তেলেগু নির্মাতার উপর নারী সংগঠনের হামলা

সেই পুরাকাল থেকেই নারী ভোগ্য পণ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে ভারতীয় অঞ্চলে। কিন্তু যুগে যুগে এসব চিত্র পাল্টেছে হয়তো কিছুটা। আধুনিক শিক্ষার ফলে নারী অবমাননা, নারীর প্রতি সহিংসতা সবই ক্রমশ কমে এসেছে, কারণ নারী তার নিজের সম্পর্কে এখন সোচ্চার। কিন্তু তারপরও ভারতীয় ছবিতে নারীর অবমাননা চিত্র প্রায়শই চোখে পড়ার মত। আর এই নারী অবমাননার চিত্র নিয়েই সম্প্রতি ভারতের হায়দ্রাবাদে হয়ে গেল এক লঙ্কাকাণ্ড!

জানা গেছে, গত মাসে ‘কেচাকা’ নামের একটি ছবির ট্রেলার মুক্তি দেন তেলেুগু নির্মাতা এনভিবি চৌধুরী। আর এরপর থেকেই বিভিন্ন নারী সংগঠনগুলো সোচ্চার হয় ছবিটিতে নারী অবমাননার চিত্র দেখে। শুধু তাই না, তারা নির্মাতার কাছে একাধিকবার প্রস্তাবও করে যে ছবি থেকে নারী অবমাননার চিত্রগুলো সরিয়ে ফেলতে। ট্রেলারে নারীকে যেভাবে কুরুচিপূর্ণ আর ভোগ্যপণ্য হিসেবে দেখানো হয়েছে তাতে নারীর প্রতি ঘরোয়া সহিংসতা আরো বাড়বেই বলে মহিলা সংঘটনগুলোর দাবী। কিন্তু নির্মাতা নারীদের এসব কথা তোয়াক্কা না করলে বেশকিছু সংঘটন ফুঁসে উঠে ওই নির্মাতার প্রতি। ফলত ২৯ অক্টোবর সকালে নির্মাতা এনভিবি চৌধুরীর চেম্বারে হামলা করেন সংঘবদ্ধ নারী দলটি। এমনকি তারা ওই নির্মাতার উপরও চড়াও হন। এক পর্যায়ে নারী দলটির সাথে নির্মাতার চেম্বারের ভেতরেই ধস্তাধস্তি লেগে যায় নারী সংগঠনটির সদস্যরা।

‘কেচাকা’ ছবিটি সত্য ঘটনা অবলম্বন করে নির্মিত হয়েছে। গত মাসে ছবিটির ফাইনাল ট্রেলার মুক্তির পর টলিউডের এই ছবিটিকে কেন্দ্র করে ফুঁসে উঠে নারী সংগঠনগুলো। ছবিতে অন্তত ১৫টি নৃশংস ধর্ষণের দৃশ্য দেখানো হয়েছে, যা কিনা বাস্তব সমাজে খারাপ প্রভাব পড়বে বলে দাবী করেন নারী নেত্রীরা। এদের মধ্যে মধ্যে একজন নারী টলিউডের সেন্সর বোর্ডকেও দায়ী করেন। নারী অধিকার রক্ষা সংগঠনের প্রধান এ রায় কুমারি বলেন, আমি বুঝি না যে সেন্সর বোর্ড কিভাবে এমন নৃশংস দৃশ্যসম্বলিত একটি ছবিকে ছাড়পত্র দিল। একজন নির্মাতা সে নারীর শরীর আর এইসব ভালগারিটি বিক্রি করে টাকা উপার্জন কেরবে এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। ছবিতে নারীর প্রতি নৃশংসের দৃশ্যগুলো বাদ দিতেই হবে। তা না হলে আমরা শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তুলবো।

এর আগে ছবিটির ট্রেলারে নারী সহিংসতা নিয়ে হায়দরাবাদে একটি কনফারেন্সে ‘শি হেল্প ফাউন্ডেশন’ নামের এনজিও সংঘঠনটির প্রেসিডেন্ট বিজয় রেড্ডি বলেন, আমরা কখনোই সিনেমা কিংবা নির্মাতার প্রতিপক্ষ নই। আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল ১২৬ সেকেন্ডেসের একটি ট্রেলার, যা সম্প্রতি ইউটিউবে প্রকাশ পেয়েছে। যেখানে একজন নারীকে শোপিস হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে, নারীর উপর নির্যাতনের বিভিন্ন উপায়ও বাতলে দেয়া হযেছে। নারীকে সিগারেটের সেঁক এবং যৌন সামগ্রী হিসেবে দেখানো হয়েছে। সাম্প্রতি কোনো তেলেগু ছবিতে এরকম ভয়াবহভাবে নারীকে দেখানো হয়নি।

এ সম্পর্কে একটি অনলাইন পোর্টাল জানিয়েছে, ২৯ অক্টোবর সকালে ‘কেচাকা’ ছবি প্রসঙ্গে কথা বলতে হায়দরাবাদে নির্মাতার চেম্বারে আসেন নারী সংগঠনের সদস্যরা। তারা নির্মাতার সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে চান। কিন্তু নির্মাতার সাথে তাদের সাক্ষাৎ করতে না দিলে একসময় নির্মাতার সাথে তারা কোনো উচ্চবাক্য করবেন না বলে প্রতিশ্রতি দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন। কিন্তু নির্মাতার সাথে সাক্ষাৎ হওয়া মাত্রই তারা চড়াও হন নারী অধিকার সংঘঠনটির সদস্যরা।

ট্রেলারে ‘কেচাকা’:



মন্তব্য চালু নেই