দায় ছাত্রলীগেরই : শাবি উপাচার্য

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি) শাখা ছাত্রলীগের দুপক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের দায় নিয়ে চলছে দোষারোপের খেলা। শাখা ছাত্রলীগের নেতারা ওই সংঘর্ষের দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ওপর চাপালেও তা নিতে নারাজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। উল্টো এর দায় ছাত্রলীগের ওপরই চাপিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আমিনুল হক ভূইয়া।

সংঘর্ষের দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ছাত্রলীগের এমন অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে উপাচার্য রাইজিংবিডিকে জানান, ‘প্রশাসন এ সংঘর্ষের দায় নেবে না। এই দায় ছাত্রলীগেরই। সংঘর্ষ ছাত্রলীগই জড়িত ছিল। ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের দায়ভার কোনোভাবেই প্রশাসন নেবে না। মানুষ তো কতভাবে দায়ী করতে পারে, কিন্তু সত্য ঘটনা সবাই জানে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষে কারা দায়ী এবং আসলে কী অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল তা আমরা সবাই জানি। তারপরও দায়ীদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে আমরা তদন্ত কমিটি করেছি। বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও দেখছে।’

গত বৃহস্পতিবার শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার সমর্থক সংগঠন ছাত্রলীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষে একজন নিহত হন, আহত হন বেশ কয়েকজন। দেশজুড়ে এ নিয়ে আলোচনার মধ্যে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ শুক্রবার এক টেলিভিশন আলোচনা অনুষ্ঠানে ওই সংঘর্ষের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দায়ী করেন। এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি সংঘর্ষে বহিরাগতদের জড়িত থাকার দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রমের পাশাপাশি ছাত্ররাজনীতি করলে তা করবে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে কেন আসবে? আর তার দায় ছাত্রলীগের ঘাড়ে কেন বর্তাবে?’

এরপর শনিবার বিকালে সিলেটে এক সংবাদ সম্মেলনে মহানগর ও জেলা ছাত্রলীগও সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদাসীনতাকে দায়ী করেন। বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষের পর শিপলু নামের সিলেট নগর ছাত্রলীগের এক নেতার বাড়ি থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে তাকে আটক করতে পারেনি তারা। শনিবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থও সেদিনের সংঘর্ষের জন্য প্রশাসনকে দায়ী করেন। তার অভিযোগ, ‘প্রক্টর সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলে বহিরাগতদের প্রবেশে সহায়তা করেছেন।’

তবে সংঘর্ষের ঘটনায় সরাসরি ছাত্রলীগের দুটি পক্ষকে দায়ী করেছেন প্রক্টর হিমাদ্রী শেখর রায়ও। তিনি বলেছেন, ‘হল দখলকে কেন্দ্র করেই সংঘর্ষের সূত্রপাত। তা কোনোভাবেই প্রশাসনের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যায় না। আবাসিক হলে অবৈধ সুবিধা নিতেই ছাত্রলীগ সংঘর্ষে জড়ায়।’
ছাত্রলীগের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে প্রক্টর পাল্টা বলেন, ‘এদের দলীয় কোনো শৃঙ্খলা নেই।’ প্রশাসনের কোনো ব্যর্থতা ছিল কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ব্যর্থতা তো ছিলই। আমরা সংঘর্ষ থামাতে পারিনি।’

সংঘর্ষ থামানোর ক্ষেত্রে হল প্রাধ্যক্ষদের সহায়তা পাননি বলে প্রক্টর অভিযোগ করেন। তবে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রাধ্যক্ষের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। সংঘর্ষে ছাত্রলীগ কর্মী সুমন চন্দ্র দাস নিহত হন।



মন্তব্য চালু নেই