরার মুখগুলো। জয়ার চারপাশে শুধু আলোর ঝলকালি। শুরু হয় ছবি নিয়ে কথা। এরপর কথা হলো জয়ার সঙ্গে।

সোমবার ভোরের বিমানে কলকাতা থেকে ঢাকায় এসেছেন তিনি। কথা ছিল ৫ এপ্রিল ঢাকায় আসবেন। কিন্তু পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনি ২ ছবির গান অবমুক্তিতে অনুপস্থিত থাকতে চাননি বলেই এক দিন আগে চলে আসা।

শুক্রবার প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনি ২ ছবিটি। ফ্রেন্ডস মুভিজ ইন্টারন্যাশনাল প্রযোজিত এই ছবির পরিচালক সাফিউদ্দিন সাফি। রুম্মান রশীদ খানের কাহিনি ও সংলাপে এই ছবির গল্প ক্রিকেট নিয়ে। ক্রিকেটারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাকিব খান ও ইমন। আর জনপ্রিয় এক মডেলের চরিত্রে দেখা যাবে জয়াকে।

ছবি নিয়ে জয়ার মন্তব্য, ‘এটা পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনি ছবির সিক্যুয়েল। প্রথম ছবিটি ব্যবসাসফল হয়েছে। মনে হয় এটাও হবে। কারণ গল্পটা মৌলিক। আমাদের ছবিগুলোতে কিন্তু মৌলিক গল্পের অভাব।’

জয়া বললেন, ‘শুধু ভালো ছবি বানালে হবে না, দর্শকদেরও হলমুখী হতে হবে। ছবি মুক্তির পর অনেকেই বলেন, ডিভিডি বের হবে কবে? কোনো শিল্পীর এটা শুনতে ভালো লাগে? ছবি তো বড় পর্দার উপযোগী করে তৈরি করা। তাই দর্শকেরও দায় আছে ছবিটি হলে গিয়ে দেখার।’

২০১৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর শুরু হয় পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনি ২ ছবির শুটিং। শুটিং হয়েছে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ আর ভারতের হায়দরাবাদের রামোজি ফিল্ম সিটিতে। শুটিং হয়েছে ৪০ দিন।

জয়া বললেন, ‘একজন অভিনয়শিল্পী হিসেবে নিজেকে সব জায়গায় দেখতে চাই। বাণিজ্যিক ছবিতেও নিজেকে যাচাই করতে চেয়েছি। তাই এই ছবির সঙ্গে যুক্ত হওয়া।’ এ প্রসঙ্গে শাবানা আজমিকে উদ্ধৃতি করে জয়া বলেন, ‘তিনি বাণিজ্যিক ছবিতে কাজ করতে গিয়ে বলেছিলেন, তোমাকে একটা জায়গায় বেঁধে রাখা হয়েছে আর তোমার পায়ের নিচে কিছু কুমির ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আসলে সেটা কুমির না, তোমাকে ওই অভিনয়টা করতে হবে।’

পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনি ২বাংলাদেশের পাশাপাশি জয়া কলকাতায়ও কাজ করছেন। সেই অভিজ্ঞতার কথা জানালেন তিনি। বললেন, ‘কলকাতায় আমাকে অভিনয়শিল্পী হিসেবে সম্মান দেয়, মূল্যায়ন করে, আমিও কাজ করে তৃপ্তি পাই। অন্যদিকে আমাদের এখানে পরিচালকের দায়টা বেশি মনে হয়। এখানে পেশাদারত্ব সত্যিকার অর্থে গড়ে ওঠেনি। জুতা সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ পর্যন্ত সব কাজ পরিচালককে করতে হয়। আমাদের সবার যার যার জায়গা থেকে সততা নিয়ে কাজটা করলে কিন্তু হয়।’

পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনি ২ ছবিতে জয়ার সহশিল্পী শাকিব খান। জুটি হয়ে তাঁদের এটি দ্বিতীয় ছবি। জয়া বললেন, ‘শাকিব ভালো শিল্পী। একজন মানুষ যখন একটা অবস্থানে পৌঁছান, নিশ্চয় তাঁর যোগ্যতা আছে। আমি ইমনের কথা বলতে চাই। সেও খুব ভালো অভিনয় করেছেন। মৌসুমী হামিদও।’

পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনি ২ ছবিতে কাজ করার সময় অনেক মজার ঘটনা ঘটেছে। জয়া বললেন, ‘আমি ইমন ও সাচ্চু ভাই (শহীদুল আলম সাচ্চু) একসঙ্গে হয়াদরাবাদে গিয়েছিলাম। বিমানে আমাদের একটা কুপন দেওয়া হয়। ওই কুপনে আমরা ল্যাপটপ, টেলিভিশন আর ফ্রিজ পেয়েছি। ইমন খুব বিশ্বাস করছিল। সে যত্ন করে তা রেখে দেয়। বিমান থেকে নামার পর কাউন্টার খুঁজে না পেয়ে এ নিয়ে অনেক হাসাহাসি হয়েছে।’

আড্ডার ইতি টানতে হবে। জয়া জানালেন, তিনি এখন বাংলাদেশে কয়েকটি ছবির কাজ করছেন। এর মধ্যে শেষ করেছেন পুত্র, খাঁচার কিছু কাজ বকি আছে। শিগগিরই শুরু করবেন লাল মোরগের ঝুঁটি ছবির কাজ।



মন্তব্য চালু নেই