তরল কফিতে নিপুণ নৈপুণ্য

কফি কেবল পান করার বস্তু নয়- এতে দেখার রয়েছে অনেক কিছু। আপনি যদি কখনো ম্যানিলার ‘বানি বেকার ক্যাফে’তে যান তবেই বুঝবেন কফি শিল্প কি এবং কত প্রকার। এখানকার শৈল্পিক কফি খুবই পছন্দ ক্রেতাদের। তবে এই বিশেষ কফির জন্য ক্রেতাদের কাছ থেকে আলাদা কোনো চার্জ নেন না কফিশপের মালিক জ্যাক ইয়োনজোন।

ম্যানিলার এই কফি শপটি যৌথভাবে পরিচালনা করে থাকেন গ্রাফিক আর্টিস্ট জ্যাক ইয়োনজোন এবং তার স্ত্রী। পর্যটকদেরকে ভ্রমণের আনন্দকে আরো স্মৃতিময় করে রাখতেই উষ্ণ দুধের ওপর বিশেষ কায়দায় ফুটিয়ে তোলা হয় বিভিন্ন চিত্র। ক্রেতাদের মর্জিমাফিক তারা কফি ভর্তি মগের ওপর এঁকে থাকেন নানা ধরনের ছবি। এটি হতে পারে স্বয়ং ওই খদ্দেরের বা তারই কোন পছন্দের জিনিসের।

কফিতে ছবি আঁকার ক্ষেত্রে জ্যাক ইয়োনজোনএকটি চামচ এবং বারবিকিউ তৈরির শিক ব্যবহার করে থাকেন। ঘন চকলেটের মাধ্যমে এতে ফুটিয়ে তোলেন নানা চিত্রকর্ম। কাজটি যত সহজ ভাবছেন ততটা কিন্তু নয়। কেননা সবার পছন্দ যেমন এক নয়, তেমনি চাহিদার ক্ষেত্রেও রয়েছে নানা পার্থক্য।

ফলে দোকানে কফি খেতে আসা খদ্দেরদের চাহিদামত চিত্র আঁকতে গিয়ে গলদঘর্ম হয়ে যান জ্যাক ইয়োনজোন। প্রথম দিকে এসব ছবি বানানোর কাজটা অতি সাদামাটাভাবে শুরু করলেও ক্রেতদের চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে কফি ডিজাইনে এখন নতুনত্ব আনার চেষ্টা করছেন ইয়োনজোন।

 

এ প্রসঙ্গে বানি বেকার কফিশপের মালিক বলেন, ‘এর আগে তারা কখনো এমনটি দেখেনি। ফলে কফির কাপে সাধারণ একটি পাতা বা হৃদয়ের প্রতিকৃতি দেখেই উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠত তারা। ‍

কিন্তু আমি তাদেরকে আরো নতুন কিছু ‍দিতে চাই। এখন আমি তাদের কফিমগে ছেলেমেয়ে, বন্ধু কংবা প্রিয় কার্টুনের চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে চাই। যাতে তারা আরো খুশি হয় এবং হাসতে থাকে। আপাতত: এটাই আমার চাওয়া।’

zkkamma2

তবে কাজটা কিন্তু খুব চ্যালেঞ্জিং। কেননা ক্রেতার কফি ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়ার আগেই চিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে হবে। নইলে সব প্রচেষ্টা বরবাদ। তবে এ সমস্যাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন ইয়োনজোন। তিনি দাবি করেন, যে কোনো ধরনের কফিতেই তিনি তার প্রতিভা ফুটিয়ে তুলতে পারেন। তবে এটি নির্ভর করছে কফির ঘণত্বের ওপর। কফি ঘণ হলে ইয়ানজোনের জন্য ছবি আঁকার কাজটা সহজ হয়ে যায়।

xfgl3e51

এনজি ইউ নামের এক ক্রেতা তার কফিতে নিজের বাচ্চার ছবি দেখতে চেয়েছিলেন। সত্যি সত্যি যখন তিনি নিজের কফিমগে প্রিয় সন্তানকে দেখতে পেলেন তখন তিনি একেবারে হা হয়ে গেলেন। এ সম্পর্কে নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে ইউ বলেন,‘ আমি সত্যিই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। এমনটি সাধারণত: দেখা যায় না। কেননা কফিতে সচারাচর হৃদয় বা এ জাতীয় ছোটখাট নকশাই দেখা যায়। কিন্তু কফিতে চিত্রকর্ম ভাবাই যায় না।’

এজন্যই ইয়োনজোনের ক্যাফের জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ছে। তিনি এখন তার এই বিচিত্র শিল্পকর্মটি অন্যদের মাঝেও ছড়িয়ে দিতে চাইছেন। ইতিমধ্যে আগ্রহীদের জন্য একটি নৈশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করেছেন ইয়নজোন। এখানেই শেষ নয়। নিজের এই বিশেষ শিল্পকর্মকে আরও প্রসারিত করার চিন্তা করছেন ইয়োনজোন। তার আশা খুব শীঘ্রই তিনি তরল কফিতে ত্রিমাত্রিক ব্যাঙ্গচিত্র তৈরিতে সক্ষম হবেন।



মন্তব্য চালু নেই