তারেকের সম্পৃক্ততা খুঁজতে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছে তদন্ত দল

গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) দাবি, সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যার পরিকল্পনাকারীদের সঙ্গে ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বৈঠক করেছেন বলে স্বীকার করেছেন সাংবাদিক শফিক রেহমান। বিএনপি-ঘনিষ্ঠ সাংবাদিক শফিক রেহমানের এই ‘স্বীকারোক্তি’র সূত্র ধরে ওই বৈঠকে যারা উপস্থিত ছিলেন, তাদের কারো সঙ্গে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কোনো যোগাযোগ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছে তদন্ত দল।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বশীল সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

সেনাসমর্থিত সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে গ্রেফতার হওয়া তারেক রহমান ২০০৮ সালে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে লন্ডনে আছেন। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা ছাড়াও কয়েক ডজন মামলার আসামি তারেক। বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে যুক্তরাষ্ট্রে অপহরণের পর হত্যার পরিকল্পনার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গেল শনিবার সকালে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও উপস্থাপক শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এরপর তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডেও পেয়েছে পুলিশ। শফিক রেহমানকে গ্রেফতারের পর বন্ধ হয়ে যাওয়া দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকেও এই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

জয়কে অপহরণ ও হত্যার পরিকল্পনার ঘটনায় পল্টন থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বিএনপির হাই-কমান্ডের কেউ জড়িত রয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে হাই-কমান্ডের কেউ বলতে তারেক রহমান কি না সে বিষয়টি নিশ্চিত নয়। মূলত সেটি খতিয়ে দেখতেই যুক্তরাষ্ট্র যাবেন তদন্ত কর্মকর্তারা। তাছাড়া এ ঘটনায় জড়িত দুই এফবিআই সদস্য, যুক্তরাষ্ট্রের জাসস নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ্ মামুন, তার ছেলে সিজার ও সিজারের বন্ধু মিল্টন ভুঁইয়ার সঙ্গে লন্ডনের কারো যোগাযোগ বা সম্পর্ক রয়েছে কি না তাও জানার চেষ্টা করছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। এ জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে অধিকতর তদন্ত করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের তদন্ত কর্মকর্তাদের যে প্রতিনিধি দলটি যাচ্ছে তাতে ডিবি দক্ষিণ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাশরুকুর রহমান খালেদ, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) রাজীব আল মাসুদ ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) হাসান আরাফাত থাকতে পারেন।

যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, এই মামলার ঘটনাস্থল যুক্তরাষ্ট্র। অধিকতর তদন্তের স্বার্থে এফবিআইয়ের সহযোগিতায় তদন্ত দল যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার রিমান্ডের তৃতীয় দিনে শফিক রেহমানকে নিয়ে তার বাসায় তল্লাশি চালিয়েছে ডিবি। এসময় শফিক রেহমানের পাসপোর্টসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র জব্দ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ডিসি মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বাসার ঠিকানা ও গাড়ির নম্বর সংক্রান্ত কিছু নথিপত্র শফিক রেহমানের বাসায় পাওয়া গেছে। তদন্তের স্বার্থে সেগুলো জব্দ করে ডিবি অফিসে আনা হয়েছে।

সূত্র জানায়, রিমান্ডে শফিক রেহমান বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন দেশে ঘোরাফেরার তথ্য দিয়েছেন। সেগুলো যাচাই-বাছাই করতেই তার পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই