তুরস্কের ‘নাক গলানোর’ কড়া প্রতিবাদ বাংলাদেশের

মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যরের পর তুরস্ক যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে এর কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ। সোমবার ঢাকায় তুরস্ক দূতাবাসে একটি প্রতিবাদলিপি পাঠিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

তুরস্কের এই অবস্থানে বাংলাদেশ হতাশ জানিয়ে প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়েছে, তাদের এ ধরনের প্রতিক্রিয়া একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল।

মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়, এ ব্যাপারে তুরস্ক ‘নাক গলাবে না’ বলে আশ্বাস দিলেও সে কথা রাখতে পারেনি দেশটি। মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় রবিবার এক বিবৃতিতে দেশটি ‘গভীর মর্মাহত’ বলে জানিয়েছে।

তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমরা (তুরস্ক) দুঃখের সঙ্গে জানতে পেরেছি যে, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও দলটির প্রধান অর্থ জোগানদাতা মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের জারি করা মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। আমরা আবার জোর দিয়ে বলছি, এ পদ্ধতিতে অতীতের ক্ষত সারানো যাবে না। আমরা আশা করি, এভাবে ফাঁসি দেয়ার ঘটনা বাংলাদেশের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের মধ্যে বিভেদ বাড়াবে না।’

শনিবার রাতে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধী জামায়াত নেতা মীর কাসেমের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধে মীর কাসেমসহ এ পর্যন্ত ছয়জনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।

মানবতাবিরোধী অপরাধে গত মে মাসে মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির পর ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখায় তুরস্ক। দেশটির প্রেসিডেন্ট তাইয়েপ রিসেপ এরদোয়ান নিজে নিজামীকে ‘ইসলামি আন্দোলনের সিপাহসালার’ আখ্যায়িত করে বক্তব্য দেন। ফাঁসি কার্যকরের পরপরই রাষ্ট্রদূত ডেভরিম ওসতুর্ককে ঢাকা থেকে ডেকে নেয় তুরস্ক। তিন মাস পর গত ১২ আগস্ট আবার ঢাকায় ফেরেন তিনি। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রদূত জানান, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়। এ ব্যাপারে তারা আর ‘নাক গলাবে’ না। তুরস্কে যেহেতু মৃত্যুদণ্ড নেই এজন্য নিজামীর ফাঁসি কার্যকরে তারা প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল বলেও জানান দেশটির রাষ্ট্রদূত দেভরিম ওজতুর্ক। তবে সেই সংবাদ সম্মেলনের মাস না পেরোতেই এ ব্যাপারে ‘নাক গলালো’ তুরস্ক।



মন্তব্য চালু নেই