‘ড্রোন তৈরির শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’

উঁচু ভবনে হামলার জন্য গত ছয় মাস ধরে খেলনা বিমানের আদলে কোয়াড হেলিকপ্টার বা ড্রোন তৈরির বিভিন্ন কারিগরি দিক নিয়ে গবেষণা করছিলেন জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্যরা। তাদের দুইজনকে এমন সময় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) আটক করেছে, যখন তারা এ কাজের একেবারে শেষ দিকে পৌঁছে গেছে।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিবির যুগ্ম কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ি এলাকা থেকে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে আটক দুজন হলেন মুন্সীগঞ্জের তানজিল হোসেন বাবু (২৬) ও কুমিল্লার মো. গোলাম মাওলা মোহন (২৫)।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, “জিজ্ঞাসাবাদে এ দুজন আনসার উল্লাহ বাংলা টিমের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকার করেছে। তারা দু’জনই আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের নেতা মওলানা জসীম উদ্দিন রাহমানীর অনুসারী হিসেবে জিহাদি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। মোহন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সাইন্সে পড়াশোনা করেছে। অন্যজনের কারিগরি জ্ঞান বেশ ভালো।”

মনিরুল ইসলাম বলেন, “তারা গত ছয় মাস ধরে ড্রোন তৈরি নিয়ে গবেষণা করছিল। তারা এটি তৈরির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল। তৈরি ড্রোন ২০-৩০ কেজি ওজনের বোমা বা কোনো বস্তু নিয়ে ২০-৩০ তলা উঁচু ভবন পর্যন্ত উঠতে সক্ষম হবে। খেলনা বিমানে যে কারিগরি দিক রয়েছে তার চেয়ে একটু উন্নত ব্যবস্থায় ড্রোন তৈরি করা হচ্ছিল।”

এমন ড্রোন দিয়ে আকস্মিক কোনো হামলার চেষ্টা হলে তা প্রতিরোধে পুলিশ কতোটা সক্ষম এমন প্রশ্নের জবাবে মনিরুল বলেন, “এসব ঠেকানোর সক্ষমতা আমাদের কিছুটা রয়েছে। তবে আমরা কাজ করছি মূলত জঙ্গিরা যেন হামলা করার পর্যায়ে যেতে না পারে, আগে থেকেই তাদের প্রতিরোধ করছি।”

মঙ্গলবার রাত পৌনে নয়টায় গোপনে খবর পেয়ে যাত্রাবাড়ীর শহীদ ফারুক হোসেন সড়ক এলাকা থেকে এ দুজনকে আটক করা হয়। তাদের থেকে কোয়াড হেলিকপ্টার বা ড্রোন তৈরির সরঞ্জামাদি, বিভিন্ন ধরনের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস, উগ্রতমবাদ সম্বলিত কিছু পুস্তিকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান ডিবি কর্মকর্তা মনিরুল।

ডিবি পুলিশ জানায়, বেশ কিছুদিন আগে থেকেই তাদের কাছে গোপন তথ্য ছিল কারিগরি জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে আনসার উল্লাহ বাংলা টিমের একটি অংশ ভিন্ন উপায়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা কিংবা ভিভিআইপিদের ওপর ব্যাপক মাত্রার একটা হামলা করা পরিকল্পনা করছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে তাদের ধরতে ঢাকা মহানগরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক অভিযান চালানো হয়। অবশেষে এ দু’জনকে আটক করতে সক্ষম হন ডিবি পুলিশের সদস্যরা।

এ দুজনের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা হয়েছে। সরঞ্জামাদি কেনা এবং কারিগরি সহযোগিতা দাতারাসহ এ দলের অন্য সদস্যদের আটকের জন্য আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হবে।



মন্তব্য চালু নেই