দিদি সব জানেন

তিনি না এলে হইচই, এলেও হইচই। তিনি নীরব থাকলে বিরোধীরা সরব! মুখ খুললেও সরব! বিধানসভায় শুক্রবার তিনি এলেন। অনেকটা মুখ খুললেন। কিছুটা নীরব থাকলেন। ফের সরব হলেন বিরোধীরা!

চার বছরের রাজত্বে বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর-পর্ব এড়িয়ে যাওয়ার অভিযোগ বারবার উঠেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। এই কয়েক বছরে একবারই স্বাস্থ্য দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের কাছ থেকে একটি প্রশ্ন চেয়ে নিয়ে উত্তর দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু শুক্রবার সকাল থেকে তিনি হাজির ছিলেন বিধানসভায়! শুধু হাজিরই নন! কলকাতা থেকে নামখানা রুটে নতুন বাস চলতে পারে কি না, রেজিনগরের ক্ষুদ্র শিল্পতালুকে বিনিয়োগের বন্দোবস্ত হতে পারে কি না, বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থা সংক্রান্ত বিলে রাষ্ট্রপতি আদতে সম্মতি দিয়েছেন কি না— তার সবকিছুতেই অনর্গল মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী। যে কোনও মন্ত্রী উত্তর দেওয়ার সময়ে হাত তুললেন। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সম্মতি দেওয়ামাত্র মুখ্যমন্ত্রীর মাইকের আলো জ্বলল এবং তিনি বলতে শুরু করলেন।

কিন্তু কী বললেন?

পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র জেলে। তাঁর অনুপস্থিতিতে এ দিন পরিবহণের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার দায়িত্ব বর্তেছিল পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপরে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এক সারিতে নিজের বরাবরের আসন থেকে অন্যত্র সরে এসে উত্তর দিচ্ছিলেন পার্থ। মাঝপথে অতিরিক্ত প্রশ্ন হতে হঠাৎই মাইক ধরে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বাসরুট নিয়ে একটি প্রশ্নের সূত্রে বলে দিলেন, ‘আমরা আসার আগে তো রাজ্যে পরিবহণ ব্যবস্থা বলে কিছু ছিল না। সব তৈরি করতে হয়েছে। আমরা বাস তৈরি করেছি। অর্ডার দিয়েছি। বাস আসবে। তার পরে তো গাড়ি চলবে আরও!’ বিরোধীরা হইচই করছেন দেখে মুখ্যমন্ত্রীর আরও জুড়ে দিলেন, ‘ডাক্তার, নার্স সবই তো আমরা নতুন করে তৈরি করছি!’

মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনে বিরোধীদের চক্ষু যথারীতি চড়কগাছ! সভার বাইরে এসে বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রর মন্তব্য, ‘চার বছর পরেও অর্ডারি বাস আসছে! খুব পরিশ্রম হচ্ছে তো! নতুন বাংলা গড়তে তা হলে অনেক সময় লাগবে!’ আর বিধানসভা চত্বরে শাসক দলেরই এক বিধায়কের সরস প্রতিক্রিয়া, ‘আরও পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় ফেরার পরে আমরা মনে হয় বলতে পারব, আমাদের সরকারই চাকা আবিষ্কার করেছে!’



মন্তব্য চালু নেই