দায়িত্ব নিচ্ছেন নাছিরসহ ৫৫ কাউন্সিলর

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ও ৫৫ জন কাউন্সিলর আনুষ্ঠানিক দায়িত্বগ্রহণ করছেন আজ রোববার। এ উপলক্ষে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

রোববার সকালে খতমে বুখারী শরীফ শেষে চট্টগ্রামের উন্নয়ন ও কল্যাণ কামনায় বিশেষ মুনাজাত শেষে মেয়র দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করবেন মেয়র।

এদিকে দায়িত্বগ্রহণ অনুষ্ঠানে সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও এম মনজুর আলমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

মেয়রের পাশাপাশি ৪১টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলররাও গত ২৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন কমিশন থেকে গত ৩০ এপ্রিল সিটি মেয়রের গেজেট প্রকাশিত হয়। এরপর ৬ মে সিটি মেয়র এবং কাউন্সিলররা শপথ নেন। কিন্তু আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন এবং কাউন্সিলরদেরকে প্রায় তিন মাস অপেক্ষা করার পর দায়িত্ব বুঝে নিতে হচ্ছে।

সিটি করপোরেশনের সচিব রশিদ আহমদ বলেন,‘রোববার মেয়র মহোদয় আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বগ্রহণ করবেন। এ উপলক্ষে সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।’

জানা গেছে, স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন আইন), ২০০৯-এর ৬ ধারা অনুযায়ী গত মেয়র ও কাউন্সিলরদের প্রথম বৈঠকের দিন থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর মেয়াদ থাকে। এতে করে সাবেক সিটি মেয়র এম মনজুর আলম এবং কাউন্সিলরদের মেয়াদ ২৫ জুলাই শেষ হয়েছে। যদিওবা সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য পদত্যাগ করলে ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে গত তিন মাস দায়িত্ব পালন করেন প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ হোসেন।

নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর গত তিন মাস ধরে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব পালন না করলেও জলাবদ্ধতা নিরসন, ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার এবং বিল বোর্ড উচ্ছেদ নিয়ে কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের সাথে ধারাবাহিক বৈঠক এবং প্রয়োজনীয় মৌখিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন। অনুষ্ঠানিক দায়িত্ব না নিলেও এতদিন তার নির্দেশেই চলছিল করপোরেশনের সামগ্রিক কার্যক্রম।

এদিকে নগরপিতা হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার আগেই সব ধরনের মামলা থেকে মুক্তি পেয়েছেন নাছির। সর্বশেষ নিজ দলের কর্মী সুফিয়ান সিদ্দিকী হত্যাচেষ্টার মামলায় আদালতের রায়ে বেকসুর খালাস পান নাছির। ১৯৯৩ সালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ক্যান্টিনের চিকিৎসক মিজান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স পরীক্ষার্থী বোরহানসহ ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় দায়ের করা মামলারও আসামি ছিলেন আ জ ম নাছির। ২০০১ সালে এ মামলা থেকে বেকসুর খালাস পান তিনি। ১৯৯৯ সালে মারামারির অপর একটি মামলায়ও আদালত থেকে খালাস পান তিনি।

প্রসঙ্গত চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ১৯৮১ সাল থেকে পরপর দুবার চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর দুবার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হন। ১৯৮৬ সালে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় বঙ্গবন্ধুর খুনি কর্নেল ফারুক ফ্রিডম পার্টি গঠন ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেন। তখন আ জ ম নাছির উদ্দিনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ লালদীঘি মাঠে কর্নেল ফারুকের জনসভা পণ্ড করে দেয়। দলীয় কোন্দলের কারণে গত একদশক ধরে তিনি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সদস্যপদ থেকেও বঞ্চিত ছিলেন। তবে ২০১৪ সালের শুরুতে তিনি নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। দলীয় রাজনীতির পাশাপাশি তিনি একজন ক্রীড়া সংগঠক। তিনি চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সহ-সভাপতি।



মন্তব্য চালু নেই