২৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র দাখিল

দীর্ঘ এক বছরের মাথায় আলোর মুখ দেখলো কলারোয়ার বাবু হত্যা মামলা

দীর্ঘ প্রায় এক বছরের মাথায় আলোর মুখ দেখলো কলারোয়ার দেয়াড়া ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা মাহাবুবুর রহমান বাবু (৩২) হত্যা মামলাটি। গত ১৬ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম ২৯ জনকে আসামি করে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম সাংবাদিকদের জানান, আসামিদের কারো কারো সাথে উপজেলার ছলিমপুর গ্রামের আলহাজ্ব গোলাম কাদের মোড়লের পুত্র নিহত মাহাবুবুর রহমান বাবুর এলাকা ভিত্তিক রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ছিলো। ওই দ্বন্দ্বের জের ধরে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ১৮ দলীয় জোটের অবরোধের দ্বিতীয় দিনে ২০১৩ সালের ২৬ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলযোগে বাবু কলারোয়া আসার পথিমধ্যে পৌর সদরের মির্জাপুর ঈদ গায়ের নিকট দুরে ওঁৎ পেতে থাকা আসামিরা বাবুকে এলোপাতাড়ি মারপিট করতে থাকে। এ সময় গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়ে মাটিতে পড়ে থাকে বাবু। এরপর সেখান থেকে এলাকাবাসী ও পরে নিহতের ভাই আশংকাজনক অবস্থায় বাবুকে প্রথমে কলারোয়া হাসপাতালে ও পরে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সাতক্ষীরা হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক বাবুর মৃত্যু নিশ্চিত করেন। মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শেষে বিজ্ঞ আদালতে ২৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম।ওই মামলায় চার্জশিটভূক্ত আসামিরা হলো-১। উপজেলা ছলিমপুর গ্রামের আ: বারিক মোড়লের পুত্র আ: রশিদ(৩৭), ২। আব্দুর রহমান দফাদারের পুত্র আহাদ আলি(২৬), ৩। রায়টা গ্রামের আ: মান্নানের পুত্র রাজু(২২), ৪। পৌর সভার মির্জাপুর গ্রামের কাশেম গাজীর পুত্র আবুল খায়ের(৩২), ৫। মৃত আ: রশিদ শেখের পুত্র আলী হোসেন(২৪), ৬। উপজেলার ছলিমপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলী খাঁর পুত্র জয়নাল(২৪), ৭। মির্জাপুর গ্রামের পিন্টু শেখের পুত্র মাসুম বিল্লাহ(২৪), ৮। খোর্দ্দ গ্রামের মশিয়ার দর্জির পুত্র জাফর আলী(২৬), ৯। মির্জাপুর গ্রামের গহর আলী মোড়লের পুত্র আজিজুর(৩২), ১০। শ্রীপতিপুর গ্রামের মোকছেদ আলীর পুত্র চঞ্চল(৩২), ১১। রায়টা গ্রামের মৃত বেলায়েত আলী দালালের পুত্র বাবু ড্রাইভার(৪৮), ১২। ছলিমপুর গ্রামের মতিয়ার খার পুত্র হাফিজুর রহমান(৩৪), ১৩। মির্জাপুর গ্রামের আকবর আলী গাজীর পুত্র হাবিবুর রহমান হাবিব(২৮), ১৪। খোর্দ্দ গ্রামের করিম বক্স এর পুত্র আবুল কাশেম(৪৮), ১৫। পিছলাপোল গ্রামের আক্কাছ আলী দালালের পুত্র আকছেদ আলী(৩৬), ১৬। শ্রীপতিপুর গ্রামের আ: রহমান মোল্লার পুত্র আ: রফিক(৪০), ১৭। সিরাজুল মোল্লার পুত্র মিজানুর(৩৩) ও ১৮। আমিনুরের পুত্র খোকা মেম্বার(৩৮), ১৯। মির্জাপুর গ্রামের নিদাই গাজীর পুত্র বিল্লাল(৩৬), ২০। ছলিমপুর গ্রামের কেরামত আলী খানের পুত্র মোহাম্মদ আলী খান, ২১। মেহমানপুর গ্রামের মৃত মোজাম্মেলের পুত্র জহুরুল(৪৮), ২২। রায়টা গ্রামের মৃত রহমত উল্লাহ সানার পুত্র জামিল সানা(৫০), ২৩। মির্জাপুর গ্রামের মৃত আ: রহমান শেখের পুত্র আ: রহিম(৩৫), ২৪। দেয়াড়া গ্রামের মৃত ইউসুফ গাইনের পুত্র ছাত্তার গাইন, ২৫। বসন্তপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের পুত্র মোকলেছুর, ২৬। ছলিমপুর গ্রামের নাজিমুদ্দীন খার পুত্র বিপ্লব(২৮), ২৭। মৃত কাশেম খার পুত্র আলাউদ্দীন খান(৪৮) ও ২৮। মৃত আছার খানের পুত্র আলিবুদ্দীন খান(৪৪) এবং ২৯। ছলিমপুর গ্রামের খোরশেদ মোড়লের পুত্র তোতা মিয়া(১৯)। থানা সূত্রে জানা গেছে, মাহাবুবুর রহমান বাবু হত্যার একদিন পর গত বছরের ২৭ নভেম্বর ছলিমপুর গ্রামের আ: বারিক মোড়লের পুত্র আ: রশিদ বাদী হয়ে ২৪জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৪০/৫০ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি পর্যায়ক্রমে দায়িত্বপ্রাপ্ত থানার এসআই সাজেদুল ইসলাম, এসআই আইনুদ্দীন ও এসআই সাফুর আহম্মেদ তদন্ত করেন। এরপর ওই মামলার সর্বশেষ তদন্ত  কর্মকর্তা নিযুক্ত হন থানার ওসি (তদন্ত) শেখ সফিকুর রহমান। ওসি (তদন্ত) শেখ সফিকুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, মামলাটি গভীর ভাবে পর্যালোচনা করে তদন্ত শেষে হত্যার রহস্য উদঘাটিত হয়। তদন্তে বেরিয়ে আসে ওই মামলার বাদী ও স্বাক্ষীর যোগসাজসে বাবু হত্যা সংঘটিত হয়। আর সেটি আড়াল করতে আ: রশিদ বাদী হয়ে এলাকার কিছু দোষী ও নির্দোষী ব্যক্তিকে আসামী করে মামলা দায়ের করে। আর সে কারণে বিজ্ঞ আদালতে গত ১৩ নভেম্বর ওই মামলাটির চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে একই দিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে ওসি (তদন্ত) শেখ সফিকুর রহমান বাদী হয়ে আ: রশিদকে প্রধান করে ২৯ জনের নামে এজাহার দাখিল করেন। নতুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসাবে থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম গত ১৬ নভেম্বর বিজ্ঞ আদালতে ২৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন।

 

কলারোয়া সীমান্ত  দিয়ে ভারতে শিশু পাচারকালে প্রতারক আটক
এক শিশুকে ভারতে পাচারকালে কলারোয়া সীমান্ত থেকে ষাটোর্দ্ধ লালনের মতাদর্শী ছদ্দবেশি প্রতারক ফকিরকে আটক করেছে বিজিবি। এ সময় পাচারের কবল থেকে বিজিবি উদ্ধার করেছে আল-আমীন নামের ১২ বছরের এক শিশুকে। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার কেঁড়াগাছি সীমান্তের কাকডাঙ্গা বিওপি ক্যাম্পের সামনে থেকে আটক ও উদ্ধারের ঘটনাটি ঘটে। আটক পাচারকারী লালনের মতাদর্শী ছদ্দবেশ ফকির হেলাল উদ্দীন ওরফে কামাল ওরফে বেলাল (৬৫) চাঁদপুর জেলার মতলব থানার সরদারকান্দি গ্রামের মৃত শাহ আহমেদের পুত্র। স্থানীয় সূত্র জানায়, ২দিন আগে ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশনে নেত্রকোনা জেলার কমলাকান্দার নাজিরপুর এলাকার চাঁনমিয়ার শিশুপুত্র আল-আমীনের (১২) সাথে পরিচয় হয় প্রতারক হেলাল উদ্দীনের। বিভিন্ন কথার এক পর্যায়ে হেলালউদ্দীনকে শিশু আল-আমীন জানান যে, মাস তিনেক আগে সে সৎ-মায়ের দ্বারা বিতাড়িত হয়ে কাজের সন্ধানে ঢাকায় এসে একটি হোটেলে কাজ নেয়। কিন্তু সেখানে কোন বেতন না দেয়ায় সে ‘কুলি’র কাজ করার জন্য রেল স্টেশনে এসেছে। এ সময় প্রতারক হেলাল উদ্দীন নিজেকে লালন ফকিরের মতাদর্শী পরিচয় দিয়ে কুষ্টিয়ায় লালনের দরগায় গিয়ে ভালো রোজগারের ব্যবস্থা করে দেবেন বলে আশ্বাস দেন। প্রতারক হেলাল কুষ্টিয়া যাওয়ার কথা বলে শিশু আল-আমীনকে নিয়ে সোমবার রাতে কলারোয়া এসে হাইস্কুলের বারান্দায় ঘুমিয়ে পড়েন। পরে মঙ্গলবার সকালে ভ্যানযোগে সেখান থেকে কলারোয়ার কেঁড়াগাছির গাড়াখালী সীমান্তে নিয়ে যাওয়ার সময় কাকডাঙ্গা বিওপির সুবেদার মেজর নুরুল ইসলাম ক্যাম্পের সামনে থেকে সন্দেহবশত: তাদেরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এসময় পাচারের বিষয়টি পরিষ্কার হলে প্রতারক হেলালউদ্দীনকে আটক ও আল-আমীনকে উদ্ধার করে বিজিবি। পরে তাদেরকে কলারোয়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।



মন্তব্য চালু নেই