৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে কম্পিউটার শিক্ষা থাকলেও বেতন পায় না কম্পিউটার শিক্ষক

দীর্ঘ এক যুগ পেরিয়ে গেলেও এমপিওভূক্ত হয়নি কলারোয়া বেত্রবতী হাইস্কুল

৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে তথ্য প্রযুক্তি(কম্পিউটার) শিক্ষা বিষয়ে পাঠদান বধ্যতামূলক হলেও বেতন পান না কলারোয়া বেত্রবতী আদর্শ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষকসহ একাধিক বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষকগণ।

তাছাড়া, দীর্ঘ একযুগ পেরিয়ে গেলেও মাধ্যমিক পর্যায়ে এমপিওভূক্ত হয়নি কলারোয়া পৌরসদরের বেত্রবতী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি(যার ইআইআইএন-১১৮৬৫৩)। ১৯৯৫ সালে পৌরসদরের বেত্রবতীর তীরে অবস্থিত মনোরম পরিবেশে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি বছর শিক্ষার্থীরা পাবলিক পরীক্ষায় ভালো ভলাফল করে আসছে। কিন্তু দু:খের বিষয় হলো এই প্রতিষ্ঠান থেকে ইতোপূর্বে ১২টি ব্যাচ এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সুনামের সাথে কৃতকার্য হলেও এর পিছনে যাদের অবদান সেই শিক্ষকদের মধ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ে নিয়োগপ্রাপ্ত ৩ শিক্ষকের এখনও বেতন হয়নি। যারমধ্যে রয়েছেন একজন কম্পিউটার শিক্ষকও। বর্তমান ডিজেটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে সরকার এগিয়ে গেলেও একাধিক প্রতিষ্ঠানে ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে এসএসসি পর্যন্ত তথ্য প্রযুক্তি(কম্পিউটার) বাধ্যতামূলক হলেও বেতন পান না স্বয়ং কম্পিউটার শিক্ষকগণ। যেটি অত্যন্ত বেদনার অমানবিক ও অযৌক্তিক। যদিও প্রায় প্রতি বছরই বিদ্যালয়ের এসএসসি ও জেএসসি পরীক্ষায় শতকরা ৯০ ভাগের ওপরে পাশের হার থাকে। গেল বছর জেএসসি পরীক্ষায় দেশের শতভাগ পাশ করা বিদ্যালয়ের মধ্যে অত্র বিদ্যালয়টি স্থান পায় (৬৪ জনের মধ্যে ৬৪ জন পাশ)।

এদিকে, বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন বিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষক ও ১ নৈশ প্রহরী। বিদ্যালয়ের এক সিনিয়র শিক্ষক আক্ষেপ করে বলেন, আমরা বোধ হয় বিনা বেতনে অবসরে যাবো। তিনি সরকারের কাছে তাঁর আকুতি তুলে ধরার কথা বলে আরও বলেন, যোগ্যতার মাপকাঠিতে কোনো ঘাটতি না থাকা সত্ত্বেও এমপিওভুক্তি না হওয়াটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। এ বিষয়ে আলাপকালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশেদুল হাসান কামরুল বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান সব ধরনের যোগ্যতার প্রমাণ রেখে চললেও মাধ্যমিকে বেতন হচ্ছে না। নিরন্তর সকল চেষ্টা চালিয়েও শিক্ষকবৃন্দের হাতে বেতন তুলে দিতে পারিনি।

পাবলিক পরীক্ষায় নজরকাড়া ফলাফলের পাশাপাশি সকল জাতীয় ও আন্তজার্তিক কর্মসূচিসহ ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিতে দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে চলেছে ধারাবাহিকভাবে। তার পরেও চরম অবহেলার শিকার হচ্ছেন সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ। এছাড়া তিনি বলেন, বর্তমানে বিদ্যালয়ে ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী পড়া-লেখা করলেও ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়টিতে আজও নির্মিত হয়নি কোন ভবন। ফলে দুর্বল ভৌত অবকাঠামোর মধ্যে কষ্ট করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পাঠদান ও পাঠগ্রহণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তাই দীর্ঘ এক যুগ ধরে বেতন বঞ্চিত ভুক্তভোগী শিক্ষকবৃন্দ তাদের চরম দুরবস্থার কথা বিবেচনা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে এমপিওভূক্তির আকুল আবেদন জানিয়েছেন।

বেতন বঞ্চিত শিক্ষকবৃন্দের মনে সঙ্গত কারণে তাই প্রশ্ন জাগে- আর কতবার এসএসসি পরীক্ষা দিলে মাধ্যমিক পর্যায়ে এমপিওভূক্ত হবে প্রতিষ্ঠানটি।



মন্তব্য চালু নেই