আন্দোলনে যাচ্ছে ‘সিলেটিরা’

ঢাকায় ব্রিটিশ ভিসা বন্ধ, যেতে হবে নয়া দিল্লি

বাংলাদেশি কোনো নাগরিক ব্রিটেন যেতে হলে নয়া দিল্লি থেকে ভিসা প্রসেসিং করতে হবে। ব্রিটেন সরকারের এমন সিদ্ধান্ত আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে কার্যকর হবে। এতে ফুঁসে উঠছেন সিলেটের মানুষ। তারা ব্রিটেন সরকারের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আন্দোলনেরও প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

তাদের অভিযোগ, নয়া দিল্লিতে ভিসা প্রসেসিং করতে হলে ব্রিটেনগমনেচ্ছু বাংলাদেশিরা ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে হয়রানির শিকার হবেন। ঢাকার পরিবর্তে নয়াদিল্লি থেকে ভিসা প্রসেসিং সময় ও ব্যয় সাপেক্ষ বলে ব্রিটেন সরকারের নতুন এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ ‘সিলেটিরা’ আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। ঢাকা থেকে ভিসা প্রদান অব্যাহত রাখার দাবিতে তারা সিলেটের পাশাপাশি ব্রিটেনেও আন্দোলন শুরু করতে সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন।

জানা যায়, বর্তমানে ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাই কমিশন থেকে বাংলাদেশিদের ভিসা দেয়া হয়ে থাকে। এছাড়া ব্রিটিশ হাইকমিশন পরিচালিত একটি কেন্দ্রের মাধ্যমে সিলেট থেকেও ভিসার আবেদন গ্রহণ করা হয়ে থাকে। সিলেটবাসীরা কয়েক বছর ধরে ভিসা আবেদন গ্রহণ কেন্দ্রটিকে পূর্ণাঙ্গ ভিসা সেন্টারে রূপান্তরের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।

সিলেটবাসীরা যখন পূর্ণাঙ্গ ভিসা সেন্টারের দাবি জানিয়ে আসছেন ঠিক সেসময় বাংলাদেশ থেকে ব্রিটেনের ভিসা প্রসেসিং কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়ার সংবাদে সর্বত্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়। তাই ব্রিটেন সরকারের এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনের জন্য গত মঙ্গলবার রাতে এক সভার মাধ্যমে বিভিন্ন পেশার লোকজনকে নিয়ে ‘ব্রিটিশ-বাংলাদেশ স্বার্থ রক্ষা কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি ব্রিটিশ হাইকমিশনে গণআবেদন প্রদান, সুধী সমাবেশ, ব্রিটেনে বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দাবি আদায়ের চেষ্টা করবে বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে সিলেট-৫ আসনের সংসদ সদস্য যুক্তরাজ্য প্রবাসী সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘বাংলাদেশিদেরকে নয়াদিল্লি থেকে ভিসা সংগ্রহ করতে হলে নানা রকমের হয়রানির শিকার হতে হবে। এ উদ্যোগ মোটেই যৌক্তিক নয়। ব্রিটেন সরকারকে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে সেখানকার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের সহযোগিতা চাইব।’

সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে ভারতীয়দের চেয়ে বাংলাদেশিরা বেশি বসবাস করে থাকেন। তাই নয়াদিল্লির ভিসা সেন্টার গুটিয়ে ঢাকায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিলে তা হতো যুক্তিসঙ্গত।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশিরা নয়াদিল্লি থেকে ভিসা আনতে গেলে ভিসা প্রাপ্তির সম্ভাবনা যেমন কমে যাবে তেমনি হয়রানিরও শিকার হবেন।’

ঢাকা থেকে ব্রিটিশ হাইকমিশনের ভিসা প্রদান কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার পেছনে কোনো দূরভিসন্ধি থাকতে পারে উল্লেখ করে তিনি জানান, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আগামী সভায় তিনি বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন। এ সিদ্ধান্ত বাতিলে ব্রিটিশ সরকারের কাছে আবেদন জানানো হবে বলে জানান তিনি।



মন্তব্য চালু নেই