মালিক-শ্রমিক লাঞ্ছিত

দক্ষিণাঞ্চলের ১২ রুটে বাস চলাচল বন্ধ

অটোবাইক চালক ও বাস শ্রমিকদের সংঘর্ষের ঘটনায় ঝালকাঠি থেকে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের ১২ রুটে বাস চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

শুক্রবার বিকেল তিনটায় বাস মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে অটোবাইক চালকদের সমঝোতা বৈঠক সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হওয়ার পর এ ঘোষণা দিয়েছে মালিকপক্ষ।

বিভাগীয় শহরসহ দক্ষিণাঞ্চলের ১২ রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে যাত্রীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শুক্রবার দুপুরে ব্যাটারি চালিত একটি অটোবাইক বাসস্ট্যান্ড থেকে যাত্রী নিয়ে বরিশাল যাওয়ার সময় চেকপোস্টে বসা বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা গতিরোধ করে অটোবাইকটিতে ভাঙচুর চালায়।

প্রতিবাদ করলে শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা অটোবাইক চালক রিয়াজুল ইসলাম, আলী আকবর ও ইদ্রিস আলীর ওপর হামলা চালায়। এসময় আরো তিনটি অটোবাইক ভাঙচুর করে তারা।খবর পেয়ে অটোবাইক চালকরা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জড়ো হয়ে বাসমালিক ও শ্রমিক সমিতির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে। তারা বাসমালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক আবুল কালাম ও সবুজ পরিবহনের মালিক সাইদুর রহমানকে লাঞ্ছিত ও মারধর করে।

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের পেট্রোলপাম্প মোড়ে অবরোধ করে।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরোধকারীদের সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।

পরে বাসমামলিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা অভ্যন্তরীণ সব রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেন।  বাস মালিকদের মারধরের বিচার ও মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচল বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় তারা।

বিকেল তিনটার দিকে ঝালকাঠির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি-সার্কেল) আ ফ ম আনোয়ার হোসেন বাস মালিক ও শ্রমিক এবং অটোবাইক চালকদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। তবে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়।

এরপর বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে বাস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহসড়কের কলেজ মোড়, পেট্রোল পাম্প, বাসস্ট্যান্ড, ভৈরবপাশাসহ বিভিন্ন স্থানে বিছিন্নভাবে অটোরিকশা ভাঙচুর করে।

এ ব্যাপারে সিনিয়র এএসপি আ ফ ম আনোয়ার হোসেন বাংলামেইলকে জানান, আমরা দু’পক্ষকে নিয়ে বসেছিলাম। কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়েছে।

এ ব্যাপারে ঝালকাঠি বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিলন মাহমুদ বাচ্চু বাংলামেইলকে জানান, পরিকল্পিতভাবে অটোরিকশা শ্রমিকরা মালিক সমিতির সদস্য আবুল কালাম আজাদ, সেলিম, সাইদুর রহমান ও বাস শ্রমিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাহাদুর চৌধুরীসহ অনেকের ওপর হামলা করেছে। এ হামলার প্রতিবাদে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে ঝালকাঠি অটোরিকশা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ খানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী ফরিদ হোসেন জানায়, ঝালকাঠি-বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়কে অটোবাইক চলাচল নিষিদ্ধ করে জেলা বাসমালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়ন নেতাকর্মীরা। এতে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। তবে এ সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে কিছু অটোবাইক মহাসড়কে চলাচল করছে। বাধ্য হয়ে যাত্রীরা অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে বিকল্প বাহন মটোর সাইকেলে যাতায়াত করছে।



মন্তব্য চালু নেই