ডিমলায় মনি ডায়নোষ্টিক সেন্টারের মালিকের বিরুদ্ধে ভুঁয়া চিকিৎসার অভিযোগ

হামিদা আক্তার বারী, ডিমলা করেসপন্ডেট, নীলফামারী : নীলফামারীর ডিমলায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্স গেট সংলগ্ন লাইসেন্স বিহীন মনি ডায়গনোষ্টিক এন্ড প্যাথলজিক্যাল সেন্টারের মালিক মোঃ মানিকুজ্জামান মানিক এর বির”দ্ধে ভূঁয়া টেষ্ট করে রোগীদের হয়রানী ও নিজেই ভূয়াঁ চিকিৎসক সেজে ভূঁয়া চিকিৎসা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, উপজেলার পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের ছাতনাই কলোনী গ্রামের আইয়ুব আলীর স্ত্রী বিলকিস বেগম (৩০) দীর্ঘদিন ধরে দুরারোগ্য রোগে ভুগিতেছেন। উলে¬খ্য,বিলকিস বেগম দীর্ঘদিন বিদেশে লেবানন শহরে বসবাস করেন। কিন্তু গেল কয়েক বছর ধরে দেশে ফিরে এসে তিনি বর্তমানে দেশেই অবস্থান করছেন। পরবর্তীতে তিনি আবারও বিদেশে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়ারকালে শারীরিক বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হলে বিলকিস বেগম দরারোগ্য ব্যাধীতে আক্রান্ত বলে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিরীক্ষায় ধরে পরে। সে থেকে তিনি গ্রামের বাড়ীতেই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসাধী অবস্থায় রয়েছেন। বিলকিস বেগমের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ঢাকায় অস্থান করায় তিনি একই গ্রামের কলোনী বাজারে গ্রাম ডাক্তার হিসেবে পরিচিত গ্রাম ডাক্তার আলতাব আলীর ভূল চিকিৎসার কবলে পড়ে প্রায় ৯ হাজার টাকা খোয়া যায়। ঐ গ্রাম ডাক্তার পরে নিজেকে বাঁচাতেই তিনি উপজেলা সদরে আরেক ভুঁয়া চিকিৎসক ও লাইসেন্স বিহীন মনি ডায়গনোষ্টিক সেন্টারের মালিক মানিকের কাছে রোগী বিলকিস আক্তারকে রেফার করে পাঠিয়ে দেন গত ২৫ জুলাই/১৬ তারিখে। রোগী বিলকিস বেগম এসে ঐ প্যাথলজিক্যাল সেন্টারের মালিক মানিকের সাথে দেখা করলে তিনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের বিভিন্ন কাগজপত্র দেখে রোগীকে বলেন আপনাকে আরো বেশ কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হবে। এ কথ শুনে রোগী ও তার লোকজন বলেন ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া আমরা কোন পরীক্ষা করবো না। এ সময় ভুয়া ড্ক্তাার মানিক বলেন, আমিই ডাক্তার। আমার এখানেই সব ধরনের পরীক্ষা হয়। এই বলে তিনি এইচবিএস(এজি), এস (বিলু), ভিডিআরএল, আরবিএস,ইউরিন আর/ই, ভিডাল ও সিবিসি পরীক্ষাগুলি করে রোগীর হাতে ১ হাজার ৩’শ ৬০ টাকার ক্যাশ মেমো তুলে দেন। উলে¬খ্য ডাক্তারের এ্যাডভাইস ছাড়াই তিনি এসব ভূয়া পরীক্ষা করেন নিজেই টেকনোলজিষ্ট সেজে। তার দোকানে কোন রকম অভিজ্ঞ টেকনোলজিষ্ট নেই। এসময় রোগীর সাথে আসা রোগীর বোন শরিফুল ইসলামের স্ত্রী নাজমা বেগমকেও তিনি ভূয়া পরাশর্শ দিয়ে বেশ কিছু ভূঁয়া টেষ্ট করে হাতিয়ে হাজার টাকা। পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে রোগী বিলকিস বেগমকে দুটো সিরাপ দাম ৬’শ টাকা ধরে নিয়ে বাড়ীতে এসব সিরাপ খেয়ে রেষ্টে থাকার পরামর্শ প্রদান করেন ভূঁয়া চিকিৎসক মানিকুজ্জামান মানিক। উক্ত ঔষধ খেয়ে বিলকিস বেগমের রোগ আরো বেশী বৃদ্ধি পেলে তাকে আশঙ্গাজনক অবস্থায় গত ১ আগষ্ট ডিমলা হাসপাতালে তাকে দ্র”ত নিয়ে এসে ভর্তি করানো হয়। যাার রেজি: নং-১৬০৫/৫। বিলকিস বেগম হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন থাকায় খবরটি দ্র”ত উপজেলা শহরে ছড়িয়ে পড়ে।

এ ঘটনায় স্থানীয় সংবাদকর্মীরা ছুটে আসলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন রোগী বিলকিস বেগম। হাসপাতাল বেডে শুয়ে থাকা রোগী বিলকিসের ছবি ক্যামেরা বন্দি করতে গেলে তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমি এর বিচার কার কাছে চাইবো ? কে করবে এর বিচার ? হাসপাতালের নাকের ডোগায় এরকম ভুয়াঁ চিকিৎসক সেজে ভূয়াঁ প্যাথলজিক্যাল সেন্টার খুলে বসে আসে মানিক। কিন্তু দেখার কেউ নেই ? প্রশ্ন আপনাদের সাংবাদিকদের কাছে। এর বিচার কি হবে না ? আমি প্রতারিত হয়েছি, একজন ঠক বাজের কবলে পড়ে।

এ ব্যাপারে উক্ত সেন্টারের মালিক মানিকের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা হলে তিনি পরীক্ষা নিরীক্ষার কথা স্বীকার করলেও চিকিৎসা দেওয়ার কথা অস্বীকার করেন। লাইসেন্স আছে কিনা এ প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এসব ব্যবসায় টাকা হলে সব হয়। সব কিছু ম্যানেজ করা যায়। তবে লাইসেন্স করতে হলে পরবর্তীতে করবো। উলেল¬খ্য তিনি প্রায় ৫/৭ বছর ধরে লাইসেন্স বিহীন ডায়গনোষ্টিত সেন্টার খুলে রোগীদের হাতে ভুয়াঁ রিপোর্ট দিয়ে আসলেও সংশি¬ষ্ট কর্র্তৃপক্ষ নিরব দর্শকের ভূমিকায়। উল্লেখ্য,ইতিপূর্বেও উক্ত সেন্টারের মালিক মানিকের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগে বিভিন্ন অনলাইন ও সংবাদপকেত্র খবর প্রকাশ করা হলেও তার কিছুই হয়নি। এলাকাবাসীরা ধারনা করছে তার খুঁঠির জোর মজবুদ। তাহলে তার খুটির জোড় কোথায় ?



মন্তব্য চালু নেই