দিনাজপুরে ফুলবাড়ী ট্রাজেডি দিবস পালিত

এশিয়া এনার্জিকে দেশ থেকে বিতাড়িত করতে নতুন করে শপথ গ্রহণের মধ্যদিয়ে দিনাজপুরে পালিত হলো ফুলবাড়ী ট্রাজেডি দিবস।এই দিনটি ‘জাতীয় সম্পদ রক্ষা দিবস’ হিসেবে পালন করেছে তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি এবং ফুলবাড়ী বাসী পালন করছে ‘ফুলবাড়ী শোক দিবস’।

উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলণের প্রতিবাদে ২০০৬ সালের এই দিনে ৯ বছর আগে আইন শৃংখলাবাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারায় ৩ জন।আহত হয় আরও আড়াই শতাধিক প্রতিবাদি মানুষ। দিবসটি উপলক্ষে ফুলবাড়ীবাসী এবং তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ বিদ্যুৎ-বন্দর জাতীয় রক্ষা কমিটি ও ফুলবাসীবাসী বুধবার উপজেলার সর্বত্র কালো পতাকা উত্তোলণ,কালো ব্যাজ ধারন,শোক ব্যালী,শহীদ আমীন,সালেকিন ও তরিকুলের বেদিতে পু®পস্তবক অর্পণ ও শোক সভার আয়োজন করে।

Phulbari-Pic-3অনুষ্ঠানে জাতীয় কমিটি’র কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব প্রফেসর আনু মুহাম্মদ, গণফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস, গণসংহতির কেন্দ্রীয় সন্বয়ক জোনায়েত সাকি, কেমিউনিস্ট লীগ এর কেন্দ্রীয় সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, বাসদ এর কেন্দ্রীয় সদস্য এডভোকেট সাইফুল হোসেন পল্টু, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আলতাফ হোসাইন, জাতীয় তেল- গ্যাস এর কেন্দ্রীয় সংগঠক এস এম খালেক, কেন্দ্রীয় কমিটির আদিবাসী পরিষদ এর রবীন্দ্র সরেন, তেল- গ্যাস এর সদস্য মাহা মির্জা, তেল- গ্যাস এর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্য অধ্যাপক তানজীম উদ্দিন খান, কন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির বাসদের সদস্য কৃষিবিদ ওবায়দুল্লাহ মুসা (মার্কসবাদী), কমিউনিস্ট পার্টির পলিটবুরো চেয়ারম্যান মাহামুদুল হাসান মানিক প্রমুখ।

Phulbary-Pic-02অপরদিকে পৃথক ভাবে ফুলবাড়ী ট্রাজেডি দিবস ২৬শে আগস্ট র‌্যালী ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে পালন করেন সম্মিলিত পেশাজীবি সংগঠন ও ফুলবাড়ী বাসী। র‌্যালী শেষে পার্বতীপুরের বর্ণমালা স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক ও করতোয়ার সাংবাদিক শেখ সাব্বির আলীর সভাপতিতে উর্বশী সিনেমা হলের সামনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ফুলবাড়ী পেশাজীবি সংগঠনের আহব্বায়ক পৌর মেয়র মোঃ মানিক সরকার। তিনি তার বক্তেব্যে বলেন আমরা কয়লা খনি চাই না, তবু কেন এই কয়লা খনি করার জন্য ষড়যন্ত্র। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন দেশের কোথাও ফসলি জমি নষ্ট করে কয়লা খনি হবে না। তার পরেও কেন এত ষড়যন্ত্র। আমরা আমিন, সালেকিন, তুরিকুল কে হারিয়েছি আবারও যদি আন্দোলনে নামতে হয় তবু নামব কয়লা খনি হতে দেব না।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি ডাক্তার মোকলেছুর রহমান, শিবলী সাদিক, মোঃ গোলাফর হেসেন গোলাপ প্রমুখ। এছাড়া বিভিন্ন সংগঠন দিবসটি পালন করেন।

উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলণের প্রতিবাদে ২০০৬ সালের এইদিনে গণরোষে এভাবেই জ্বলে ওঠে ফুলবাড়ি। নিহতদের পরিবারে আজও শোকের ছায়া। উন্মুক্ত পদ্ধতিতে ৩০ বছরে ৫’শ ৭২ মিলিয়ন টন কয়লা তোলার পরিকল্পনা ছিল এশিয়া এনার্জির। উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা তুললে বিপর্যয় ঘটবে পরিবেশের, ছাড়তে হবে ভিটেমাটি এই আশঙ্কায় সেদিন রাজপথে নেমেছিল ফুলবাড়িবাসী। শঙ্কা তাদের আজও কাটেনি। উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলণের প্রতিবাদে গণবিদ্রোহে ফুলবাড়ীতে বিপ্লব সাধিত হলেও আজও উদ্বেগ,উৎকণ্ঠা আর স্বজন হারানোর কাঁন্না। এখনও বইছে শোকের মাতম।



মন্তব্য চালু নেই