তেল অপসারণে সনাতন পদ্ধতি

রাসায়নিক ব্যবহার করে নয়, আপাতত সনাতন পদ্ধতিতে সুন্দরবনে ছড়িয়ে পড়া ফার্নেস তেল অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত গ্রামবাসী এবং জেলেদের উদ্বুদ্ধ করে শ্যালা নদী থেকে তেল সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে সীমিত পরিসরে গ্রামবাসী ও জেলেরা ফোম, চটের বস্তা ও কলাপাতা ব্যবহার করে তেল অপসারণ শুরু করেছে।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আমির হোসাইন চৌধুরী জানিয়েছেন, নদী থেকে ফার্নেস অয়েল তোলার জন্য স্থানীয় লোকজনকে আহ্বান জানানো হয়েছে। তারা তেল সংগ্রহ করলে পদ্মা অয়েল কোম্পানি প্রতি লিটার ৩০ টাকা দরে কিনে নেবে। জোয়ারের সময় খালগুলোতে যেন ফার্নেস অয়েল যেতে না পারে সে জন্য বৃহস্পতিবারই ১২টি খালের মুখে নেট দেওয়া হয়েছে।

তিনি জানান, কাণ্ডারি-১০ এসে পৌঁছালেও সেটি কখন থেকে রাসায়নিক ছিটানোর কাজ শুরু করবে, সে ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কারণ, রাসায়নিক ছিটানোর আগে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের অনুমতি প্রয়োজন। অনুমতি পাওয়া গেলে তখন থেকে ছিটানোর কার্যক্রম শুরু হবে। আপাতত ডিসপারসেন্ট কেমিক্যাল ছিটানোর কাজ বন্ধ রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান মো. শামসুদ্দোহা খন্দকার জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে তিন দিন গ্রামবাসীর সহায়তা নিয়েই তেল সংগ্রহের চেষ্টা করা হবে। পরে রাসায়নিক ব্যবহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

এদিকে, মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হার্বার মাস্টার কে এম আকতারুজ্জামান জানান, ডুবে যাওয়া ট্যাংকারে ছিল প্রায় সাড়ে তিন লাখ লিটার ফার্নেস অয়েল। কিন্তু কাণ্ডারিতে মাত্র ১০ হাজার লিটার তেলের তেজস্ক্রিয়তা কমানোর মতো রাসায়নিক রয়েছে।

পূর্ব সুন্দরবনের শ্যালা নদীর চাঁদপাই রেঞ্জের মালবাহী জাহাজের ধাক্কায় ‘ওটি সাউদার্ন স্টার সেভেন’ নামে একটি তেলবাহী ট্যাংকার মঙ্গলবার ভোরে ডুবে যায়। ট্যাংকারটি গোপালগঞ্জের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য খুলনার পদ্মা অয়েল ডিপো থেকে ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৬৬৪ লিটার ফার্নেস অয়েল নিয়ে যাচ্ছিল। এ ঘটনায় ট্যাংকারের মাস্টার মোকলেসুর রহমান (৫০) নিখোঁজ রয়েছেন।

ওই তেল পানিতে ছড়িয়ে পড়ায় মারাত্মক হুমকিতে পড়েছে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য। বিশেষ করে জোয়ারে তেলযুক্ত পানি বনে প্রবেশ করায় গাছের গোড়ায় ও শ্বাসমূলে তেলের আবরণ লেগে যাওয়ায় শ্বাস-প্রশ্বাসে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। এতে ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের অস্তিত্ব ঝুঁকির মুখে রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই