তিন বছর পর এক টেবিলে চীন জাপান দ. কোরিয়া

বিগত তিন বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো এক টেবিলে বসেছেন চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। দ. কোরিয়ার রাজধানী সিউলে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

উদ্দেশ্য: জানা যায়, আঞ্চলিক ও কূটনৈতিক মতানৈক্য নিরসন করা এ বৈঠকের উদ্দেশ্য।

তিন দেশই এশিয়ার সমৃদ্ধ অর্থনীতির ধারকে পরিণত হতে পেরেছে কিন্তু নিজেদের ভেতর সমুদ্রসীমা এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে কৃত সহিংসতা ও তার বিপরীতে ক্ষমার প্রশ্নে এখনও সহমত হতে পারেনি। এ অবস্থা ক্রমেই বৃহত্তর আঞ্চলিক বিসংবাদের হাতছানি দিয়ে চলেছে।

তিন নেতার টেবিল: শনিবার দ. কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী য়ুন বিয়ুংসে জাপানের ফুমিও কিশিদা এবং চীনের ওয়াং উইকে স্বাগত জানান।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মূলত ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে চান তারা। তিনি প্রত্যাশা করেন, অপর দেশদুটোও একই পথে তাদের সঙ্গী হবে। চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং সম্প্রতি জাপানের যুদ্ধাপরাধ প্রসঙ্গে দেশটি ক্ষমা চাইবে কী না, সেটি জানতে প্রশ্ন তুলেছিলেন।

জাপান এখনও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন কৃতকর্মে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির প্রতি নমনীয় নয়। বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন জাপান প্রতিবেশী দেশ চীন এবং দ. কোরিয়ার একাংশ দখল করে ঐ ভূমিতে গণহত্যা, ধর্ষণসহ বিভিন্ন মাত্রার যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত করেছিল।

বিতর্কের বিষয়বস্তুগুলো: বর্তমান বিতর্কিত সমুদ্রসীমাসহ আকাশসীমায় অনুপ্রবেশ এবং খনিজ বিষয়ক বেশ কিছু প্রশ্নে দেশত্রয়ের ভেতর মতের মিল হচ্ছে না। এবং এ বিষয়ে পারস্পরিক ছাড় দেয়ার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসার প্রশ্নে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের যুদ্ধাপরাধ ইস্যুটি।

ইতিবাচক দিক: এরপরও দেশ তিনটি যে আলোচনার পথ পরিহার করেনি এটিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে আন্তর্জাতিক মহল। শেষবারের মতো তিনদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীত্রয় মিলিত হয়েছিলেন ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে, ষষ্ট আঞ্চলিক সম্মেলনে যোগদানের উদ্দেশ্যে। কিন্তু ঐ সম্মেলন বাতিল হয়ে যায় জাপানী প্রধানমন্ত্রীর ‘অপ্রত্যাশিত আচরণে।’

শিনজোর যে আচারে সম্মেলন বাতিল হয়েছিল: জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ঐ সময়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত জাপানী সৈন্যদের একটি গণকবরে শ্রদ্ধানিবেদন করতে যান, যেখানে চীন ও দ. কোরিয়ার দৃষ্টিতে চিহ্নিত যুদ্ধপরাধীরাও বীর হিসেবে সমাহিত আছেন। এ ঘটনায় চীন ও দ. কোরিয়া দুই দেশই ভীষণ অসন্তুষ্ট হয়ে উঠেছিল।



মন্তব্য চালু নেই